শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

দখল রাজ্যে রেল লাইনের দু’পাশ, নগরবাসীর ভোগান্তি

প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০১৯  

নুসরাত জাহান সুপ্তি (যুগের চিন্তা ২৪) : অস্থায়ী দোকানে আবারো দখল রাজ্যে ১নং ও ২নং রেললাইনের দু’পাশ। ঝুঁিক নিয়েই রেল লাইনের দুইপাশে এখানের অস্থায়ী ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছে। একদিকে তারা ঝুঁকিতে ব্যবসা করে অন্যদিকে  চরম দূর্ভোগে পড়ছে পথচারীরাও । 


গত ১৬ জুন ঈদুল ফিতরের পূর্বে জেলা পুলিশ সুপার হারূন অর রশীদের নির্দেশে সদর মডেল থানা পুলিশের নেতৃত্বে ১নং থেকে ২ নং রেল গেইটের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়। তবে মাস খানেক সময় না যেতেই আবারো রেললাইনের দুইপাশ দখল হয়ে গেছে।


সরজমিনে দেখা যায়, রেললাইনের উপর পথচারীরা দিয়ে চলাচল করছে। পথচারীদের হাটার রাস্তায় অস্থায়ী দোকানে ভরে গেছে। সবজি, ফল, প্লাষ্টিকের তৈজসপত্র সহ দা-বটি বিভিন্ন দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেছে। ট্রেন আসলেই এক ধরনের হৈ হুল্লোড় পড়ে যায়।


দোকানদাররা একজন অন্যজনকে দোকানের ছাউনির অতিরিক্ত অংশ রেলপথের উপর থাকায় বলাবলি শুরু করে , ‘ট্রেন আইতাছে জলদি ছাউনির পর্দা সরা।’ কিন্তু ট্রেন আসার সিগনাল থাকলেও পথচারীরা জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে রেললাইনের ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে।


গত ১৫ জুন বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ। অভিযান শেষে দুপুরে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, চাষাড়া থেকে ২নং ও ১নং রেলগেট জ্যামের কারণে রিকশায় সময় লাগে ২৫-৩০ মিনিট।  ফুটপাতগুলো ক্লিয়ার থাকলে হেঁটেই ৭-১০ মিনিটের মধ্যে এই পথে রেলগেট সহজেই যাওয়া যাচ্ছে। 


সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আমরা কাজ করি। আর আমরা কখনোই হকারের বিরুদ্ধে না। গরীব মানুষের বিপক্ষে না। তাদেরকে আসলে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্থানান্তর করা দরকার। ফুটপাত সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য। সাধারণ মানুষের যেন ভোগান্তির শিকার হতে না হয় সেই জন্য কাজ করি।


সাধারন মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত হকার মুক্ত করে পথচারীদের জন্য ফাঁকা করা হলেও ১নং গেট থেকে ২নং গেটে এখনো পথচারীরা ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে। বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার উচ্ছেদ অভিযানের পরদিনই ১নং থেকে ২নং গেটের   অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করে। কিন্তু এই উচ্ছেদের ফলপ্রসূ কোন লাভ দেখা যায়নি। সাময়িক সময়ের ব্যবধানে সেখানে আবারো একইভাবে অবৈধ দোকান বসে গেছে।  


কথা হয় কয়েকজন দোকানদারদের সাথে। রেললাইনে পাশে ৫ বছর যাবৎ ফলের ব্যবসা করছে সুরুজ মিয়া। শুরুতে ভ্রাম্যমাণ হিসেবে থাকলেও বর্তমানে ছোট্ট দোকান আছে তার। তিনি জানান, অনেকদিন যাবৎ এখানে ব্যবসা করতেছি।

 

লঞ্চ টার্মিনাল আর বাস স্টান্ডের খুব কাছাকাছি হওয়ায় এই জায়গায় ফলের ব্যবসা ভালো চলে। আর অন্য জায়গায় ব্যবসা ভালো চলে না। অন্য জায়গায় ব্যবসা ভালো চললে সেখানেই চলে যাইতাম। 


একই কথা জানালেন অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও। তারা জানান, এ জায়গাটাতে আর আজকে থেকে বসা হচ্ছে না। তাছাড়া এখানে যেভাবে ব্যবসা জমে উঠেছে অন্য জায়গাতে তো আর  এমনভাবে জমজমাট হবে না। তার জন্য সময় লাগবে। এতদিন তাহলে আমরা কিভাবে চলব?


এদিকে সাধারণ মানুষের চলাচলে জায়গায় দোকানপাট গড়ে ওঠা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। কালিবাজার এলাকায় বসবাসকারী মেহেদী হাসান বলেন, এই রাস্তা দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই চলাচল করা লাগে। 


রেললাইন দিয়ে চলা ছাড়া আর কি কোন উপায় আছে?  রেল লাইনের দুইপাশেই দোকান। আর অন্য পাশে মেইন রাস্তা। এজন্য চলাচলের জন্য রেললাইন ই সোজাপথ। ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা সবারই মাথায় আছে। এই পথে চলাচল ঝুঁকি জানি, তাও হাঁটি। কারণ আর কোন উপায় নাই।
 

এই বিভাগের আরো খবর