বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ধর্ষণ ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়

প্রকাশিত: ২১ মে ২০১৯  

আমরা আমাদের কর্মের গুনেই সমাজে কিংবা রাষ্ট্রে মর্যদার আসনে অধিষ্ঠিত হাবো। কর্মই মানব সমাজেকে মূল্যায়নে সাহায্য করে থাকে। উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে কেউ মূল্যায়িত হবেন, এমনটা আজ আর নেই। এখন কর্মফলই প্রকাশ করে মানবিকতা আর মূল্যবোধের প্রকাশ। আপনাদের কর্মই আপনাকে মূল্যায়নে সাহায্যে করে থাকে। 


এক সময় ভাবা হতো দরিদ্র জনগোষ্ঠী অভাবে স্বভাব নষ্ট করে। কিন্তু অপরাধের পাঠ বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম এবং একাডেমিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে গবেষণার মাধ্যমে সমাজবদ্ধ প্রতিষ্ঠিত সেসব ধারণার আমূল পরির্বতন হয়েছে।


উঁচু শ্রেণির মানুষ, মধ্যাবিত্ত ও দারিদ্র জনগোষ্ঠী সবাই অপরাধ কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত। তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে জানা যায়, আজ সকল শ্রেণির মানুষ ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য এবং সমাজ বিরোধী অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। একের পর এক ধর্ষণ ঘটে যাচ্ছে, যানবাহনে, গার্মেন্টস, কলকারখানায়, নির্বাচন চলাকালে ঘটনার প্রয়োজনে ঘটনা। শিশু ধর্ষণ, গৃহ পরিচারিকা ধর্ষণ, পারিবারিক সংঘাতের কারণে ধর্ষণ, রাজিৈতক দলের বিভিন্ন নেতাদের মাধ্যমে ধর্ষণ, বাবা কতৃক কন্যা সন্তানের ধর্ষণ।


কোথায় গেছে মানাবিকতা, কোথায় গেছে সামাজিক মতাদর্শ। মূল্যাবোধ, বিবেক সব আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে, সংবাদপত্র বেশ গুরুত্বের সাথে ধর্ষণ ও নানারকম অপরাধজনিত ঘটনা বেশ আলোড়নের সাথে প্রকাশ  করে। প্রখরভাবে জ্বলে উঠে আর নিভে যায়। আমরা মানব সমাজ দিন দিন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। মেনে নিয়েছি স্বাভাবিক ঘটনা হিসাবে।


কখনো কখনো দেখা যায় যারা ধর্ষণের সাথে জড়িত এবং ধর্ষণকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা প্রচালিত আইন-কানুনের তোয়াক্কা করে না এবং তারা বেশ প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান মানসিক বিকৃতিসপন্ন এবং একশ্রেণির প্ররোচনাকারী মানুষ। তাদের সাথে জড়িত রাজনৈতিক নামধারী কৃচ্ছধারণকারী ব্যাক্তি প্রশাসনের যোগসাজশে ধর্ষণ নামক অপরাধটিকে সামাজিক ব্যধি হিসেবে ইতোমধ্যে পরিগণিত করেছে।


বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পরিসংখ্যানে জানা যায়, ২০১৬ সালে দেশে এক হাজারের বেশি নারী ও কন্যা শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ১৪ টি জাতীয় দৈনিকের খবর পর্যবেক্ষণ করে সংগঠনিটি বিবৃতি  দিয়েছে যে, ২০১৬ বাংলাদেশে সাধারণত তিন ধরনের ধর্ষণের কথা জানা যায়। ধর্ষষণ, গণধর্ষণ এবং ধর্ষণের পরে হত্যা।

 

আইন  ও সালিশ কেন্দ্রের রিপোর্টের মাধ্যমে জানা যায়, ২০১৭ সালে সমগ্র বাংলাদেশে ৮১৫ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধনবান, ক্ষমতাশালী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, পরিবহন শ্রমিক এ পর্যায়ের লোকজন ধর্ষণের সাথে জড়িত। সংস্থাটির পরবর্তী বছরের রিপোর্টের মাধ্যমে জানা যায় ২০১৮ সালে সারাদেশে ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬৩ জন। ধর্ষণের পরে আত্মহত্যা করেছে ৭ জন। অর্থাৎ ধর্ষণ সমাজে একটি প্রচলিত এবং স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। এর থেকে আমাদের পরিবার এবং সমাজ কেউই নিরাপদ নয়। 

