নাসিকের মাসিক সভায় কাউন্সিলর বাবুলকে মারলেন ফারুক, বাবুর মহড়া
প্রকাশিত: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : শ্বশুরবাড়ির ঘটনার জের ধরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) ভবনে কাউন্সিলদের মাসিক সভায় ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান বাবুলকে মারধর ও অস্ত্র প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
এঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে মাসিক সভায় অনুপুস্থিত ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবুর বিরুদ্ধে ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ তুলেছেন মারামারিতে জড়ানো দুই কাউন্সিলর।
মাসিক সভা শেষে কাউন্সিলরা বের হতে শুরু করলে কাউন্সিলর বাবুর উপস্থিতিতে গেটের বাইরে থেকে একদল যুবক নাসিক ভবনে ঢুকে সাংবাদিকের সাথে ধস্তাধস্তি করে মোবাইল কেড়ে নেয়। আধঘন্টা পর তারা সেটি ফেরত দেয়। সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নাসিক ভবনে এসব ঘটনা ঘটে।
নাসিক ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান বাবুল বলেন, গত (১৩ জানুয়ারি) যুগের চিন্তা পত্রিকায় নিউজ আসছে, আমার ওয়ার্ডে নাসিক ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুকের শুশ্বরবাড়ি। মজিবুর মেম্বার হলো ফারুক ভাইয়ের শুশ্বর । মজিবুর সাহেব আমিনা মসজিদ কুঁড়িপাড়া চৌরাস্তার পাশের রাস্তার ঢালাই দিয়ে বাশঁ দিয়ে বন্ধ করে রাখছি যাতে কোন গাড়ি ঢুকতে না পারে । গাড়ি ঢুকলে রাস্তা ভেঙ্গে গেলে কন্ট্রাকটারের ক্ষতি হবে। বিশদিন পর বাশঁ খুঁলে দিবো। কিন্তু তিনদিনের মাথায় মজিবুর সাহেব বাশঁ খুলে গাড়ি ঢুকাইছে শুনছি । পরেরদিন সকাল বেলা আমি ইটের গাড়ি আটকে দেই । সেই গাড়ির ভিতরে মজিবুর সাহেব ছিলেন । ফারুকের শুশ্বর মজিবুর সাহেব ইটের ব্যবসা করে । তখন আমি ইটের গাড়ির ড্রাইভার ও হেলপারের সাথে রাগারাগি করি তখন মজিবুর সাহেবের সাথেও চেতাচেতি করে বলি আপনি বাঁশ কেঁটে তিনচার হাজার ইটের ভারি ভারি গাড়ি ঢুকালেন রাস্তাটার কি অবস্থা হবে আপনার বিবেক নাই। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজকে বিশদিন পর আজ মাসিক মিটিংয়ে আমরা তিনজন কাউন্সিলর সাগর, বাদল, ইকবাল ছিলো ।
বাকিরা আসেনি ভিতরে আমরা এই তিনজন ছিলাম। তখনই কাউন্সিলর ফারুক এসে আমাকে বলে একটু বাহিরে আসেন, আমি বললাম এখানেই বলেন সে বললো বাহিরে আসেন। বাহিরে বারান্দায় গেলে কাউন্সিলর ফারুক আমাকে বলে নিচে আসেন। আমি সিড়ির কাছে গেলে কাউন্সিলর ফারুক আমার গায়ে হাত তুলে ফেলে। জামার কলার ধরে চড় থাপ্পার মেরে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। একসময় তার সাথে থাকা রিভালভার বের করে। কাউন্সিলর সাগর চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে উনি আমাকে রক্ষা করে। সব কাউন্সিলররা উপরে এসে তাঁর উপর ক্ষিপ্ত হয়। সে ধরণের উগ্র মেজাজ নিয়ে আমাকে মেরেছে তাতে যেকোন একটা দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। সে পরিকল্পিতভাবে লোকজন জড়ো করেছিলো।
কাউন্সিলর বাবু মিটিং এ ছিলোনা। সে দুপুর একটার দিকে সিটি করপোরেশনে এসেছে বলে শুনেছি। তার সাতে আমার কোন যোগাযোগ হয়নি। আমি ভেতরে থাকা অবস্থায় শুনেছি বাবু লোকজন নিয়ে এসেছিলো। অনেকে বলেছে তৃতীয়পক্ষ এখানে গেম খেলতে চেয়েছিলো। তারই সূত্র ধরে যুগের চিন্তার এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়া হতে পারে। আমি উপরে থাকতে শুনেছি বাবু লোকজন নিয়ে এসে গেঞ্জাম করতাছে।
তবে নাসিক ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর ফারুক বলেন, ভেতরে আমার আর কাউন্সিলর বাবুলের সাথে একটি বিষয় নিয়ে ভুলবোঝাবুঝি হয়েছিলো। তেমন কিছু হয়নি।
তিনি বলেন, তৃতীয় পক্ষ ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করেছিলো। আমার লোকজন সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেয়নি। খবর নিয়ে লেখেন কাউন্সিলর বাবুর লোকজন সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিয়েছিলো। পরে আমার লোকজন মোবাইল উদ্ধার করে দিছে। সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনার আমি সুষ্ঠু বিচার দাবি করি। ওগুলো বাবুলের লোক হতে পারেনা। বাবুল নদীর ওইপাড়ের লোক। সে এতো লোক জড়ো করতে পারেনা। সম্পর্কে উনি আমার শ্বশুড়। বাবুর লোকজন হতে পারে।
ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবুর বিরুদ্ধে। তাই নাসিকের গেটের বাইরে তাঁর উপস্থিতিতেই সাংবাদিকের সিটি করপোরেশনের ভবন থেকে তাঁর লোকজন মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে।
নাসিক ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু বলেন, আমার কোন লোকজন সিটি করপোরেশনে যায়নি। শুনেছি সেখানে কাউন্সিলরদের ঝগড়া হয়েছে। গেঞ্জাম আমার লগে লাগেনাই।
ঠিক সেসময়ে সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়েছিলো, আপনার আশপাশের লোকই গেটের বাইরে থেকে সিটি করপোরেশন ভবনে দৌড়ে এসে সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিয়েছে তাঁরা কি আপনার লোক নন, এমন প্রশ্নে বাবু বলেন,‘আমি সিটি করপোরেশনের গেটে ছিলাম। সেখানে অনেক লোক ছিলো। সে কে আমার অফিসের লোক হলে বাইন্দা পুলিশে দিয়ে দেন। আমি দেখলাম মাইক্রোবাস ভইরা ভইরা লোক আইছে। আমার লোক কইত্থাইকা অইবো। আমি সিটি করপোরেশনে গেছিই তো আধাঘন্টা। আমি গেটের বাইরে শকু-টকুর লগে কথা বইলা চইলা আসছি। আমার লোকেদের তো আমি সিল মাইরা দেইনি।’
এদিকে ঘটনা কাভারেজে নাসিকে দায়িত্বপালনরত যুগের চিন্তা ২৪’র স্টাফ রিপোর্টার বলেন, ‘নাসিকে দুই কাউন্সিলরের মধ্যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে এমন সংবাদে সেখানে যাই। সেখানে যাওয়ার পর গেটের বাইরে কয়েকশ লোক জড়ো হতে দেখি। এদিকে নাসিকের মাসিক সভা শেষে কাউন্সিলররা বের হতে শুরু করে। গেটের বাইরে কাউন্সিলর বাবু গাড়িতে উঠার জন্য দাঁড়ায়। সেখানে কাউন্সিলর শকুও ছিলো। তারচারিদিকে ঘিরে থাকা বিশ-ত্রিশ জন যুবক হঠাৎ করে চিৎকার করে উচ্ছৃঙ্খল ভাষায় বলতে থাকে, মোবাইলে ছবি তোলোস, ভিডিও করোস। আমি তাদেরকে বলি আমি ওসবের কোনটিই করিনি। পরে তারা গেটের বাইরে থেকে দৌড়ে এসে আমার মোবাইল ফোন দুটো কেড়ে নেয়। আমাকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। আমার চারপাশে তখন অনেক
কাউন্সিলর, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলো। তবে তারা কোন প্রতিবাদ করেনি। উচ্ছৃঙ্খল যুবকরা ধস্তাধস্তি করে আমার একটা মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে যায়। এর আধাঘন্টা পর এক সাংবাদিকের মাধ্যমে তারা আমার মোবাইল ফোনটি ফেরত দেয়। সম্ভবত এতো লোক জড়ো হওয়ায় আমি ছবি তুলে থাকতে পারি ভেবে তাঁরা আমার মোবাইলটি কেড়ে নিয়েছিলো’
এদিকে নাসিকের সিও এএফএম এহতেশামূল হক বলেন, সিটি করপোরেশনের ভেতরে এমন কোন ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। তবে ব্যক্তিগত বিষয়ে কারো সাথে কারো এরকম কোন ঘটনা ঘটলেও এটি সিটি করপোরেশনের বিষয় না। এরকম অনেক ঘটনা ঘটে থাকে। যাদের সাথে ঘটেছে তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে নিন।
- ছোট বউ বলে শিউলিকে ডাকতেন খোরশেদ
- রেলওয়ে জায়গা মাথায় করে নিয়ে যাবে, তা হবেনা: মেয়র আইভী
- যারা খাদ্য কষ্টে ভুগবে তাদের পাশেই আমি সাধ্যমতো থাকবো: লিপি ওসমান
- রাত এগারটার পর উচ্চ স্বরে গান বাজানো যাবে না : ইমরান সিদ্দিকী
- খোরশেদের দস্যু রানী-চুন্নী-কলিজার টুকরা সব শিউলি
- হয় আপনি থাকবেন, নয় আমি থাকব : এসপি হারুন
- রেলওয়ের উচ্ছেদ : মনির হোটেলসহ বাকিদের সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্য !
- শামীম ওসমানের সময় লাগে তাই হকারমুক্ত করেছি: এসপি হারুন (ভিডিও)
- পশ্চিম দেওভোগে যুবক খুন, আহত ৭
- এসপি জানেনই না চাষাঢ়া থেকে খানপুর রাস্তা দখল করে রাখে! :ডিসি জসিম
- দল আপনাকে আকাম করতে বলে নাই : এসপি হারুন
- ‘এসপি হারুনের ব্যানার খুললে সুইসাইড করমু’ (ভিডিও)
- ৩০ টাকা ভাড়ায় ৩০মিনিটে নারায়ণগঞ্জ টু বাইতুল মোকাররম
- আইন শিখাইয়া লাভ নাই, যা ভালো হয় তাই করবো : এসপি হারুন
- মেলা, মদের বার, থানকাপড় মার্কেট, বিআরটিসি সব ছিলো আলোচনায়