বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

গৃহবধূ তানিয়ার মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল, স্বজনদের দাবী হত্যা 

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : সিদ্ধিরগঞ্জে তানিয়া আক্তার (২৪) নামে কলেজ পড়–য়া এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে ধু¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। তার মৃত্যু হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে রয়েছে স্বজনদের বিভিন্ন মতামত। এদিকে এ ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী ইকবাল হোসেন ইমন পলাতক রয়েছে।  
 
নিহত তানিয়া চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ডাইয়েখোলা গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে এবং তার পলাতক স্বামী ইকবাল একই উপজেলার দশানী গ্রামের মুকবুল ছৈয়ালের ছেলে। ২০১৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর তারা সিদ্ধিরগঞ্জের পূর্ব বাগমাড়া এলাকায় মামা ভাগিনার গলিতে মৃত আবু তাহের মিয়ার ভাড়া বাসার ৩ লায় বসবাস শুরু করত। 
 
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রতারক ইকবাল হোসেন ইমন এর আগে কয়েকটি বিয়ে করলেও বিষয়টি গোপন করে তানিয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। তানিয়া ডিগ্রী পাস কোর্সের ২য় বর্ষের ছাত্রী হলেও ইকবালের ছলনা বুঝতে না পেরে তার প্রতারণার ফাঁদে পা বাড়ায় এবং বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। 

১০ নভেম্বর বিকেলে ঘটনার দিন তানিয়া তার মাকে ফোনে করে বাড়ীতে যাবার খরচ বাবদ ৫ শত টাকা বিকাশে পাঠাতে বলে এবং ইকবাল তার শাশুড়ীকে ফোনে জানায় তানিয়া এখন যেতে পারবেনা, তাকে বাড়ীতে যেতে দেয়া হবেনা। ঘটনার দিনের আগ থেকেই উভয়ের মধ্যে দাম্পত্য কলহ লেগে ছিলো। 
 
এদিকে ১৩ নভেম্বর বুধবার দুপুরে উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে ভাড়া বাসার মালিকের কন্যা জান্নাত মিতালী জানান, ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় দোকানে সদাইয়ের জন্য ফোন দেন তানিয়া এবং পরক্ষণে রাত ৮টা থেকে ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দোকানদার তানিয়ার ফোনে কয়েকবার কল দিলেও তানিয়া ফোন রিসিভ না করায়, দোকানদার আমাদের ফোনে কল দিয়ে বিষয়টি জানান যে, তানিয়া অনেকক্ষণ যাবৎ ফোন রিসিভ করছেনা। 

তখন আমরা দরজায় টোকা মেরে এবং অনেকবার ডেকেও তার সাড়া না পেয়ে আমরা জানালা দিয়ে দেখতে পাই তানিয়া খাটে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। তখন বিষয়টি সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে দরজা ভেঙ্গে রুমে ঢুকে তানিয়াকে মৃত অবস্থায় পায় এবং লাশ থানায় নিয়ে যায়। 
 
নিহতের মামা মোহাম্মদ আলী জানান, ঘটনা দিন বিকেলে জামাই ইকবাল তানিয়ার মার সাথে খারাপ ব্যবহার করে এবং প্রায় সময়ই সে আমার ভাগিনী তানিয়াকে গালমন্দ ও মারধর করতো। ১০ নভেম্বর ঘটনা ঘটলেও আমরা ১১ নভেম্বর সকাল ১০ টা ৩০ মিনিটে বিষয়টি জানতে পারি এবং থানায় গিয়ে ভাগ্নীর লাশ দেখতে পাই। 

সেইদিনেই আমরা লাশ মতলব উত্তরে নিয়ে যাই এবং রাতেই জানাযা শেষে নিকটস্থ কবরস্থানে দাফন করি। 
কিন্তু ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ৯টায় তানিয়ার খালাতো ভাই নাজমুলকে জামাই ইকবাল ফোন করে তানিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি জানায়, যা আমরা পরবর্তীতে জানতে পারি এবং ঘটনার দিন ইকবাল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের সাথেও তানিয়ার মৃত্যুর বিষয়ে ফোনে কয়েকবার কথা বলেছেন।

 ইকবাল পরিকল্পিতভাবে তার আগের স্ত্রী কোহিনুরকে সাথে নিয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের নিকট জোড়ালো দাবী জানাচ্ছি। 
 
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘড়ের দরজা ভেঙ্গে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে প্রেরণ করি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত পরিষ্কার ভাবে কিছুই বলা যাবে না। এ ঘটনায় নিহতের মামা মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুজনিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। 
 

এই বিভাগের আরো খবর