শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

দক্ষিণ সস্তাপুরে কয়েক‘শ পরিবারে নিরব কান্না

প্রকাশিত: ৪ মে ২০২০  

স্টাফ রিপোর্টার :  করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে সারা নারায়ণগঞ্জ জেলা। লকডাউনে হতদরিদ্র মানুষের নেই কর্মসংস্থান। ত্রাণের জন্য ফতুল্লার দক্ষিণ সস্তাপুর এলাকায় অনেকের ঘওে চলছে চাপা হাহাকার।

 

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় কারো কাছ থেকে কোন রকম সহযোগীতা পাচ্ছেনা এই অঞ্চলের মানুষ। এগিয়ে আসেনি বিত্তবানরা। স্থানীয় দরিদ্র মানুষ ছাড়াও এখানে বসবাস করেন অন্য জেলা থেকে আসা কয়েক হাজার শ্রমিক।

 

ত্রাণের জন্য কয়েকশ পরিবারের মাঝে চলছে নিরব কান্না। তবে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দাবী,পর্যায়ক্রমে সবার ঘরে খাদ্য সামগ্রী পাঠানো হবে। 


ফতুল্লার দক্ষিণ সস্তাপুর এলাকা সদর উপজেলা সংলগ্ন একটি গ্রাম। করোনা ভাইরাসের কারণে দক্ষিন সস্তাপুর,কুতুবাইল ও এর আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে।

 

গত কয়েকদিনে সরকারী ত্রাণ যে পরিমান এলাকায় এসেছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এলাকায় কোন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এমনকি কোন বিত্তশালীকে হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ত্রাণ দেয়ার বিষয়টি কারো চোখে পড়েনি।


দক্ষিণ সস্তাপুর এলাকার দেলোয়ার বাবুর্চি বলেন, লকডাউনের কারনে ১ মাস যাবৎ তিনি বাড়িতেই অবস্থান করছেন। সঞ্চয় যা ছিল তা দিয়ে কোন রকমে সংসার চালিয়েছেন তিনি। কিন্তু গত কয়েকদিন যাবৎ তিনি নিদারুন    দৈনদশায় রয়েছে।

 

কারো কাছ থেকে তেমন কোন সাহায্য পাননি তিনি ও তার পরিবার। অপরদিকে সরকারী ত্রাণেরও কোন হদিস পাননি তিনি ও তার আশপাশের অনেকেই। গত কয়েকদিন  যাবৎ  পরিবারের ছয় সদস্য নিয়ে তিনি অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তার। 


হতদরিদ্র লোকমান মিয়া বলেন,এই এলাকায় বসবাসকারী বেশীর ভাগ মানুষ দিন মজুর। এদের মধ্যে কেউ জুটের গোডাউনে কাজ করে,কেউ ভ্যান,কেউবা রিকশা চালায়। অপরদিকে বেশিরভাগই গার্মেন্টসকর্মী। করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই সবাই কর্মহীন হয়ে পড়েছে।

 

প্রথম কয়েকদিন ভাল কাটলেও কয়েকদিন যেতে না যেতেই কষ্টের দিন শুরু হয় তাদের। ঘরে চাল থাকলে ডাল নেই। আবার ডাল থাকলে তেল নেই।  অনেকের ঘরে কোন রকম খাদ্য সামগ্রী নেই । দক্ষিণ সস্তাপুরের মানুষের ঘরে অভাব জেনো পিছু ছাড়ছে না।


সালেহা খাতুন বলেন, তিনি  একটি জুটের গোডাউনে কাজ করতেন। করোনার কারনে জুটের গোডাউন বন্ধ হয়ে গেছে। কাজ না থাকার কারনে ঘরে খাবারও নেই। দুই দিন আগে তিনি যে ভাত রান্না করেছিলেন তাতে পানি দিয়ে অল্প অল্প করে খাচ্ছেন। ইফতারের জন্যও কোন খাবার নাই বলে তিনি জানান। 


এলাকাবাসী জানান, গত  দুই সপ্তাহ যাবৎ পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রায় লোকের ঘর এখন খাবার শুন্য। ছোট ছোট ছেলে মেয়ে নিয়ে এখন তারা না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। খোঁজ খবর নেওয়ারও কেউ  নেই। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে  তেমন কোন সাহায্য সহযোগীতা নেই বলেও জানান তারা। 


এ ব্যাপারে ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপন বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে এাণ বিতরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনা এাণ আসে কম। পর্যায়ক্রমে সবার মাঝে এাণ বিতরণ করা হবে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর