শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জে তিনদিনব্যাপী বিভাগীয় জোড় ইজতেমা শুরু

প্রকাশিত: ২৯ নভেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দেশের ১১টি জেলার আলেমী সূরার তাবলীগ জামাতের ৩ দিনব্যাপী বিভাগীয় জোড় ইজতেমা শুরু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৯ টায় ভারতের তাবলীগ জামাত আলেমী সূরা সমর্থিত মুরুব্বী মাওলানা আকবর শরীফের তারগীবি বয়ানের মধ্যে দিয়ে জোড় শুরু হয়। 


ফতুল্লার নয়ামাটি এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলা তাবলীগি মার্কাজ মসজিদে আয়োজিত এ জোড় চলবে আগামী রবিবার পর্যন্ত। এদিকে, তাবলীগের জোড়কে  কেন্দ্র করে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ। সহস্্রাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সিসি ক্যামেরা  গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ নিবীর পর্যবেক্ষণসহ মাঠে ১৩ টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে জোড় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছে পুলিশ।


শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জোড়ের মাঠে তিনদিনব্যাপী এ বিভাগীয় জোড় ইজতেমার  উদ্বোধনকালে বয়ানে মাওলানা আকবর শরীফ বলেন, শুধু বয়ান শুনলে চলবে না। আমল করতে হবে। সারা বিশ্বের মুসলমানরা হচ্ছে একটা দেহ। যেখানে এই দেহ কষ্ট পাবে সেই কষ্টে আমাদেরও কষ্ট পেতে হবে। এটাই হচ্ছে ঈমান। 


তিনি আরও বলেন, তাবলীগ জামাতের মেহনতটি হচ্ছে মানুষের দিলের পিছনে মেহনত। একটি মানুষ যেন আল্লাহ্র, ঈমানওয়ালা, দ্বীনদার পরহেজগার হতে পারে এটাই হচ্ছে তাবলীগের মেহনত। এই মেহনতের মূল উদ্দেশ্য হলো গুনাহ থেকে বাঁচা। নিজেকে সংশোধনের চেষ্টা করা। রসূল ও সাহাবীগণ যেভাবে মানুষের পেছনে দ্বীনে মেহনত করেছেন পুরোপুরি সেই মেহনতকে অনুসরণ করা। আল্লাহভোলা মানুষগুলোকে আল্লাহর দিকে ডাকা।  মাওলানা আকবর শরীফের হিন্দি ভাষায় বয়ানের বাংলায় অনুবাদ করেন কাকরাইল মার্কাজের আলেমী সূরা সমর্থিত সদস্য মাওলানা নূর রহমান।


মাঠের পরিস্থিতির প্রসঙ্গে বরগুনা চিল্লার  জামাতের জিম্মাদার জাকির হোসেন মাসদাইরী জানান, দেশের ১১টি জেলা অর্থাৎ ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা ও ঝালকাঠি জেলার ৩ চিল্লার কয়েক হাজার সাথীদের নিয়ে জোড় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সাথীদের জন্য ৩২টি খিত্তা, ওজু করার স্থানসহ পর্যাপ্ত টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে মেডিকেল টিম, এ্যাম্বুলেন্স। শুক্রবার জোড়ের প্রথম দিন হওয়ায় নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকেও কয়েক লাখ মুসল্লিরা এখানে এসে জুম্মার নামাজ আদায় করেছেন।


এদিকে, জোড়ের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় আধা কিলোমিটার জুড়ে ফতুল্লার জালকুড়ি মার্কাজ মসজিদের পাশে এলাকার খালি জমিতে ১১ টি জেলা থেকে আগত জোড়েরর সাথীদের জন্য থাকার স্থান ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাজার হাজার মুসল্লীরা সেখানে অবস্থান নিয়েছেন। 
মাঠ থেকে তাবলীগ জামাতের কর্মী ওয়াহিদ জানান, মাঠে বিপুল পরিমান তাবলীগের সাথীদের জন্য প্রায় ৬ শত অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। মটর বসিয়ে পানির লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা আলাদা জামাত বানানো হয়েছে। জামাতগুলো এগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। 


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশ, সাদা পোশাকে পুলিশ, যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ, ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা ডিউটিসহ প্রায় সহস্্রাধিক অফিসার-ফোর্স ইজতেমায় নিরাপত্তা ডিউটিতে মোতায়েন করা হয়েছে।  


তিনি আরও জানান, গোয়েন্দা টিমগুলো সিভিল পোশাকে মাঠে বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তায় কাজ করছে। এছাড়া মাঠে থাকা ওয়াচ টাওয়ার থেকে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।


প্রসঙ্গত, প্রতি বছর ইজতেমার পূর্বে এই জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। তিন দিনের এই জোড় মূলত যারা টানা ১২০ দিন তিন চিল্লা ও আলেমগণ এক সাল অর্থাৎ ১২ মার টানা আল্লাহ্র রাস্তায় সময় দিয়েছেন তারাই এই জোড়ে অংশগ্রহণ করে থাকে। তবে জোড় উপলক্ষে ১ চিল্লার সাথীরা ইচ্ছে করলে মাঠে গিয়ে অবস্থান করতে বা থাকতে পারে।
 
 

এই বিভাগের আরো খবর