শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

চাষাঢ়া আ’লীগ অফিসে বোমা হামলার মামলায় ২ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন

প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : চাষাঢ়া আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলার মামলায় এডভোকেট বিদ্যু কুমার সাহা ও রঞ্জিত কুমার দাস লিটনের স্বাক্ষ্য গ্রহন সম্পন্ন হয়েছে। 

অতিরিক্ত  জেলা ও দায়রা জজ শাহ্ মোহাম্মদ জাকির হোসেন এর আদালতে সোমবার (১৭ জুন) সকালে এ স্বাক্ষ্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। স্বাক্ষ্য গ্রহনকালে মামলার আসামী শাহাদাত উল্লা ওরফে জুয়েল ও শওকত হাসেম শকু আদালতে উপস্থিত
ছিলেন। 

চাষাঢ়া আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে আদালতে উপস্থিত ছিলেন,অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট রহিম। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, এডভোকেট মিজান, এডভোকেট ফাহিম, এডভোকেট নিখিল চন্দ্র দাস প্রমূখ। 

এডভোকেট রহিম জানান, চাষাঢ়া আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলার ঘটনায় মামলাটি দ্রুত শেষ করা লক্ষ্যে আদালত কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করি অল্প কিছু দিনের মধ্যে মামলাটির স্বাক্ষ্য গ্রহন সম্পূর্ন করতে পারবো। 

উল্লেখ্যম এ মামলায় শাহাদাত উল্লা ওরফে জুয়েল কারাভোগে থাকলেও আসামী শওকত হাসেম শকু দীর্ঘ দিন ধরে জামিন রয়েছেন। 

প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ১৬ জুন শহরের চাষাঢ়াস্থ আওয়ামী লীগ অফিসে দেশের ভয়াবহ নৃশংস বোমা হামলায় মারা যান ২০ জন সেদিন আহত হয়েছিলেন অর্ধ শতাধিক, অনেকেই বরণ করে নিয়েছেন পঙ্গুত্ব, কেঁদে উঠেছিল নারায়ণগঞ্জবাসী। 

ঘটনাস্থলে ১১ জন ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু ঘটে ৯ জনের। সব মিলিয়ে মোট ২০ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ১৯ জনের পরিচয় জানা গেছে। পরিচয় মেলেনি ১ মহিলার।

নিহত হয়েছিলেন শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল হাসান বাপ্পী, সহোদর সরকারী তোলারাম কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের জিএস আকতার হোসেন ও সঙ্গীত শিল্পী মোশাররফ হোসেন মশু, সঙ্গীত শিল্পী নজরুল ইসলাম বাচ্চু, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভাসানী, নারায়ণগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এ বি এম নজরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সাইদুর রহমান সবুজ মোল্লা, মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রী পলি বেগম, ছাত্রলীগ কর্মী স্বপন দাস, কবি শওকত হোসেন মোক্তার, পান সিগারেট বিক্রেতা হালিমা বেগম, সিদ্ধিরগঞ্জ ওয়ার্ড মেম্বার রাজিয়া বেগম, যুবলীগ কর্মী নিধু রাম বিশ্বাস, আব্দুস সাত্তার, আবু হানিফ, এনায়েতউল্লাহ স্বপন, আব্দুল আলীম, শুক্কুর আলী, স্বপন রায় ও অজ্ঞাত এক মহিলা। 

হামলায় শামীম ওসমানসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। তার ব্যক্তিগত সচিব চন্দন শীল, যুবলীগকর্মী রতন দাস দুই পা হারিয়ে চিরতরে বরণ করেছেন পঙ্গুত্ব। পর দিন খোকন সাহা বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় (একটি বিস্ফোরক অন্যটি হত্যা) অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে প্রধান করে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের মোট ২৭ জনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেন।  

ঘটনার দীর্ঘ ২২ মাস পর ২০০৩ সালের এপ্রিল মাসে বোমা ট্রাজেডি মামলা দুটির ফাইনাল রিপোর্টে বলা হয়, ‘উল্লিখিত ২৭ জনের কেউই চাষাড়া আওয়ামী লীগ অফিসে ১৬ জুন ২০০১ সালের বোমা হামলায় জড়িত নন। যদি ভবিষ্যতে অত্র মামলার তথ্য সংবলিত ক্লুপাওয়া যায়, তবে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার ব্যবস্থা করতে হবে। 

দীর্ঘ প্রায় ছয় বছর মামলাটি হিমাগারে থাকার পর সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ২ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে নিষ্পত্তি করার জন্য রাষ্ট্র পক্ষকে আদেশ দেন। 
২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঘটনায় নিহত চা দোকানি হালিমা বেগমের ছেলে আবুল কালাম বাদী হয়ে শামীম ওসমান, তার ভাই নাসিম ওসমান, সেলিম ওসমানসহ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও এর সহযোগী সংগঠনের ৫৮ নেতাকর্মীকে আসামি করে একটি মামলা করেন। 
 

এই বিভাগের আরো খবর