শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনায় অতঙ্কিত অভিভাবক মহল!

প্রকাশিত: ১১ জুলাই ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নারায়ণগঞ্জে’র বিভিন্ন গণমাধ্যমগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পাচ্ছে। এর প্রতিবাদে নারী, মানবাধিকারকর্মী এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন।


কিন্তু এই ধর্ষণ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। একটি ঘটনার চেয়ে অন্যঘটনার বীভৎসতায় দিশেহারা হয়ে পড়ছে ভুক্তভোগী পরিবার ও সাধারণ মানুষ।


আর সর্বশেষ সিদ্ধিরগঞ্জে’র অক্সফোর্ড হাইস্কুলের শিক্ষক কতৃক ২০ এর অধিক ছাত্রীর মোবাইলে ছবি তুলে ব্লাকমেইল করে পালাক্রমে ধর্ষণের ঘটনা এবং ফতুল্লার বায়তুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসায় ১২ জন ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের বিষয়টি জনমনে সৃষ্টি করেছে এক বিরাট অতঙ্ক।


তাই ধর্ষণ নামক এই শব্দটি এখন অল্পবয়স্ক ছেলে এবং মেয়েদের চেয়ে তাঁদের অভিবাবকদের বেশি ভাবুক করে তুলছে ।


বুধবার (১০ জুলাই) নগরির বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেখা যায়, অন্যান্য সময়ের চেয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে তাঁদের অভিবাবকদের উপস্থিতি একটু বেশি।


এ সময় অভিবাবকদের দেখা যায় সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে পাঠিয়েও তাঁরা সেখানে অবস্থান করছে। আর এর কারণ হিসেবে অভিবাবকরা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ধর্ষণের ঘটনা এখন তাঁদের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে।


এই বিষয়ে দেওভোগের হোসাইনিয়া আলিয়া মাদ্রাসা’র এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, মাদ্রাসার শ্রেণিকক্ষে মেয়েকে বসিয়ে দিয়ে প্রতিদিন ক্লাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি এখানে অবস্থান করি। আবার একটু পর পর গিয়ে শ্রেণিকক্ষে মেয়েকে দেখে আসি সব ঠিকঠাক আছে কি না ! আসলে গত এক বছর আগেও আমাদের মনে কোন দুশ্চিন্তা ছিলোনা। কিন্তু সবশেষ নারায়ণগঞ্জে বেশ কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা আমাদের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে।


চাষাঢ়ার শহীদ মিনারে সামনে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজে ১ম বর্ষে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর মায়ের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা এখন ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনাগুলো টিভিতে দেখে অনেক সতর্কভাবে আমাদের সন্তানদের পরিচালনা করছি। পাশাপাশি একটু ভয়ও কাজ করে ! আর ধর্ষণে বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে যেহুতু কোন রকমের ভালো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। তাই এখন আমাদের (অভিবাবকদের) সচেতন হতে হবে।


এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি লক্ষ্মী চক্রবর্তী বলেন, সকল অভিবাবকরাই এখন এই ব্যপারে চিন্তাগ্রস্থ! স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসার যেসব ম্যানেজিং কমিটি আছে তাঁদের সাথে প্রশাসনের মিলেমিশে কাজ করতে হবে।


ডিসিসহ শিক্ষা অফিস এবং নির্বাহী সেক্টরের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আর এর জন্য এখন গণসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে পাশাপাশি যারা ধর্ষণ করে তাঁদের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর সেটা অবশ্যই দলমত নির্বিশেষে হতে হবে। এটা করা গেলেই এই ধর্ষণ প্রতিহত করা যাবে। 

এই বিভাগের আরো খবর