শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বেঞ্চ সেতু এড়াতে শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প রাস্তা (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪): অবশেষে ফতুল্লার ৭২নং ইসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেঞ্চ সেতু এড়িয়ে স্কুল ভবনে ঢুকতে বিকল্প রাস্তা তৈরির উদ্যেগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গত ১০ মার্চ দৈনিক যুগের চিন্তায় নিজস্ব প্রতিবেদক জহিরুল হক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ তুলে ধরে ‘বেঞ্চ সেতুতে পার হয়ে যেতে হয় স্কুলে’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরপরই দুর্ভোগের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।    

বুধবার (১৩ মার্চ) বিকেলে স্কুলটিতে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ২০০৪ সাল থেকে স্কুলের সামনে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে রেহাই দিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরির উদ্যেগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাৎক্ষণিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব না হলেও স্কুলে ঢোকার জন্যই রাস্তাটি তৈরি করা হচ্ছে। 

স্কুল কমিটির সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, কোন জায়গা থেকে কোন ধরণের সহায়তা না পেয়ে সকলের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনা করে নিজেদের উদ্যেগেই একটি বিকল্প রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীসহ সকলকে পঁচা পানি না মাড়িয়ে স্কুলে ঢুকতে পারবে। সবাই সহযোগিতা করলে জলাবদ্ধতার সমস্যাটি স্থায়ীভাবে সমাধান করা সম্ভব হবে। 

বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আফরোজা বেগম জানান, দেরীতে হলেও এব্যবস্থা নেয়ায় আমরা খুব খুশি। এখানে চাকরীতে যোগাদান করার পর থেকেই পঁচা পানি মাড়িয়ে স্কুলে ঢুকতে হয়েছে। গণমাধ্যমের কল্যাণে আমাদের ১৫ বছরের দুর্ভোগের বিষয়টি সবাই জানতে পেরেছে। সমস্যার কিছুটা সমাধান হচ্ছে। এ সমস্যার কারণে আমাদের স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছিলো। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অহীন্দ্র কুমার মন্ডল জানান, স্থানীয়ভাবে আপাতত তারা সমস্যাটির সমাধানে উদ্যেগ নিয়েছে। এটি বেশ ভালো উদ্যোগ। এ স্কুলের সীমানা জটিলতা নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকায় বরাদ্দ পেতে সমস্যা ছিলো। জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমস্যা সমাধানে আমরাও বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও এ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। সমস্যাটির সমাধান হলে স্কুলের যে ৩টি শ্রেণিকক্ষ বন্ধ রয়েছে সেগুলোও ব্যবহার করা সম্ভবপর হবে।

   

উল্লেখ্য, ফতুল্লার ইসদাইরে ১৯৭৩ সালে ৩৩ শতাংশ জমির উপর ৭২নং ইসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত। স্কুলটির প্রাক শিশু শ্রেণি ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৬৪৫ জন্য শিক্ষার্থী রয়েছে। তার মধ্যে তিন জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। স্কুল ভবনটিতে ১৪ টি কক্ষ ও ১৪ শিক্ষক নিয়ে স্কুল পরিচালিত হচ্ছে।   বিদ্যালয় ভবনের সামনে পুরো এলাকাটি জলাবদ্ধ হয়ে থাকলেও স্কুলে ঢুকতে অভিনব এক পদ্ধতি বের করে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বেঞ্চের পর বেঞ্চ সাজিয়ে একটি সেতু তৈরি করেছে তাঁরা। এভাবেই দিনের পর দিন অব্যাহত থাকে পাঠদান। কিছুদিন আগে বেঞ্চ সেতু দিয়ে পার হতে গিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা লতিফা নাহার পড়ে গিয়ে ব্যাথা পান। তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে।  

স্কুলে ঢোকার বিকল্প রাস্তা তৈরি হচ্ছে শুনে প্রধান শিক্ষক লতিফা নাহার মুঠোফোনে জানান, এটি শিক্ষার্থীসহ সকলের জন্যই স্বস্তির। দীর্ঘদিন আমরা সকলে অনেক কষ্ট করেছি। শিক্ষার্থীরা এখন নিরাপদে স্কুলে যাতায়াত করতে পারবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যাতে স্থায়ী সমস্যা সমাধানেরও দ্রুত উদ্যোগ নেন।    
 

এই বিভাগের আরো খবর