শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনজীবী স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৫ মার্চ ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : যৌতুকের টাকা না পেয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আবু নকীবের বিরুদ্ধে স্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এডভোকেট জিয়াসমিন আহম্মেদকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (৪ মার্চ) সকালে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে একটি মামলাটি দায়ের করেন এপিপি জিয়াসমিন। মামলায় তিনি আসামী হিসেবে স্বামী আবু নকীব ছাড়াও ভাই মোঃ আবু নাসের নিপুন (৩২), শ্বাশুড়ি জুবরিয়া বেগম (৬০), অপর ভাই আবু নোমান সজল (৫০), এছাড়াও শিরিন আক্তার হিরা (৪৫)  কে অভিযুক্ত করেছেন।  তাঁর স্বামী আবু নকীব খুলনা জেলার খালিসপুর থানার ৩৪ নং বিবি রোড এলাকার বাসিন্দা। 

মামলাটি আমলে নিয়া দ্রুত তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নির্দেশ দেন। মামলার বাদী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট জেসমিন আহম্মেদ মামলার বিষয়টি যুগের চিন্তা ২৪’কে নিশ্চিত করেছেন। 

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ সালের ১৪ মে জেসমিন আহম্মেদের সাথে আবু নকীবের ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক দশ লাখ এক হাজার টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা ২৫ ভরি ওজনের বিভিন্ন স্বর্ণালংকার ও ১০ লাখ টাকার মূল্যবান আসবাবপত্র যৌতুক বাবদ  দেয় জেসমিনের পরিবার ।

এসব কিছু দেওয়ার পরও যৌতুক লোভী স্বামী বাদীনির টাকা পয়সা জায়গা জমি, ফ্লাট ও আমেরিকায় যাওয়ার লোভে  বাদিনীকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করতো। তারই ধারাবাহিকতায় যৌতুক লোভী স্বামী নকীবের পরিবারের কুপরামর্শে ও সহযোগিতায় বাড়ী বানানোর কথা বলে স্ত্রী জেসমিনের কাছে থেকে ৫০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবী করে।

এতে জেসমিন অপরাগতা প্রকাশ করলে তাঁর স্বামী নকিবসহ পরিবারের সদস্যরা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তারা জেসমিনের চুলের মুঠি ধরে টেনেহিছড়ে কিল ঘুষি লাথি মারে। এসময় নকিবের ভাই নাসের গলা টিপে ধরে মাটিতে ফেলে পায়ের বুট দিয়া নীলাফুলা জখম করে। এছাড়া  জেসমিনের শ্বাশুড়ি ও তার ছেলে সজল কাপড় টানা হেচড়া  করে ছিড়ে ফেলে।

তাঁদের নির্যাতনে জেসমিন ডাক চিৎকার করিলে তাঁরা চলে যায়।  যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে বলে , ‘আজকে প্রাণে বেঁচে গেলি যেদিন যৌতুকের পঞ্চাশ লাথ টাকা এবং তোর ব্যাংকে জমানো সমস্ত টাকা পয়সা জায়গা- জমি, ফ্ল্যাট তোর স্বামীর নামে লিখে দিবি সেদিন তোরে ঘরে তুলিয়া নিবো। অন্যথায় আরও আরো যৌতুক নিয়ে তাকে অন্য জায়গায় বিয়ে করাবো। এ ব্যাপারে যদি আইনের আশ্রয় নেস বা কোন মামলা মোকাদ্দমা করিস তাহলে তোরে প্রাণে মেওে ফেলবো।’

তারা এও বলে, ‘তোর মত দশটা উকিল আমাদের পায়ের তলায় থাকে। তুই কিছুই করিতে পারবি না। আইজিপি, থানা-পুলিশ, কোর্ট-কাছারি সবই আমার কেনা।’ 

 জেসমিন মামলায় আরো উল্লেখ করেন, তিনি বর্তমানে তাঁর বাবার বাড়িতে মানবেতন জীবন যাপন করছেন। ওই পরিবারের কেউ তাঁর কোন  খোঁজ খবর নেয় না, এমনকি ভরণ-পোষন করছেনা। 

জেসমিন মামলা করবে জানতে পেরে তাঁরা মিল-মিশ করিয়া আপোষ মিমাংসা করে ফেলবে বলে জানায়। জেসমিন বন্দর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানায় মামলা নিতে অসরাগতা প্রকাশ করে। তাই তিনি আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন। 
 

এই বিভাগের আরো খবর