শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিনে ১১ দিন ব্যাপী স্বাধীনতা বইমেলা শুরু

প্রকাশিত: ১৭ মার্চ ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন, জাতীয় শিশু দিবস ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ফতুল্লার কাশিপুরে দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হয়েছে এগারোদিন ব্যাপী স্বাধীনতা বইমেলা।

কাশিপুর স্বাধীনতা বইমেলা বাস্তবায়ন কমিটির উদ্যোগে রবিবার বিকেলে সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার কাশিপুর ক্লাব মাঠে এ মেলার আয়োজন করা হয়। আগামী ২৭ মার্চ পর্যন্ত চলবে এ স্বাধীনতা বইমেলা 

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই কেক কেটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন উদযাপন করা হয়। মেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম দেলোয়ারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মেলার উদ্বোধন করেন কাশিপুর ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম সাইফুল্লাহ বাদল।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন দেওভোগ হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন কাশিপুর আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল কৃষ্ণ সাহা ও হাটখোলা উচ্চ বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক সামছুল হক। এছাড়াও বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা বই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন। 

অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ জতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে আলোচনা করে শিশু কিশোর ও শিক্ষার্থীদের তাঁর আদর্শ ধারণ করার তাগিদ দেন। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তারা বলেন, পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি শিক্ষামূলক বই পড়ার মাধ্যমে জ্ঞাণকে সমৃদ্ধ করতে হবে এবং আলোকিত মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাইশপডুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম সাইফুল্লাহ বাদল বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্ম হয়েছিল বলেই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল এবং আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস করছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কারনেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে এবং বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু” কোন দলীয় শ্লোগান নয়। এটি বাংলাদেশের শ্লোগান।  বাঙালি জাতির শ্লোগান। এই শ্লোগানেই বাঙালি জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধথ হয়েছিল। তাই আমাদের সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করতে হবে। 

প্রথম দিনেই জমে উঠেছে এ বইমেলা। রাজধানীর ত্রিশটি প্রকাশনী সংস্থা তাদের প্রকাশিত বিভিন্ন ধরনের বই নিয়ে মেলায় অংশগ্রহন করছে। প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ বই মেলা। হরেক রকমের বই কিনতে স্টলগুলোতে উৎসাহের সাথে ভীড় করছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। পছন্দমতো বই সংগ্রহ করতে মেলায় আসছেন সব বয়সের দর্শণার্থীরাও।

প্রকাশনী সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা জানান, মেলায় বঙ্গবন্ধুর জীবনী, মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বই ছাড়াও সায়েন্স ফিকশন, গল্প, কবিতা, ছড়া, উপন্যাস সহ শিশু-কিশোরদের শিক্ষামূলক সব ধরনের বই পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম দিনে ক্রেতা ও দর্শণার্থীদের ব্যাপক সমাগমে মেলা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। 

আয়োজকরা জানান, শিশু-কিশোরদেরকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা এবং পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি সৃজনশীল বই পড়ার প্রতি তাদের আগ্রহ সৃষ্টি করতেই এ বই মেলার আয়োজন। 

সভাপতির বক্তব্যে কাশিপুর স্বাধীনতা বইমেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার বলেন, পুঁথিগত বিদ্যা কখনোই মানুষের জ্ঞাণ সমৃদ্ধ করতে পারে। এর বাইরে সৃজনশীল ও শিক্ষামূলক বই পড়ে জ্ঞাণ অর্জনের মাধ্যমে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠা যায়। তাই বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। 

তিনি বলেন, আমরা চাই সমাজের শিশু-কিশোররাসহ সবাই জ্ষাণ অর্জন করে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক। মানুষ গড়ার কারিগর যারা আছেন, সেই সব শিক্ষকরা যাতে সঠিকভাবে মানুষ তৈরী করতে পারেন তাইলেই দেশটা সমৃদ্ধ হবে। সমৃদ্ধ দেশের জন্য প্রয়োজন একটি সুশিক্ষিত জাতি।আর এ কারনেই সবাইকে বই পড়ার প্রতি উৎসাহিত করার লক্ষেই আমাদের এ বইমেলার আয়োজন।

তিনি কাশিপুরবাসীকে বই পড়ার ব্যাপারে আরো আগ্রহী করে তুলতে এই এলাকায় একটি পাঠাগার গড়ে তোলার জন্য প্রধান অতিথি কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে দাবী জানান। বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে চেয়ারম্যান এম. সাইফুল্লাহ বাদল তাকে আশ্বস্ত করেন। 
 

এই বিভাগের আরো খবর