বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বুক ভরা আশায় দিন গুনছেন আড়াইহাজরের দুই হাজার খামারি

প্রকাশিত: ১৪ আগস্ট ২০১৮  

আড়াইহাজার (যুগের চিন্তা ২৪) : ঈদুল আজাহাকে সামনে রেখে বুক ভরা আশা নিয়ে দিন গুনছেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে প্রায় দুই হাজারের মত ক্ষুদ্র খামারি। খামারিরা জানিয়েছেন তিন বছর ধরেই স্থানীয় চাহিদ পূরণ করতে পারছেন তারা। তবে এবছর ভারতীয় পশু আমদানি হওয়া নিয়ে তারা বেশ শঙ্কায় রয়েছেন।

তাদের দাবী সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল যে এ বিষয়টি সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। প্রতিবছরই এ উপজেলায় ঈদুল আজায় পশু মোটাতাজাকরণ হয়ে থাকে। গেল তিন বছর ধরে লাভের মুখ দেখাতে এলাকায় খামারির সংখ্যাও বাড়ছে। পড়ালেখার পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থী তাদের নিজের বাড়িতে দু’চারটি করে পশু মোটাতাজাকরণ করছেন। 

পিছিয়ে নেই নারীরাও। পশু মোটাতাজাকরণে তারা এগিয়ে আসছেন। গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশে কেউ খাসি, কেউ আবার গরু মোটাতাজাকরণ করছেন। এদিকে পশু দ্রুত বর্ধনের ক্ষেত্রে কোন স্টেরয়েডজাতীয় ওষধ পশুকে খাওয়ানো হচ্ছে না বলে দাবী করেছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদক অধিদফতরের কর্মকর্তারা। তারা খামারিদের নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন, সঠিক নিয়মে দেশীয় খাবারেই পশুগুলো রিষ্টপুষ্ট হয়ে উঠতে পারে।

তবে নজড়ধারীর পরও অধিক লাভের আশায় অনেক খামারেই স্টেরয়েডজাতীয় ওষধ ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানা গেছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে কোরবানির পশুর হাটের অস্থায়ী ইজারা দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রস্তুত করা হচ্ছে পশুর অস্থায়ী হাটগুলো।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ক্ষুদ্র ও মৌসুমী খামারিসহ প্রায় দুই হাজার খামারি এবছর পশু মোটাতাজাকরণ করছেন। এতে প্রায় ১৭ হাজারেরও বেশি পশু মোটাতাজকরণ করা হচ্ছে।

একাজ সম্পৃক্ত হয়ে অনেকেই স্বাবলম্বি হচ্ছেন। ১৫ জন মাঠকর্মী খামারিদের বাড়িতে গিয়ে পশুর স্বাস্থ্যপরীক্ষাসহ নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। স্টেরয়েড জাতীয় ওষধ ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

দক্ষিণপাড়া এলাকার সোবান জানান, দু’টি ষাঁড় মোতাতাজাকরণ করছেন। এক বছর আগে তিনি রুপগঞ্জের গোলাকান্দাইল থেকে ষাঁড় গুলো কিনে আনেন। তিনি আশা করছে সব খরচ বাদে প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার লাভ হতে পারে। গুরুগুলোকে ক্যাটেল ফিড, ভুষি, ধানের খড়, কাঁচাঘাস ও খৈল খেতে দিচ্ছেন। তিনি কোন প্রকার স্টেরয়েড জাতীয় ব্যবহার করছেন না বলে জানান। সাধারণ খাবারেই গুরু বেশ রিষ্টপুষ্ট হচ্ছে।

উপজেলার লতবদী এলাকার খামারি আলমগীর হোসেন বলেন, তিনি ১৫ বছর ধরেই কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণ করে আসছেন।  এবছর তিনি পাঁচটি ঘাঁড় পালন করছেন। স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে বাড়িতে পশু চিকিৎসক নিয়ে আসছেন। 

তিনি আরও বলেন, দাম কিছু বেশি হলেও দেশিয় পশুর চাহিদা বাড়ছে। গত বছরেরও তিনি লাভের মুখ দেখছেন। এতে করে এলাকায় নতুন খামারির সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় সরকারি সফর আলী কলেজে এইচএসসিতে পড়–য়া শিক্ষার্থী আশ্রাফুল জানান, তিনি দু’টি পশু মোতটাতাজাকরণ করছেন। পড়ালেখার পর অবসর সময় টুকু অহেতুক নষ্ট না করে তিনি চিন্তাভাব করেছিলেন কিছু একটা করবেন। পাশের বাড়ির মিজানের পশুর খামার দেখে তিনি পশু পালনে উদ্ধুদ্ধ হয়েছেন। তিনি আশা করছেন সব খরচ বাদে তার ৫০ হাজার টাকার লাভ হতে পারে। 

আড়াইহাজার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার ফারুক আহামেদ বলেন, পশুমোটাতাজাকরণের ক্ষেত্রে কোন প্রকার স্টেরয়েডজাতীয় ওষধ পশুকে খাওয়ানোর ব্যাপারে খামারিদের সচেতন করা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী পরিচর্যা করলে স্বাভাবিক খাবারেই পশু মোটাতাজা হয়ে থাকে। তবে অধিকলাভের আশায় অসাধু কিছু খামারি হয়তো উপায় অবলম্বন করছেন। তবে এসব খামারিদের আমরা চিহৃত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
 

এই বিভাগের আরো খবর