বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

দালালে সয়লাব খানপুর হাসপাতাল, ৯ জনকে কারাদণ্ড (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নগরীর খানপুরে ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে দালালদের উৎপাত নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। হাসপাতালে গেলেই চোখে পড়ে দালালদের রোগী নিয়ে টানাটানির দৃশ্য। তাদের বাধা টপকে হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাছে কোনো রোগীর পৌঁছানো কষ্টের ব্যাপার। জোর করেই তারা রোগীদের নিজেদের পছন্দের বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে নিয়ে যেতে চায়। আর রোগীরা  কোনোমতে এই হাসপাতালের চিকিৎসকের কক্ষে পৌঁছালেও নিস্তার নেই। চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বের হলে আরেক দফা টানাটানি শুরু হয়। এবার টানাটানি ব্যবস্থাপত্রে লেখা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। দালালদের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হবে। 

 

এসব অভিযোগে অতিষ্ট হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আগ্রহে র‌্যাব-১১ সিপিএসসি নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল পৌনে ১২ টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তিনশো শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় দালাল সন্দেহে ১৯ জনকে আটক করা হয়। যাচাই-বাঁছাই শেষে ৯ জনকে দালাল হিসেবে সনাক্ত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিন ও মৌসুমী মান্নানের নেতৃত্ব ভ্রাম্যামাণ আদালত বসিয়ে ৯ জনকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

 

ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা পাওয়া সকলে নিজেদের দোষ স্বীকার করেছে। ছাড়া পাওয়া বাকি ১০ জন আর কখনো অযথা হাসপাতালে ঘুরোঘুরি করবে না এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছে। অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন হাসপাতাল র‌্যাব-১১’র স্কোয়াড কমান্ডার। 

 

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হাসপাতালের অনেক দিনের ভিডিও ফুটেজ দেখে ১৯ জনকে আটক করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আমরা ৯ জনকে আমরা বিভিন্ন কাগজপত্র দেখে তাদের অপরাধ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছি। তাদের ৭দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তারা স্বীকার করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য তারা এই হাসপাতালে আসে। বাকিদের মুচলেকা দিয়ে ছাড়া দেয়া হয়েছে। হাসপাতালের চতুর্দিকে মাদকসেবী ও ছিনতাইকারীদের আনাগোনা রয়েছে এমন তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। সেব্যাপারেও আমরা কাজ করছি। 

 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জবাসীর ৩০০ শয্যা হাসপাতাল ও ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের নানা ধরণের অভিযোগ ছিলো। আজ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়েছে। ভিক্টোরিয়া হাসপাতালেও অভিযান পরিচালনা করা হবে।

 

৩০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার (আরপি) ডা.সামসুজ্জোহা সঞ্চয় বলেন, দালালদের বিরুদ্ধে যে আমরা ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী সেটির প্রমাণ আজকের অভিযান। আমাদের অনুরোধের ভিত্তিতেই র‌্যাব-১১ ও জেলা প্রশাসন এই অভিযান পরিচালনা করেছে। কোন ডাক্তারের সাথে দালালদের সংযোগ রয়েছে এমন কোন তথ্য পেলে আমরা তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। 

 

হাসপাতালে দালালি করতে এসে সাজা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, দুলাল হোসেন (৪২), মো.মঞ্জুরুল ইসলাম (৫০), মো.ফরিদ (৩০), আব্দুল খালেক (৩০), আব্বাস উদ্দিন (২৭), রিপন (৩৬), ইব্রাহিম (৩৫), বাদল মিয়া (৫০), মাকসুদা বেগম (২২)। 

এই বিভাগের আরো খবর