মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ভারতের সাথে চুক্তি বাতিল ও আবরার হত্যার বিচারের দাবিতে সমাবেশ

প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ভারতের সাথে সম্পাদিত সকল অসম চুক্তি বাতিল ও বুঢেটের ছাত্র আবরার হত্যার বিচারের দাবিতে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

বুধবার (৯ অক্টোবর) বিকেল ৫ টায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার আয়োজনে এ সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি শুভ দেবের সভাপতিত্বে ও অর্থ সম্পাদক ফারহানা মুনার সঞ্চালনার সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদ, ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রিচার্ড, নারী নেত্রী পপি রানী সরকার, গগণসংহতি আন্দোলন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আহ্বায়ক জাহিদুল আলম, এই বাংলার সংগঠক দিদার গোলাপ সহ ছাত্র ফেডারেশনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আবরার হত্যা সহ সকল সন্ত্রাসী হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ বুয়েট প্রশাসনকে জবাবদিহিতার আওয়াতায় আনতে হবে এবং দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিচার করতে হবে। 

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্য ঘাটতি, বাজার দখল সহ বহুদিন থেকে বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্য ও আগ্রাসন চলে আসছে। বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর নতজনু পররাষ্ট্রনীতির কারণে তা বেড়েই চলেছে। চলতি অক্টোবরে যে সমস্ত চুক্তি, অনুচুক্তি ও সমঝোতার সিদ্ধান্ত হয়েছে তাতে বাংলাদেশের জনগণের কোনো সম্মতি ছিল না। 

তরিকুল সুজন বলেন, দেশব্যাপী সন্ত্রাস ও দুর্নীতি রুখতে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আবরার হত্যা কোনো বিচ্ছিন ঘটনা নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগের ধারাবাহিক নিপীড়ন নির্যাতনের ফলে লাশের মিছিলে আরেকটি নামকে যুক্ত হয়েছে মাত্র। ক্ষমতায় টিকে থাকার স্বার্থে সরকার সন্ত্রাসী লালন পালন করছে। 

আওয়ামীলীগের মদদে ছাত্রলীগ ঘাতক তৈরির মেশিন হয়ে গিয়েছে। আবরার হত্যার সাথে জড়িতরা খুনী হিসেবে বুয়েটে ভর্তি হয় নি, সংগঠনটির সাংগঠনিক ক্ষমতাচর্চার সংস্কৃতিই তাদেরকে আজকে হত্যাকারী বানিয়েছে। 

সরকার লুটপাট করে দেশের বারোটা বাজাচ্ছে আর ছাত্রলীগ ছাত্র হত্যা, সন্ত্রাস, নিপীড়ন-নির্যাতন করে শিক্ষাঙ্গনকে অনিরাপদ করে তুলেছে। এর সমস্ত দায় সরকারকেই নিতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, জনসমর্থন নিয়ে নয়, ভোটাধিকার হরণ করে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসীন থাকাটা বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতীতের সরকারগুলোও একই কাজ করেছে। 

অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লী সফরের ঘটনা সেটারই উৎকৃষ্ট উদাহরণ। ভারত তোষণ আর কেলবাজি করা সরকারের বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে কোনো ছাড় দেয়া চলবে না। 

মশিউর রহমান রিচার্ড বলেন, আমরা মনে করি, বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে চুক্তি হবে ভারসাম্যপূর্ণ, সমান সুযোগ-সুবিধা ও মর্যাদার ভিত্তিতে। কিন্তু দিল্লী সফরে যেসব চুক্তি ও সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলোর কোনোটাই আদতে বাংলাদেশের স্বার্থ ও মর্যাদা রক্ষা করে নি। উপরন্তু এই সফরের মাধ্যমে ভারত তোষণ ও নতজানু পররাষ্ট্র নীতির নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সুতরাং ছাত্রসমাজ ও দেশপ্রেমিক জনসাধারণকেই জাতীয় স্বার্থবিরোধী সকল তৎপরতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

শুভ দেব বলেন, সরকার একতরফাভারে জনগণের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে তার স্বৈরাচারী একচেটিয়া মনোভাবেরই প্রকাশ ঘটাচ্ছে। এভাবে দেশের সম্পদ বিলিয়ে দিয়ে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে এবং দেশের মানুষের মতামতকে উপেক্ষা করার পরও সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার থাকতে পারে কি? বন্দর ব্যবহার, উপকূলে নজরদারি, ফেনী নদীর পানি বন্টন এবং এলপিজি রপ্তানি সহ ভারতের সাথে যেসব চুক্তি সম্পাদিত করা হয়েছে তা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

এই বিভাগের আরো খবর