শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ফতুল্লায় পুলিশ ও বহিরাগতদের দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ৯ মে ২০২০  

ফতুল্লায় ক্যাডটেক্স ডাইং লিমিটেড কারখানায় কারখানায় শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে কারখানার মালামাল সরিয়ে নিতে বাধা দেয়ায় পুলিশ ও বহিরাগতদের দিয়ে শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।


শুক্রবার (৯ মে)  রাত ১০ টার ফতুল্লা কাঠেরপুল এলাকার ক্যাডটেক্স ডাইং লিমিটেডে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রায় ১৫/২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। এদিকে হামলা প্রতিবাদে ও বকেয়া বেতনের দাবিতে শনিবার দুপুরে কারখানার সামনে শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে।


তবে পুলিশ এ অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা দাবি করে জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষের ওপর হামলা করায় তারা তাদের কারখানা থেকে বের করে দেয়। শ্রমিকদের ওপর পুলিশের কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি।


ভুক্তভোগী শ্রমিকরা জানান, প্রায় ২ শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন কারাগত এক মাস আগে ফেব্রুয়ারি ও  মার্চের বেতন পরিশোধ না করেই করোনাভাইরাসে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ । পরে বিভিন্ন সময় কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলেও শ্রমিকদের পাওনা দেই-দিচ্ছি করে সময়ক্ষেপন করেন।


এদিকে গত শুক্রবার ( ৯ মে) রাত ১০ টার দিকে ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিলের বেতন পরিশোধ না করেই  কর্তৃপক্ষ কারখানার মালামাল সরিয়ে নিতে চাইলে শ্রমিকরা বাধা দেয়। পরে  রাত দুইটায় কারখানার ভিতরে পুলিশ ঢুকিয়ে শ্রমিকদের উপর হামলা চালায়। পুলিশ শ্রমিকদের বেধড়ক লাঠিপেটা করে অন্তত ১৫/২০ জন শ্রমিক কে গুরুতরভাবে আহত করেছে। আহত শ্রমিকরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে। পরে তারা হামলার প্রতিবাদে কারখানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে।


গার্মেন্টস শ্রমিক কাফরুল জানান, আমরা গত তিন মাস যাবৎ বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিচ্ছে কিন্তু ফেব্রুয়ারি, মার্চ,এপ্রিল এখন মে চলছে কোনো মাসেরই বেতন পাই নি। মঙ্গলবার বেতন দেয়ার কথা কিন্তু শুক্রবার রাতে কারখানার ডিজিএম ও  আরো কয়েকজন এসে কারখানা থেকে মালামাল সরিয়ে নিতে চাইলে আমরা বাঁধা দেই। পরে বাইরের গেট করে দিয়ে আমরা কারখানার ভেতরে অবস্থান নেই। পরে রাত দুইটার দিকে কারখানার ভেতরে বহিরাগত ও পুলিশ ঢুকিয়ে আমাদের বেধরক মারধর করে।


কিন্তু  শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে  শিল্প পুলিশ-৪ ইন্টালিজেন্স ও মিডিয়া শাখার কর্মকর্তা শেখ বশির আহমেদ জানান,  শ্রমিকদের ওপর হামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কোনো মারধরের ঘটনাই ঘটেনি। বরং তারা কারখানা কর্তৃপক্ষের ওপর হামলা করে। তবে এটা সত্যি যে এ শ্রমিকরা তিন মাসের বেতন পাওনা রয়েছে। আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে বলেছি। তারা শীঘ্রই বেতন পরিশোধ করবে বলে জানিয়েছেন।


এ ব্যাপারে ক্যাডটেক্স ডাইং লিমিটেডের এইচআর অ্যাডমিন সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সমস্যা আছে জানিয়ে ফোনটি কেটে দেন।


এদিকে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি এমএ শাহীন সংহতি জানিয়ে বলেন, শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ না করে গভীর রাতে কারখানায় পুলিশ ঢুকিয়ে শ্রমিকদের ব্যাপক লাঠিপেটা করে আহত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সাথে এই বর্বরোচিত পুলিশি নির্যাতনের বিচার দাবি করে অবিলম্বে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি জানাই।

এই বিভাগের আরো খবর