শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

জেলা আ`লীগকে বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করছেন হাই-বাদল : আরজু ভূঁইয়া

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট : জেলা আওয়ামী লীগকে সভাপতি আব্দুল হাই ও সেক্রেটারি আবু হাসনাত শহীদ মো.বাদল তারা দুইজন বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলছেন। এবং কোন একটা কারণে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিটি ভাঙার একটি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন  জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আরজু রহমান ভূঁইয়া। 

 

বিতর্কিত সোনারগাঁ আহবায়ক কমিটির ডাকে সভা করতে গিয়ে শুক্রবার সোনারগাঁয়ে কয়েক ঘন্টা সভাপতি ও সেক্রেটারি অবরুদ্ধ থাকার ঘটনার প্রেক্ষিতে শনিবার এক বিবৃতিতে এই মন্তব্য করেন আরজু ভূঁইয়া।   

 

আরজু ভূঁইয়া আরো উল্লেখ করেন, সেই ষড়যন্ত্রে পা দিয়েছেন আমাদের জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতা। উনারা নিজেরাই জানেননা জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভাঙার ষড়যন্ত্র চলছে এবং তারা ব্যবহৃত হচ্ছেন। নয়তো তারা স্বেচ্ছায় নিজেরাই তাতে পা দিয়েছেন বলে আমার মনে হয়।

 

অতএব সোনারগাঁয়ের বিতর্কিত আহবায়ক কমিটি নিয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা জেলা আওয়ামী লীগের ইমেজ নষ্ট করছে। এতোদিন জেলা আওয়ামী লীগের যে সমুন্নত ইমেজ ছিলো তারা দুইজন সেটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলেছেন। 

 

তিনি বলেন, সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটি নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী এই আহবায়ক কমিটিকে অবৈধ বলে মন্তব্য করে মুঠোফোনে জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারির সাথে কথা বলেছেন। দলের সেক্রেটারি এই আহবায়ক কমিটিকে এখতিয়ার বহির্ভূত কমিটিও বলেছেন। 

 

আরজু রহমান ভূইয়া বলেন, আমাদের সম্মানিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি, অত্যন্ত সাবর্জনীন মুরুব্বি আব্দুল হাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে সভাপতি করেছেন। তিনি দীর্ঘদিন পর আমেরিকা থেকে দেশে আসলেন। আসার পর এই আহবায়ক কমিটি নিয়ে কারও সাথে কোন আলাপ আলোচনায় বসলেননা। ইতিমধ্যে শামীম ওসমান এমপি সাহেবের একটি সভা হয়ে গেল। 

 

সে সভাটিতে জেলার সাধারণ সম্পাদক গেলেন, কিন্তু সভাপতি গেলেননা। কিন্তু হঠাৎ করে তারা দুজনেই সোনারগাঁ আহবায়ক কমিটির কাজে সোনারগাঁ গেলেন। কেন্দ্রের কোন লিখিত নির্দেশনা ছাড়া একটি অবৈধ কমিটির ডাকা সমাবেশে উনারা কি করে গেলেন তা উনারাই জানেন। যেহুতু বিষয়টির এখনো কোন সুরাহা হয় নাই সেহুতু সম্মানিত সভাপতির সোনারগাঁয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক হয় নাই। তিনি আমাদের জেলা আওয়ামী লীগের একজন মুরুব্বি নেতা। 

 

আবু হাসনাত শহীদ মো.বাদল সম্পর্কে বক্তব্য দিতে চাইনা। কারণ উনি জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি হয়েছেন উনি এটাকে কিভাবে ধরে রাখবেন, কিভাবে তাঁর নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করবেন এটা উনার বিষয়। উনার কর্মকান্ডে যে পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে এতে করে উনি সাধারণ সম্পাদক পদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিচ্ছেননা। উনি যুবলীগ থেকে আওয়ামী লীগ নেতা হয়েছেন। তাঁর উচিত ছিলো সবার সাথে আলোচনা করে মিলেমিশে সিদ্ধান্ত নেয়া। 


আরজু রহমান ভূইয়া আরো বলেন, আমি আশা করি তারা দায়িত্বশীলতা ও সাংগঠনিকতার পরিচয় দিবেন। আমি আশা করি কেন্দ্রীয় নির্দেশ এবং লিখিত নির্দেশের মাধ্যমে সোনারগাঁয়ের বিষয়টা সুরাহা করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। 

 

প্রসঙ্গত, শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর  সোনারগাঁ জামপুর ইউনিয়নে একটি সমাবেশ করতে যান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সেক্রেটারি ভিপি বাদল। স্থানীয় যুবলীগ নেতারা একই স্থানে পাল্টা কর্মসূচি দেন। উত্তেজনার মুখে গাড়ি বহরে হামলা চালায় যুবলীগ নেতারা। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। 

 

পরে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা.আবু জাফর চৌধুরী বীরুর বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে ছোট আকারের সভা করেন জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা রাত পর্যন্ত জামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তায় পাহারা বসিয়ে রাখে। 

 

এরআগে গত ১৬ জুলাই জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক কমিটির কথা জানান জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এমএ রাসেল। বিতর্কিত এই কমিটির বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠে কমিটির বেশিরভাগ নেতা। পরে অধিকাংশ নেতার স্বাক্ষরিত এক অভিযোগপত্র জমা দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে। 

 

তিনি এই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রেখে পূর্বের কমিটির কার্যক্রম বলবৎ থাকবে বলে নির্দেশনা দেন। বিতর্কিত আহবায়ক কমিটি নিয়ে জেলা ও সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। এরমধ্যেই আহবায়ক কমিটি নিয়ে সোনারগাঁয়ে সভা করতে গেলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সেক্রেটারিকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটে।    
 

এই বিভাগের আরো খবর