বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বাক প্রতিবন্ধী সিরাজকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় ১০ জনের জামিন

প্রকাশিত: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : সিদ্ধিরগঞ্জ থানার মিজমিজিতে বাক প্রতিবন্ধী সিরাজুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় মোটা কবির ও টাইগার ফারুকসহ ৮ আসামীর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আনিসুর রহমানের আদালত এ জামিন মঞ্জুর করেন।


জামিনপ্রাপ্তরা হলো টাইগার ফারুক, মোটা কবির, মজিবর, বাদল মিয়া, মাঈন উদ্দিন, মো.রাসেল, মো.ফারুক মুন্সী, শাজাহান ওরফে বালু শাজাহান, মো.নজরুল ইসলাম ও শাহজালাল।

 

এর আগে জেলা ও দায়রা জজ আদালত মোহাম্মদ আনিসুর রহমানের আদালতে ওই ১০ আসামি উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে শুনানী শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।


এ ১০ আসামির সবাই উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করলে তাদের ১০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে তারা মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন।

 

উল্লেখ্য, গত ২০ জুলাই সকালে সিদ্ধিরগেঞ্জের মিজমিজি পূর্বপাড়া এলাকায় বাক প্রতিবন্ধী সিরাজুল ইসলাম তার একমাত্র মেয়ে মঞ্জুকে দেখতে যান। ওই সময় স্থানীয় লোকজন তাকে ছেলে ধরা আখ্যা দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনার ৮ মাস আগে সিরাজুল ইসলামকে ছেড়ে তার স্ত্রী শামসুন্নাহার প্রতিবেশী সোহেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পালিয়ে যায়।


বাক প্রতিবন্ধী হলেও সিরাজুল ইসলাম পেশায় রাজমিস্ত্রীর সহকারি হিসেবে কাজ করতেন। একমাত্র মেয়ে মঞ্জুকে নিয়ে স্ত্রী শামসুন্নাহার পালিয়ে যাওয়ার পর সিরাজ মেয়ের জন্য পাগল হয়ে উঠে। একপর্যায়ে জানতে পারে মিজমিজি পূর্বপাড়া এলাকায় পরকীয়া প্রেমিক সোহেলকে নিয়ে বাসা ভাড়া নিয়েছে স্ত্রী শামসুন্নাহার।

 

একারণে ঘটনার দিন মিজমিজি পূর্বপাড়া এলাকায় মেয়েকে একনজর দেখতে গেলে সিরাজকে ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সিরাজ হামলাকারীদের কিছু বলতে পারেনি।

 

ঘটনার সময় পদ্মা সেতুতে শিশুদের মাথা লাগবে এমন একটি গুজবের কারণে প্রায়ই ছেলে ধরা সন্দেহে নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে গণপিটুনির ঘটনা ঘটতে থাকে। ওইসব ঘটনায় সিরাজের মতো অনেক নিরপরাধ মানুষ প্রাণ হারায়।

 

সিরাজ নিহতের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই শাহাদাত বাদী হয়ে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় চারশ জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

এই বিভাগের আরো খবর