শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জে নতুন করোনাভাইরাস আক্রান্ত নেই : জসিম উদ্দিন 

প্রকাশিত: ৩১ মার্চ ২০২০  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নারায়ণগঞ্জে নতুন কোন করোনাভাইরাস আক্রান্ত নেই বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন।


মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস সম্পর্কে চতুর্থ দিনের মতো সংবাদ সম্মেলনের এ তথ্য জানান তিনি।

 

জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন জানান, জেলায় বর্তমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ জন, আইসোলেশনে আছে ১ জন। নতুন কোন আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। তবে হোমকোয়ারেন্টাইনে ৪১২ জন ছিলো, তার মধ্যে আজকেই ১৮ জন নতুন যুক্ত হয়েছে। কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়প্রাপ্ত ২৩০ জন, এরমধ্যে আজকে পেয়েছে ৫১ জন। ১লা মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৬ হাজার ৩ জন, তাদের মধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে ৯৫৯ জন।


তিনি আরও জানান, সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র খোলা হয়েছে ৬টি। কোভিড-১৯ চিকিৎসায় নারায়ণগঞ্জে প্রস্তুত করা হয়েছে ৩০টি বেড। এখানে কাজ করবেন ৯০ জন ডাক্তার ও ১৭৩ জন নার্স। রোগী আনার জন্য ৬টি এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করা হয়েছে। বেসরকারি ৭২টি কেন্দ্র ৭২টি বেড, ১০০জন ডাক্তার ও ১৮০ জন নার্স, পিপিই মজুদ ১ হাজার ৪০২ টি, বিতরণ করা হয়েছে ৫৪৮টি। 

 

জসিম উদ্দিন বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত মোট ৭৫ মেট্রিক টন চাল ও ৯ লাখ টাকা জেলার সকল উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ওয়ার্ড গুলোতে মোট ৯.২২ মেট্টিক টন চাল ও ১লাখ ১০ হাজার ৭০০ টাকা উপ-বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে দুই লাখ ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সরকারের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে আমাদের মাঝে পাঁচ লাখ টাকা ও ২০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে যা অসহায় খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে বন্টন করা হবে। 


তিনি বলেন, ভিক্ষুক, দিনমজুর, রিক্সাচালক, ভ্যানগাড়ি চালক, পরিবহন শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকান করে জীবীকা নির্বাহ করে তাদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা প্রদান করতে হবে। কোন মানুষ যেন বাদ না পরে সেই দিকে খেয়াল রাখা সহ যারা বিত্ত্ববান, সামাজিক বা রাজনৈতিক সংগঠন ও এনজিও সংস্থা কোন খাদ্য সহায়তা প্রদান করলে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে নেয়ার আহবান জানাচ্ছি।


জেলা প্রশাসক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত সকল নির্দেশনা মোতাবেক জেলার সকল দপ্তর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন  সর্বোচ্চ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। জনসচেতনাত কার্যক্রমকে বেগবান করার জন্য জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের নের্তৃত্বে সেনবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতায় জেলায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট সামাজিক  দূরত্ব বজায়, দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতামূলক ২৫ টি অভিযান পরিচালনা করা হয়। 


জেলা প্রশাসক  বলেন, বিদেশ প্রত্যাগত ব্যক্তিদের আইন ভঙ্গের শাস্তি সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে, বাজরে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকল্পে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম যথাযথভাবে মনিটরিং চলছে। আজ সন্ধ্যায় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নেতৃত্বে সেনবাহিনী নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এছাড়া এ কার্যালয়ে স্থাপিত জেলা মনিটরিং সেল ও কন্ট্রোল রুম ২৪ ঘন্টা চালু রাখা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমে প্রাপ্ত অভিযোগ  ও পরামর্শের  বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। 


সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সমস্যার কথা সাংবাদিকরা তুলে ধরেন। পরে জেলা প্রশাসক সকল বিষয়ে দৃষ্টি দিবেন বলেন সাংবাদিকদের আশ্বাস দেন ও বিভিন্ন  বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। 


এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

এই বিভাগের আরো খবর