মঙ্গলবার   ১৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ৫ ১৪৩০

থানার ভেতরে মারধরে আ`লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা, পরিদর্শক ক্লোজড

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ফতুল্লা মডেল থানার ভেতরে এক ব্যবসায়ীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। 

 

রোববার দুপুরে মারধরের শিকার ব্যবসায়ী চাঁদ সিকদার সেলিম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে  ঘটনার পরপরই  রোববার সকালে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.হাসানুজ্জামানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন  এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 


 
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর উপজেলার ফতুল্লার কুতুবপুরের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মীর হোসেন মীরুর সন্ত্রাসী বাহিনী কুতুবপুর ইউনিয়নের বউবাজার এলাকায় মুরাদ হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল  ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে।

 

এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই মুরাদ বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের পর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেন এবং পরদিন শুক্রবার রাতে তাদেরকে থানায় যেতে বলেন। 


পুলিশের কথা অনুযায়ী অভিযোগকারী স্থানীয় ব্যবসায়ী মুরাদ হোসেন ও তার ছোট ভাই ব্যবসায়ী সেলিম থানা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করার সময় মীর হোসেন আলী ও শাহীনসহ আরও বেশ কয়েকজনের দেখা হয়। মীর সোহেল আলী ও তার  লোকজন সেলিমকে থানার  ভেতরে দেখেই উত্তেজিত হয়ে উঠেন এবং শার্টের কলার চেপে ধরে হামলা চালায়। 


এক পর্যায়ে মারতে মারতে থানা  থেকে রাস্তায় নিয়ে আসে। আবার  সেখান থেকে টেনে হেঁচড়ে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামান রুমে নিয়ে যায়, থানার লকাবে ঢুকিয়ে দেয়ার কথা বলেন মীর সোহেল আলী। এ সময় ওসি তদন্ত হাসানের রুমে নেওয়ার পর তিনি আমাকে উল্টো ধমকাচ্ছিলেন আর বলছিলেন থানায় আপনার কাজ কি?  কেন এসেছেন? এভাবে পরিদর্শক তদন্ত মীর সোহেল আলীর পক্ষ নিয়ে সেলিমকে শাসান। 


এ বিষয়ে চাঁদ সিকদার সেলিম বলেন, এর আগে মীর হোসেন মীরুর বিরুদ্ধে আমার বড় ভাই মুরাদ হোসেন চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছিলো। এ বিষয়ে কথা বলতেই শুক্রবার থানায় গেলে আমাকে পেয়ে মীর সোহেল আলী ও তার লোকজন আমাকে থানার ভেতরে এলোপাথাড়ি মারধর ও হামলা চালায়।

 

তিনি বলেন, এভাবে থানার  ভেতরই যদি আমাদের ওপর হামলা করে তাহলে বাইরে আমাদের নিরাপত্তা কতটুকু এবার বুঝে নেন। এদিকে এই ঘটনা গণমাধ্যমে আসলে প্রশাসনের তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কুতুবুপুরে এলাকাবাসী অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।

 

এই ঘটনায় নির্যাতনের শিকার ব্যবসায়ী সেলিম বাদী হয়ে রোববার দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানায় মীর সোহেল ও তার সহযোগী শাহীন মিয়ার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনকে আসামী করে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা মীর  সোহেল আলীর সাথে করা হলে তিনি জানান, মারধর নয়, বাগবিতন্ডার ঘটনা ঘটেছে।

 

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন  জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদেও গ্রেফতারের চেষ্টা চরছে। পুলিশের পরিদর্শক হাসানুজ্জামানের প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি এতটুকু বলতে পারি হাসানুজ্জামানকে প্রশাসনিক কারণে থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কিছু বলার আমাদের অনুমতি নেই।

 
এ ব্যাপারে জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জানান, আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়।
 

এই বিভাগের আরো খবর