 

বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ কেন হচ্ছে, তার কারণ অনুসন্ধানের জন্য অপরাধ বৈজ্ঞানিক পাঠক্রমের কয়েকটি বিষয়কে সামনে নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অপরাধবিজ্ঞানীরা অপরাধের কারণ নির্ণয় করতে সক্ষম হয়েছে। যেমন : জৈবিক দৃষ্টিভঙ্গি , মনস্তাত্বিক, দৃষ্টিভঙ্গি, অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, ভৌগলিক  দৃষ্টিভঙ্গি। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপরাধের উপদানমূলক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অপরাধের কারণ নির্ণয় করা যায়। 


যেহেতু আলোচনার বিষয়বস্তু বাংলাদেশে ধর্ষণের কারণ অুনসন্ধান করা সেহেতু মনস্তাত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি, সমাজতাত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনা করা যেতে পারে। বাংলাদেশে ধর্ষণের কারণ বিশ্লেষণে মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে অপরাধের জন্য সামাজিকভাবে উদ্ভুত বেশ কয়েকটি উপাদান দায়ী।

 

বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েডীয় আলোকপাতে জানা যায়, ইড, ইগো এবং সুপার ইগোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে মানুষ অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠে। ইড হচ্ছে মানুষের সেই সত্বা যা মানব মনের যে কোন ইচ্ছাকে পূরণের জন্য নানভাবে প্ররোচনা দিয়ে থাকে। ইগো মানুষকে সামাজিক বাস্তবতা ও রীতিনীতি সম্বন্ধে স্মরণ করিয়ে দেয়। এবং সুপার ইগো হচ্ছে ব্যধির সেই দিক যা ব্যক্তির সামগ্রিক আচরণের উপরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে থাকে ।


যে ব্যক্তির মধ্যে ইগো এবং সুপার ইগো, সক্রিয়ভাবে বলবৎ থাকে সে ব্যক্তি কখনোই অপরাধ করতে পারে না। পাশাপাশি ইগো এবং সুপার ইগো যদি ইডকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে সে ব্যক্তির দ্বারা যে কোন অপরাধ সংঘটন করা কোন বিষয়ই না। একজন ধর্ষণকারী ব্যক্তি কখনোই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা এবং অপরাধ সংঘটনের সময় কখনোই সামাজিক বিধি নিষেধের তোয়াক্কা করেনা। সে নিজের আচরণের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার ব্যর্থতার দরুণ ব্যক্তিটি ধর্ষক হয়ে ওঠে।  


এছাড়াও মনস্তাত্বিক বেশ কিছু কারণ যেমন: ঈর্ষাপরায়ণতা, হীনমন্যতা, হতাশা, স্বার্থ এবং আদর্শগত দ্বন্দ্ব ইত্যাদি কারণে ধষর্ণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটায় দুষ্কৃতিকারীরা। সর্বশেষ কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা  নিয়ে যদি কারণ অনুসন্ধান করা হয় তাহলে দেখা যাবে বর্ণিত যেকোন বিষয়ের জন্যই ধর্ষণটি ঘটিয়েছে অপরাধীরা। অপরাধীরা অনেক সময়ই ইনফেয়ারিটি কমপ্লেক্সে  থাকে। বিশেষ করে দৈহিক ত্রুটি, অযোগ্যতা, অক্ষমতা ইত্যাদি কারণেও ন্যাক্কারজনক অপরাধের সাথে জড়িত হয়। 

 

অপরাধবিজ্ঞানী সাদার ল্যান্ড তার একটি তত্বে উল্লেখ করেছেন, অপরাধমূলক আচরণ হচ্ছে সামাজিক শিক্ষার ফলস্বরূপ। সামাজিক শিক্ষা বলতে একটি ছেলে বা মেয়ের সমাজে বড় হওয়ার পাশাপাশি সামাজিক কাঠামো থেকে অর্জিত শিক্ষাকেই বোঝানো হয়ে থাকে। যেকোন ব্যাক্তির জীবনে সামাজিক শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পঠন পাঠনে আমরা অনেক কিছুই জানতে এবং বুঝতে শিখি। কিন্তু সামাজিক শিক্ষা ব্যাক্তির মননে, মগজে আত্মস্থ হয়ে জীবন বিনির্মাণে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। হোক সেটি ইতিবাচক কিংবা নেতিবাচক। তাছাড়া সমাজে বসবাসরত অন্যান্য মানুষের পারবারিক মিথস্ক্রিয়ায় একটি ছেলে কিংবা মেয়ে অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয় খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু, অর্থাৎ নিকটজনের কাছ থেকেই বেশিরভাগ অপরাধীর আচরণগুলো আত্মস্থ করে থাকে।

 

আমরা যদি ধর্ষককে এনালাইসিস করি তাহলে দেখা যাবে তার আশেপাশেই অনেকেই কোননা কোন সময় ধর্ষণের মতো অপরাধে দোষী হিসেবে সাব্যস্থ হবে। প্রাতিষ্ঠানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার বিশ্লেষণ যে বিষয়টি উঠে আসে তা হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানগুলো ছেলেমেয়েদের প্রকৃত মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারছে না। নৈতিক শিক্ষায় বলীয়ান বিবেকবোধসম্পন্ন মানবিক আচরণ ইত্যাদি বোধসম্পন্ন কোন ছেলেেেময়ে কখনোই অপরাধ করতে পারে না।

 

অন্যাদিকে ধর্মীম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল কাজ হচ্ছে ছেলে মেয়েদের সৃষ্টিকর্তার প্রদত্ত আদেশ, নিষেধ প্রভৃতির উপর বিশ্বাস বলবৎ করা ও তদানুযায়ী অনুশীলন করার শিক্ষা দেওয়া। কেননা কোন ধর্মই অপরাধ এবং অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। তাহলে মূলত প্রতিউত্তর আসে, আমাদের সমাজ গড়ে ওঠা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। যদি ব্যর্থ না হতো তাহলে সমাজে প্রতিনিয়ত ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতো না।

 

অন্যাদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল কাজ হচ্ছে, ছেলে মেয়েদের বিবেককে জাগ্রত করে দেওয়া। যার প্রোক্ষিতে শিক্ষার্থীরা দেশের প্রতি তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ সমন্ধে সচেতন এবং দায়িত্বশীল হবে। এ কথা হলফ করেই বলা যায়, কোন বিবেকসপন্ন এবং দায়িত্বশীল ছেলে মেয়ে কোন অপরাধের সাথে সংযুক্ত হতে পারে না। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের সাথে যারা সপৃক্ত তাদের যোগ্যতা কর্তব্যনিষ্ঠ আচরণ ইত্যাদি  সমন্ধেও অবগত  হওয়ার বিষয় রয়েছে। কাজেই বলা যায়, প্রতিষ্ঠানগুলো যদি সুচারুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে তাহলে শিক্ষার্থীরা সমাজ বিবর্জিত ও জঘন্য কোন অপরাধের সাথে সপৃক্ত হতে পারতো না।


ধর্ষণের মতো ভয়াবহ সামাজিক অপরাধকে সমাজ থেকে চিরতরে নিশ্চিহ্নের জন্য শূন্য সহিষ্ণু নীতি (জিরো টলারেন্স নীতি) অনুসরণ করতে হবে। মাদক, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সরকার যেভাবে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করেছে ঠিক সেভাবে ধর্ষণের ব্যাপারেও কোন ছাড় দেওয়ার অবকাশ নেই।

 

ধর্ষণকে সমাজ থেকে চিরতরে উৎখাতের জন্য বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে : 
প্রথমত : বিচারহীনতার সংস্কৃতি রুখে দিতে হবে। অপরাধী যেই হোন না কেন তাকে বিচারের কাঠগড়ার দাঁড় করাতে হবে। অনেক অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে আমরা সমাজে বুক ফুলিয়ে ঘুরতে দেখছি বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে অপরাধীরা বারংবার অপরাধ করার সাহস পাচ্ছে। যদি পূর্বোক্ত সব ধর্ষণের বিচার হতো তাহলে বর্তমানে যে প্রায়ই ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা হচ্ছে তা হয়তো কমে যেতো।

 

দ্বিতীয়ত : পাশাপাশি বিলম্বিত বিচার ব্যবাস্থাও প্রকৃত অপরাধীকে সহজেই শাস্তি প্রদান করতে পারে না। কেননা বিচারে বিলম্বিত হলে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রমাণাদি নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে এবং অনেক সময় দেখা যায় বিবাদীর হুমকি এবং ভরে ক্ষতি গ্রস্থরা মামলা তুলে নেয় বিলম্বিত বিচারের কারণে। কাজেই সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রমাণাদি নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে। অনেক সময় দেখা যায় বিবাদীর হুমকি এবং ভয়ে ক্ষতিগ্রস্থারা মামলা তুলে নেয় বিলম্বিত বিচারের কারণে। কাজেই সংশ্লিষ্টদের প্রত্যেকটি মামলার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাই। যদিও নানাবিধ সমস্যা রয়েছে এ সংক্রান্ত, তদুপরি সমস্যাগুলোকে তড়িৎগতিতে মোকাবেলা করে বিলম্বিত বিচার ব্যবস্থা পরিহার করা বাঞ্চনীয়


তৃতীয়ত : পারিবারিক শিক্ষায় মূলত প্রত্যেকটি মানুষের মননশীলতার বুনিয়াদ সৃষ্টি করে থাকে। প্রাতিস্বিক আচরণে প্রত্যেক্যটি পরিবারেই ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু বুনিয়াদি শিক্ষা যা প্রত্যেকটি মানুষের অন্তরে প্রোথিত ও গ্রোথিত থাকে তা মূলত পরিবারের মাধ্যমেই আসে। বর্তমানে একক পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ছেলে মেয়েরা বাবা মায়ের (চাকুরী জীবী) সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ছোটরা মানুষ হচ্ছে কাজের মানুষের কাছে। তাছাড়া ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারে ও বিকাশের অপরাধীদের ক্রমান্বয়ে অপরাধের দিকে ধাবিত হয়।


অবশ্য যৌথ পরিবারে অনেকেই থাকেন এবং সেখানে দাদা-দাদী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ছত্রছায়ায় যদি ছেলে মেয়েরা বড় হয় তাহলে তাদের মধ্যে নৈতিক শিক্ষাও সামাজিক শিক্ষা বহুলাংশে গ্রথিত হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা প্রতিনিয়ত যৌথ পরিবার ভেঙ্গে একক পরিবারের সংখ্যাই দেখতে পাচ্ছি সঙ্গত কারণে। এ বিষয়টিও ছেলে মেয়েদের নৈতিক শিক্ষা গ্রহণের অন্তরায় হিসেবে কাজ করে থাকে।


চতুর্থত : প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাবে নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা নানামুখী অপরাধে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। স্কুল, কলেজ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই একটি মানুষকে পরিপূর্ণ বিবেকবান মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠত করে থাকে।


শেষত : এ ছাড়াও ধর্ষণের যে ঘটনাগুলো তদন্ত হচ্ছে প্রত্যেকটি মামলায় অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করে সমাজে বসবাসরত ঘৃণ্য শ্রেণির পশুরূপী মানুষদের মনে ভয় এবং বিচারের কঠোরতার বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। কাজেই ধর্ষণ থেকে পরিত্রাণের জন্য বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করতে হবে, বিলম্বিত বিচার ব্যবস্থা বন্ধ করতে হবে। পারিবারিক শিক্ষাকে আরও মজুবত করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সুশিক্ষা নিয়মিত করতে হবে এবং সর্বোপরী ধর্ষককে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করতে হবে। তাহলেই সমাজ থেকে ধর্ষণের মত ভয়াবহ ব্যধি ক্রমান্বয়ে দূরীভূত হবে।


লিজা কামরুন্নাহার

এই বিভাগের আরো খবর