বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ডিসি-এসপি’র মাঝে রাজাকারপুত্র কাজল

প্রকাশিত: ১১ জানুয়ারি ২০২০  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট : শুক্রবার জেলা প্রশাসকের অফিস চত্বরে আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিসি ও এসপির মাঝে রাজাকারপুত্র খালেদ হায়দার খান কাজলের অবস্থান ও বক্তব্য প্রদানকে কেন্দ্র করে শহরে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

 

এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা সহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের প্রতি ধিক্কার জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা যদি রাষ্ট্রীয় বড় বড় পদে না থাকে তবে দেশ আবার অন্য জায়গায় চলে যাবে, তা টেরও পাবেন না।

 

রাজাকারের সন্তানরা এসব পদে ঢুকে সব নষ্ট করে দেবে। এটি কিন্তু আমি মনে মনে অনুভব করি। সেই জায়গাটি কিন্তু পাবেন না। জেলা প্রশাসক আরও বলেন, নতুন প্রজন্মকে আমাদের তৈরি করতে হবে। ঘুষখোর, সুদখোর, রাজাকারের সন্তানরা ভালো লেখাপড়া করে।

 

তাই মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য আমি একটি ফান্ড তৈরি করতে চাই, যা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা ভালোভাবে লেখাপড়া করবে এবং সব ধরণের পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবে। এই ফান্ডের মূল টাকায় কেউ হাত দিতে পারবেন না। সকল মুক্তিযোদ্ধা একশ’ টাকা করে জমা দেবেন।

 

সেটির লভ্যাংশ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার নাতি যারা আগামীতে বিসিএস পরীক্ষা দেবে তাদের স্পেশাল কেয়ার নেয়া হবে। উপজেলা পর্যায়ে কুইজ প্রতিযোগিতা ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করবো যেখানে মুক্তিযোদ্ধার নাতিরা অংশগ্রহণ করলেই টাকা পাবে।

 


এ অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী, র‌্যব-১১ অধিনায়ক ইমরান উল্লাহ সরকার, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আঃ হাই, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তবে, এ অনুষ্ঠানে কাজল কোন বক্তব্য প্রদান করেননি।

 


এদিকে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর মতো রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে রাজাকারপুত্রের অবস্থানের খবর শুনে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে তাৎক্ষণিক টেলিফোন করে এ ব্যাপারে কৈফিয়ত দাবী করেন। সন্ধ্যায় রাসেল পার্কের অনুষ্ঠানে এ ঘটনার জন্য তিনি ডিসি, এসপি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে ধিক্কার জানান।

 

এ ব্যাপারে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কাজল কিভাবে একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে থাকে তা আমার বোধগম্য নয়। তাকে কিভাবে দাওয়াত করা হলো তা ডিসি সাহেবের কাছেই সকলের জিজ্ঞাস্য হওয়া উচিত। যেখানে সরকার বলছে, রাজাকারের বংশধরদের পুনর্বাসন করা যাবে না, সেখানে সে কিভাবে দাওয়াত পায়?


উল্লেখ্য, খালেদ হায়দার খান কাজলের পিতা মরহুম গোলাম রাব্বানী খান শহরে রাজাকার হিসাবে খ্যাত। মুনতাসির মামুন লিখিত ‘শান্তিকমিটি ১৯৭১’ বইয়ে চাষাঢ়া ইউনিয়ন শান্তিকমিটির একজন সদস্য হিসেবে তার নামের উল্লেখ রয়েছে।

 

অভিযোগ রয়েছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর গোলাম রাব্বানী খান ও তার ছোট ভাই চেঙ্গিস খান স্থানীয় একটি মিষ্টির দোকান লুট করে পথচারীদের মাঝে বিতরন করেছিল।
 

 

এই বিভাগের আরো খবর