শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নদীপথে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজির প্রতিবাদে মানববন্ধন, আল্টিমেটাম

প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নদীপথে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজি বন্ধসহ রূপগঞ্জে বালু নদীতে সন্ত্রাসীদের হামলায় চারজন আহতের প্রতিবাদে ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নৌযান শ্রমিকরা। বোববার (১২ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

 

মানববন্ধনে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ শিকদার মাস্টার নদীপথে সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজি ও শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ও আল্টিমেটাম দিয়ে জেলা পুলিশ সুপার ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) উদ্দেশে বলেন, নৌ শ্রমিকদের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের আগামী পাঁচদিনের মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে নদীপথে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দেয়াসহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

 

বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন জেলা শাখার সভাপতি সরদার আলমগীর মাষ্টারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- বিআইডব্লিউটিসি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন চুন্নু মাস্টার, লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাস্টার, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা কবির হোসেন, দশআনি মোহনপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, হামলায় আহত তৈয়ব হোসেন, ডেমরা শাখার সভাপতি জাকির হোসেন, কাওতাইল শাখার সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, সারুলিয়া শাখার উপদেষ্টা মো. মুরাদ হোসেন, সহ সম্পাদক আজাদুর রহমান, খাদ্যপণ্য শ্রমজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি ইদ্রিস খান, ইকবাল হোসেন প্রমুখ।

 

তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে নৌ পুলিশ গঠন হওয়ার পরে আমরা মনে করেছিলাম নদীপথ সুরক্ষিত হবে। কিন্তু নৌ পুলিশের সামনেই যদি নৌ শ্রমিকের রক্ত ঝরে আর তারা কিছুই করতে না পারে তখন আমাদের নিজেদের অভিভাবকহীন মনে হয়।

 

যেখানে নৌ পুলিশ ফাঁড়ি দেয়া দরকার সেখানে না দিয়ে অন্য জায়গায় কেন নৌ পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়েছে সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। বালুমহালের কতিপয় দুষ্কৃতিকারীর শেল্টারদাতা কারা আমরা জানি। শ্রমিকদের রক্ত নিয়ে হোলিখেলার পয়সা কাদের পকেটে যাচ্ছে সেটাও আমরা জানি।

 

তাই আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না। আমরা রাস্তায় নামলে সব নদীবন্দর অচল হয়ে পড়বে। সারাদেশে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। যদি আর একজন নৌ শ্রমিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে তাহলে পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য পুলিশ প্রশাসনকেই দায় নিতে হবে।

 

সবুজ শিকদার মাস্টার বলেন, বাংলাদেশে যতগুলো শ্রমিক সেক্টর রয়েছে, তার মধ্যে নৌ শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করে থাকেন। তারা পরিবার পরিজন ফেলে রেখে মাসের পর মাস বাড়ির বাইরে থাকেন। ঈদ উৎসবেও পরিবারকে সময় দিতে পারেন না।

 

সাধারণ মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছানো এবং খাদ্যদ্রব্যসহ আনুষাঙ্গিক পণ্য পৌঁছানোর কাজ করে থাকেন। অথচ তারা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না। একজন মালিক একটি জাহাজ থেকে অসংখ্য জাহাজের মালিক বনে গেলেও শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না।

 

অনেক মালিক তার জাহাজের কাগজপত্র ঠিক করেন না। আর ওইসব জাহাজ নিয়ে নৌপথে চলাচল করতে গিয়ে শ্রমিকদের দুর্ভোগ হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

 

মানববন্ধনে উপস্থিত শ্রমিকরা জানান, গত ৬ আগস্ট মেঘনায় সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ মতিন কাজী বাহিনীর হামলায় কয়েকজন নৌ শ্রমিক আহত হন। ১০ আগষ্ট রূপগঞ্জের বালু নদীতে ফকিরখালী নামক স্থানে চাঁদাবাজ চক্রের মূলহোতা মাসুদের (৩০) নেতৃত্বে একদল চাঁদাবাজ চক্র দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হানা দিয়ে এমবি দূরন্ত নামে একটি বালুবাহী বাল্কহেডের সুকানী তৈয়ব আলীসহ চারজনকে পিটিয়ে আহত করে নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেন।

 

পদ্মা নদীর বাঘাবাড়ি বন্দর, শীতলক্ষ্যা মেঘনাসহ বিভিন্ন নদীতে চাঁদাবাজদের দাবিকৃত টাকা না দেয়া হলে শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়।

এই বিভাগের আরো খবর