বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বিচার চাইতে গিয়ে লাশ হলেন আ’লীগ নেতা কাদের

স্টাফ রিপোর্টার 

প্রকাশিত: ১০ মে ২০২০  

পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতির কাছে বিচার চাইতে গিয়ে লাশ হতে হয়েছে ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হাজী আব্দুল কাদেরকে। রসুলপুরের ভাঙ্গারপুল এলাকায় শনিবার দুপুরে কয়েক দফা মারপিটের পর অসুস্থ হয়ে পরে কাদের। আহতবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বাধা দিয়েছে হামলাকারীরা। রোববার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে কাদের মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। 


পুলিশ দুপুরে নিহতের বাড়ি থকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় রোববার বিকেলের দিকে নিহত আব্দুল কাদেরে স্ত্রী ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে ইব্রাহিম খান (৪৫), মহিদুল (৪০), সোহাগ বেপারী (৪২), সজিব (৪০), মাহফুজ খান (৫৫), আবুল হোসেন শেখ (৫৫), হারুন মিয়া (৫৬), রাসেল (২৫), ফয়সাল (২০), নাঈম (১৯), রিপন শেখ (৪০), সেলিম শেখ (৩৫), শাওন (২৬) সহ  অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। 


স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা প্রত্যেকে স্থানীয় রোকন মেম্বার ও পঞ্চায়েতের সভাপতি ইব্রাহিম খানের লোকজন। অপরদিকে, থানায় নিহত আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে এসে আটক হয়েছে  ইব্রাহিম খান ও মাহবুব নামের দুইজন। থেমে থেমে উত্তপ্ত হয়ে উঠে ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন পাড়া মহল্লা।

 

আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে কুতুবপুরে শনিবার প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়  হাজী আব্দুল কাদের। আহত কাদেরকে হাসপাতালে নিতে চাইলে হামলাকারীরা বাধা প্রদান করেছে। এমনকি ফার্মেসী থেকে ঔষধ আনতে পর্যন্ত বাধা দিয়েছে তারা। 


রসুলপুরের ভাঙ্গার পুল এলাকাবাসী জানান, এলাকায় পঞ্চায়েত কমিটি নিয়ে দ্বন্ধ অনেকদিনের। পঞ্চায়েতের মধ্যে একটি মসজিদ রয়েছে। এ মসজিদ কমিটি নিয়েও চলছে দ্বন্ধ। গত  কয়েকদিন আগে রুমান নামের একজন ছেলেকে ইব্রাহিম খানের ছেলে রাসেল মারপিট করে। এ ঘটনায় রুমন ফতুল্লা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। 


থানায় অভিযোগ করার ক্ষেত্রে রুমানকে সহযোগীতা করেছিল  হাজী আব্দুল কাদের। এই কারনে ইব্রাহিম খান ও তার লোকজন কাদেরের উপর ক্ষিপ্ত ছিল। মূলত এ কারনেই কাদের উপর ক্ষিপ্ত ছিল  ইব্রাহিম ও তার লোকজন। 


নিহত আব্দুর কাদেরের স্ত্রী ফিরোজা বেগম দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, ইব্রাহিম খান সহ কয়েকজনের সাথে তাদের পূর্ব শত্রুতা ছিল। শনিবার দুপুরের দিকে  তাদের লোকজন তার স্বামী আব্দুল কাদেরকে গালিগালাজ করে। বিষয়টি অবগত করতে শনিবার বিকেল ৫ টার দিকে পঞ্চায়েত সভাপতির লাল মিয়ার বাড়িতে গিয়েছিল কাদের। 


এসময় ইব্রাহিম খান ও তার লোকজন লাল মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার স্বামীকে মারপিট করে বাড়ি  থেকে বের করে দেয়। এরপর তারা কাদেরকে মারপিট করে আহতবস্থায় তার বাড়ির গেটের সামনে রেখে যায়। 


স¦জনরা আহতকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে ইব্রাহিম খান ও তার লোকজন এতে বাধা প্রদান করে। শনিবার রাতে কাদেরের জন্য ফার্মেসী থেকে ঔষধ আনতে যাওয়ার পথে আশিক নামের একজনকে মারপিট করে রাসেলসহ বেশ কয়েকজন। রাতেই হামলাকারীরা তাদের বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাংচূর করে।

 
তিনি আরো জানান,শনিবার দিবাগত রাতে তার স্বামীর অবস্থার অবনতি ঘটে। রোববার ভোরে তার স্বামীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু বরণ করেন। দুপুরের দিকে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ তার স্বামীর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। 


এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আসলাম হোসেন বলেন, বাদির একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর