শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বন্দরে মুখ লুকিয়ে নাসিক কাউন্সিলররা  

প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০২০  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট : করোনা ভাইরাসের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে সরকার তার সকল দপ্তর নিয়ে মোকাবেলা করতে মাঠে নেমেছে। প্রত্যেককে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন সেই আলোকে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। নাসিকের সদর ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর হতদরিদ্র ও সাধারণ মানুষদের সহযোগিতা করার জন্য মাঠে নেমেছে। করোনা বিস্তার রোধে এসময় সরকারের পাশে থেকে জনগণকে সতর্ক করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখার কথা স্থানীয় সকল জনপ্রতিনিধিদের। কিন্তু দুঃখের বিষয় জনগণের ঠিক প্রয়োজনের মুহুর্তেই আড়ালে রয়েছেন বন্দরের নাসিক কাউন্সিলররা। দু’একজন দায়সারা কর্মসূচী দিলেও বাকিরা ছিলেন নির্লিপ্ত। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বন্দর এলাকা ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
 

বিভিন্ন এলাকার মানুষের অভিযোগ, বেশিরভাগ কাউন্সিলরই নিজস্ব সিন্ডিকেট ছাড়া এমনিতেও গণমুখী হননা। তাদের অভিযোগ, শহরের বেশ কিছু জায়গায় করোনার সতর্কতামূলক প্রচারণায় জোর দেয়া হলেও দুঃখজনকভাবে তাদের এলাকার কাউন্সিলরগণ এর ধার ধারেননি। প্রশাসন থেকে কিছু ব্যবস্থা না নিলে এবং টেলিভিশনের প্রচারণা চোখে না পড়লে তারা হয়তো জানতেই পারতো না করোনার সতর্কতা ও করনীয় সম্পর্কে। অনেকে আবার অভিযোগ করেন, কেউ দায় সারা আবার কেউ নাকি শুধু ফটো শেসনের জন্য ছোটখাটো উদ্যোগ নেন। দায়িত্ব পালনে মনযোগ তাদের নেই বললেই চলে।
 

নাসিক ২৩নং ওয়ার্ড বাসিন্দা আবু জাফর জানান, বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ উপজেলা প্রশাসন থেকে মাইকিংসহ কিছু প্রচারণা চালানো হয়েছে। আমাদের কাউন্সিলরদের পক্ষ থেকে তেমন কোন উদ্যোগ আমাদের চোখে পড়েনি।
 

২৪নং ওয়ার্ড বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কি যে বলেন, আমাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর চেহারাইতো ভুলে যেতে বসেছি। তিনি আবার আমাদের জন্য কি করবেন ? আমরা তার অফিসে বারবার যাই, তারপরও তার দেখা পাইনা। তিনি কখন অফিসে বসেন, কখন বসেন না তাই আমাদের অজানা। তার মোবাইলে ফোন করেও তাকে কখনো পাওয়া গেছে বলে শুনিনি। শহরের সাথে আমাদের যাতায়াত একটু থাকাতে আমরা কিছুটা সচেতন হতে পেড়েছি। তবে বড়ির মহিলাসহ ঘরমুখো মানুষদের সচেতনের জন্য আরো উদ্যোগের প্রয়োজন ছিল।
 

২৫নং ওয়ার্ড বাসিন্দা শেফায়েতুর রহমান জানান, আমাদের কাউন্সিলর তার বাড়ির আশে পাশে কাউকে সতর্ক করেছে কিনা তা জানিনা। তবে ওয়ার্ডবাসিকে সতর্ক করার সময় বা মন মানসিকতা তার নাই। কাউন্সিলরদের এখন অনেক দাম। তারা অনেক টাকা খরচ করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তাই জনগণের সেবা করার মানসিকতা তাদের থাকেনা। আমাদের এলাকার দু একজন তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু ব্যবস্থা গ্রহন করেছে এবং বিভিন্ন মসজিদে মাইকিংয়ের মাধ্যমে কিছুটা সতর্ক করা হয়েছে।
 

অন্যান্য ওয়ার্ডগুলোতেও একই অবস্থা। এইসব এলাকার বেশীর ভাগ মানুষই জানান, প্রশাসন থেকে আরো জোরালো উদ্যোগ নেয়ার প্রয়োজন। জাতির এমন একটা দুঃসময়ে যেখানে জনগণকে করোনার সতর্কতা সম্পর্কে সজাগ করবে তারা। সেখানে তারাই আছে ঘুমিয়ে। তাদের ঘুম ভাঙ্গানো জনগণের পক্ষে সম্ভব না হলেও প্রশাসনের চেষ্টায় হয়তো ভাঙ্গতেও পারে। তাই জনগণের সাথে সম্পর্ক তৈরিসহ এই করোনা সচেতনতায় এগিয়ে আসতে প্রশাসন থেকে তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা জরুরি বলে তাদের দাবি।
 


 

এই বিভাগের আরো খবর