শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নির্যাতনের মূলহোতা ইউসুফ মেম্বার ২ দিনের রিমাণ্ডে

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : জঘন্য অপরাধ করার পর মুহুর্ত্বেই ক্ষমতার জৌলুশ কিভাবে ঝরে পড়ে তার নজির বন্দরের দক্ষিণ কলাবাগ এলাকায় তিন নারীকে মিথ্যা যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতনের মূলহোতা আসামী ইউসুফ মেম্বার। এলাকায় বিপুল প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। নিজের ইচ্ছামত যে কোন অসম্ভবকেই সম্ভবে পরিণত করতে পারতেন তিনি। পাওনা টাকা চাওয়ায় প্রতিপক্ষের সাথে মিলে তিন নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাঁর নির্দেশেই নির্যাতন করা হয়। 

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহযোগিতায় নির্যাতিতদের একজন ফাতেমা বেগম বাদী হয়ে সোমবার বিকেলে মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে মূলহোতা ইফসুফ মেম্বারকে গ্রেফতার করে বন্দর থানা পুলিশ।  

মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ফাহমিদা খাতুনের আদালতে হাজির করে ৫ দিনের পুলিশি রিমাণ্ড আবেদন করলে আদালত ২ দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করে । এদিন আদালতে ইফসুফ মেম্বারের পক্ষে কোন আইনজীবী আদালতে দাঁড়াননি। এমনকি আদালতে তাঁর নিজের পরিবারের কোন সদস্য কিংবা কোন আত্মীয়-স্বজনও উপস্থিত ছিলেননা। 

বাদীপক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু। এছাড়া অ্যাডভোকেট জসিমউদ্দিন, অ্যাডভোকেট ওয়ালিউল্লাহ, অ্যাডভোকেট ইমতিয়াজ হোসেন রাকিব, অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন, অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু বলেন, বর্তমান যুগে আসামীর নেতৃত্বে কিভাবে তিননারীর উপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে আমরা আদালতে তা উপস্থাপন করেছি। পাঁচ দিনের রিমা- চেয়ে আবেদন করলে আদালত দুই দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করে। ঘটনার সাথে অন্যান্য জড়িতদের সম্পর্কে জানতেই আদালত রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন। 

প্রসঙ্গত, ১৬ ফেব্রুয়ারি ধারের টাকা উদ্ধার করতে গিয়ে বন্দরের দক্ষিণ কলাবাগান এলকার খালপারের মৃত মফিজ উদ্দিনের মেয়ে ফাতেমা বেগম ওরফে ফতেহ (৫০), তাঁর দুঃসম্পর্কের খালাতো বোন আসমা বেগম (৩৫) এবং   বুরুন্দি এলাকার বকুল মিয়ার স্ত্রী বানু বেগমকে (৩০) চেনেননা ফাতেমা বেগকে মিথ্যা যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে তিন নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় তিন নারীর উপর নির্যতন চালানো হয়। ওই তিন নারীকে ঘর থেকে বের করে টেনে হিচড়ে গাছের সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে  বেধড়ক মারধর করে ইউসুফ মেম্বারের নেতৃত্বে এলাকার কথিত বিচারকরা।  

কেবল মারধরই নয় জোর করে ওই নারীদের মাথার চুলও কেটে দেয়া হয়। এরপর ওই অবস্থায় কয়েক ঘন্টা গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয় তাদের। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলেও নির্যতানকারীদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পরে ১৮ ফেব্রুয়ারি মানবাধিকার কমিশনের মধ্যস্থতায় সন্ধ্যায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার ফাতেমা বেগম ওরফে ফতেহ। 
 

এই বিভাগের আরো খবর