মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৩ ১৪৩১

জাতীয় ত্বকী চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা ’১৯ এর পুরস্কার প্রদান 

প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০১৯  

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি (যুগের চিন্তা ২৪) : তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীর ২৪ তম জন্মবার্ষিকী  উপলক্ষে “জাতীয় ত্বকী চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা’১৯” এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক, নিহত ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি’র সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, শিক্ষাবিদ ডা. হায়াৎ মামুদ, লেখক গবেষক, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব কবি হালিম আজাদ ও জাতীয় ত্বকী চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা ’১৯ এর আহ্বায়ক জাহিদুল হক দীপু 

অনুষ্ঠানে ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ত্বকী অশেষ সম্বাবনার প্রতীক। আমরা ত্বকী হত্যার বিচার দাবি করছি শুধু মাত্র ত্বকীর পরিবার বা তার স্বজনদের জন্য নয়, এর সাথে রাষ্ট্রের সাফল্য ব্যর্থতার প্রশ্ন জড়িত। আমরা আমাদের দেশকে ব্যর্থ হতে দিতে পারি না। বিচার না হওয়া আক্ষেপের কথা। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা এ বিচারের দাবি তুলতেই থাকবো। 

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা জানি কেন এ হত্যার বিচার হচ্ছে না। কোন কোন বিচার মাঝে মধ্যে হলেও এখানে বাঁধা রয়েছে। একে আটকে রাখা হয়েছে। যে রাষ্ট্রে আমরা বসবাস করছি তা কতটা অকার্যকর তার প্রতীক ও উদাহরণ হচ্ছে ত্বকী। এ রাষ্ট্রকে ভেতর থেকে বদলানো নাগেলে ত্বকীদের নিরাপত্তা ও বিকাশ সম্ভব নয়। এ জন্য কিশোর আন্দোলন দরকার যে আন্দোলন হবে রাষ্ট্রকে বদলে দেয়ার আন্দোলন। 

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্য ও শান্তি ধ্বংস করার জন্য ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে। ত্বকীকে হত্যা করার পূর্বে ও পরে বহু হত্যাকা- নারায়ণগঞ্জে সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু ঘাতকরা কখনোই চিহ্নিত হয় নাই; হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত হয় নাই। কিন্তু ত্বকী হত্যার পরে হত্যাকারীরা চিহ্নিত হয়েছে সারা দেশের মানুষ হত্যাকারীদের চিনেছে। আমরা আশাবাদী ত্বকী হত্যার বিচার হবেই। এ বিচার দেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

রফিউর রাব্বি বলেন, আমাদের রাষ্ট্র স্বাধীন হয়েছে কিন্তু দেশের মানুষ স্বাধীন হয়নি। ১৯৪৭ বা একাত্তর কখনোই হয়নি। বিচার-ব্যবস্থা, গণমাধ্যম, রাষ্ট্রীয় কোন প্রতিষ্ঠানই স্বাধীন হয়নি। সব কিছুই পরাধীন, সরকার নিয়ন্ত্রিত। এখন আইনের শাসন হচ্ছে সরকারের ইচ্ছের প্রতিফলন। যেভাবে সরকার চায় সেভাবেই তা হয়। ছয় মাসে নুসরাত হত্যার বিচার নি¤œ আদালতে শেষ হয় আর সাত বছরে ত্বকী হত্যা বিচার শুরুই হয়না। রাজন-রাকিবে বিচার সাত মাসে শেষ হয় আবার আট বছরেও সাগর-রুনি হত্যার অভিযোগপত্র দেয়া হয় না, তনু হত্যা বিচার শুরু হয়না। 

পরে সারাদেশের বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন উপস্থিত অতিথিবৃন্দ। এবারে ত্বকী পদক প্রাপ্ত ৬ জন হচ্ছেন চিত্রাঙ্কনে শিশু থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত ক-বিভাগে নুহান আব্দুল্লাহ (ঢাকা), ৪র্থ থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত খ-বিভাগে আল মাউন (ঢাকা), ৭ম থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত গ-বিভাগে ঐশ্বর্য সুজানা (নারায়ণগঞ্জ)। রচনা প্রতিযোগিতায় ৫ম থেকে ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত ক-বিভাগে ‘যেমন স্কুল আমার পছন্দ’ বিষয়ে মীর ফারদীন রহমান লাবিব (ঢাকা), ৮ম থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত খ-বিভাগে ‘প্রিয় খেলা, মাঠে নাকি মুঠোফোনে’ বিষয়ে নাজাহা ইজদিহার আমাতুল্লাহ (ঢাকা), কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গ-বিভাগে ‘ত্বকীকে নিয়ে রচনা’ বিষয়ে দিল্লুর রহমান (কুড়িগ্রাম)।  

বিচারকার্য পরিচালনা করেছেন, চিত্রাঙ্কনে রফিকুন নবী, জাহিদ মুস্তাফা ও অশোক কর্মকার; রচনায় ড. হায়াৎ মামুদ, ড. সফিউদ্দিন আহমদ ও ফিরোজ আহমেদ।
 
 

এই বিভাগের আরো খবর