নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম হবে নীটওয়্যারের স্বর্গরাজ্য : সেলিম ওসমান

যুগের চিন্তা ২৪ : বন্দর নগরী নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামকে নীট ওয়্যারের স্বর্গ বানানোর ঘোষণা দিয়েছেন নীট গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ-এর সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তিনি বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা খুব কষ্ট করে উঠে এসেছি। হোসিয়ারী থেকে পরে বৃহৎ আকার দিয়ে নীটওয়্যার জন্ম হয়েছে। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিদের্শনায় আমরা বিকেএমইএ এর সৃষ্টি করেছি। 

 

তিন আরও বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ যদি গহর জামিলকে সহযোগিতা করে তাহলে আমরা আশা করছি চট্টগ্রামে নদীর পাড়ে ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই বিকেএমইএ-এর নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য আমরা জমি পাবো এবং ডিসেম্বরের মধ্যে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেতে পারবো। যার ফলে চট্টগ্রামেও নীট ওয়্যার বৃহৎ আকার ধারণ করবে। নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামকে নীট ওয়ারের স্বর্গরাজ্য বানাতে পারবো। আমরা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের মানুষ যা পারিনি চট্টগ্রামে গহর সিরাজ জামিল সেটা করে দেখিয়েছেন। আগামীতে চট্টগ্রাম থেকেই প্রথম সহসভাপতি প্রার্থী দেওয়া হবে তিনি ঘোষণা দেন।

 
শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ৮টায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বুট ক্লাবে বিকেএমইএর  ২০১৯-২০২১ এর পরিচালনা পর্ষদকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সদস্যদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে টানা পঞ্চম বারের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায়  বিকেএমইএ-এর চট্টগ্রামের সদস্যরাবৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সেলিম ওসমানকে ফুলে তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। সংবর্ধনা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

 

আলোচনা সভায় চট্টগ্রামের উদ্যোক্তারা নীটওয়্যার সেক্টরে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে সেগুলো সমাধানে বিকেএমইএ ও বিজিএমইএ নেতৃবৃন্দদের একত্রে সরকারের সাথে আলোচনায় বসার আহ্বান রাখেন।

 

এর প্রেক্ষিতে সেলিম ওসমান বলেন, শুরু থেকেই আমরা বিকেইএমইএ, বিজিএমইএ ও বিটিএমইএ-এর একত্রিতভাবে কাজ করে আসছি। যেকোন সমস্যায় আমরা সরকারের সাথে আলোচনায় বসে সমাধানের চেষ্টা করেছি।বর্তমান বিদ্যমান সমস্যা নিয়েও প্রয়োজনে আমরা সরকারের সাথে আলোচনায় বসে সমাধানে চেষ্টা করবো। বর্তমান সরকার শিল্প ও ব্যবসা বান্ধব সরকার। আমরা আশা করবো সরকারের দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থ রক্ষায় অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

 

বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা মোটা ভাত আর মোটা কাপড়ের দাবিতে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছি। বাংলাদেশে যদি স্বাধীন না হতো তাহলে হয়তো আজকে আমাদের পাকিস্তানীদের গোলামী করতে হতো। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মোটা ভাত আর মোটা চালের দাবিতে স্বাধীন হওয়া দেশ আজ মাথা উচু করে দাঁড়িয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা বস্ত্র বন্ধ করে দিলে বিশ্বের অনেক দেশের মানুষের বস্ত্র পড়া কষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষ অন্য শ্রম দিয়ে অন্য দেশগুলোকে টিকিয়ে রেখেছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ব্যবসা বাণিজ্যে পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। তাই এই সরকারের আমলে ব্যবসায়ীদের কোন আন্দোলনের প্রয়োজন হবেনা, আলোচনার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।

 

বিকেএমইএ এর তৃতীয় সহ সভাপতি গহর সিরাজ জামিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদান করেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, উইজডম অ্যাটায়ার্স লিমিটেড এর নির্বাহী পরিচালক আকতার হোসেন অপূর্ব।

 

সভাপতির বক্তব্যে গহর সিরাজ জামিল বলেন, আমি সৌভাগ্যবান চট্টগ্রামে সবাইকে আনতে পেরেছি এবং সেজন্য চট্টগ্রামে বিকেএমই-এর নিজস্ব ভবন হওয়ার মত বৃহৎ ঘোষণা আমরা পেয়েছি এবং সেটি বাস্তবায়িত হবে। সেলিম ওসমান শুধু বিকেএমইএ-এর নেতা নন উনি পুরো আরএমজি সেক্টরকে সারাবিশ্ব জুড়ে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। উনার সাথে কাজ করে আমরা অনেক কিছু শিখছি। বিশেষ করে নতুন বাজার সৃষ্টিতে তাঁর গৃহিত উদ্যোগ অত্যন্ত প্রসংশীয়। 

 

তিনি আরও বলেন, তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমি বিশ্বাসী। সেই সাথে আমি বলবো, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে রূপকল্প ২০২১ এর বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখছেন সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সেলিম ওসমানের হাত ধরে নীটওয়ার তথা আরএমজি খাত সব থেকে বেশি ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদী।

 

পরিচালনা বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, দ্বিতীয় সহসভাপতি অমল পোদ্দার, সহসভাপতি (অর্থ) মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল,পরিচালক আবু আহম্মেদ সিদ্দিক, মনসুর আহম্মেদ, ফজলে শামীম এহসান, জিএম ফারুক, মোস্তফা জামাল পাশা, আশিকুর রহমান, খন্দকার সাইফুল ইসলাম, মোস্তফা মনোয়ার ভূইয়া, তারিক আজিজ, রাজিব দাস সুজয়, শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া সাজনু, সেলিম মাহবুব, নাসিমুল তারিক মঈন, রতন কুমার সাহা, নন্দ দুলাল সাহা, কবির হোসেন, মোহাম্মদ হাসান, আহম্মদ নূর ফয়সাল, মির্জা মোহাম্মদ আকবর আলী চৌধুরী, ইমরান কাদির তূর্য এবং মজিবুর রহমান।

 

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পূর্বে চট্টগ্রামের বুট ক্লাবে বিকেএমইএ তৃতীয় মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চট্রগ্রামে বিকেএমইএ-এর নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য ৭ কোটি টাকা প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়। আগামী ৩০ ডিসেম্বর সংগঠনের বার্ষিক সাধারণ সভায় এর চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করা হবে। বরাদ্দকৃত অর্থ বিকেএমইএ-এর চট্টগ্রাম শাখার জন্য ব্যাংকে এফডিআর করা রাখা হবে।