শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

গাইড নিষিদ্ধ, কোচিং বৈধ : নারায়ণগঞ্জে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট : সারা দেশে কোচিং সেন্টারের বৈধতা দিয়ে শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এমন সংবাদে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে নারায়ণগঞ্জের অভিভাবক মহল ও শিক্ষা অনুরাগী মহল থেকে। 

 

তবে, সুশীল সমাজ এই খসড়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা চাইছেন, এই আইন দ্রুত বাস্তবায়ন। নয়তো, গাইড বইয়ের কারণে যেভাবে মেধাশূন্য প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে, এর ভবিষ্যত কোনোভাবেই ভালো হবে না। শিক্ষা আইনের যে খসড়া চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এখানে কোচিং খোলা রাখার ব্যাপারে যে বৈধতা দিয়েছে সেটি দিনের বেলাতে নয়; সন্ধ্যার পর। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকেরা শিক্ষকতাও করতে পারবেন। তবে, নিজ প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে পড়ানো নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে। 

 

এছাড়াও এই আইনে সব থেকে আলোচিত ইস্যু নোট ও গাইড বই সম্পূর্ণভাবেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে বলা হয়েছে কোনো ধরনের নোট বা গাইড বই মুদ্রণ, বাঁধাই, প্রকাশ বা বাজারজাত করা যাবে না। কেউ যদি তা করেন, তাহলে তাকে সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড ভোগ করতে হবে। এমনকি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কোনো শিক্ষক যদি শিক্ষার্থীদের নোট ও গাইড কিনতে বা পাঠে বাধ্য করেন বা উৎসাহ দেন, তাহলে অসদাচরণের জন্য প্রশাসনিক শাস্তি ভোগ করতে হবে তাকে।

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শিক্ষা আইনের এই খসড়া চূড়ান্ত। শিগগিরই খসড়াটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উত্থাপন করা হবে। তবে শেষ মুহূর্তে খসড়ায় সামান্য এদিক ওদিক হতে পারে। 

 

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান এই খসড়া চূড়ান্তটির প্রতি সমর্থন জানিয়ে এর বাস্তাবায়ন চেয়ে বলেন, সামন্ত যুগের যে সাংস্কৃতি তার থেকে আমরা বের হতে পারিনি। এখানে আধা সামন্ত, আধা পুঁজিবাদ অবস্থায় আমরা এখনও আছি। ফলে আধুনিক চিন্তা চেতনাও কিন্তু আমাদের মাঝে সেভাবে আসে নাই। আমরা বিশ্বাস করি যা তার কার্যকরিতা নাই। ফলে আমাদের মধ্যে দূরত্ব রয়ে যায়। এর থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সকলকেই কাজ করতে হবে। তা না হলে আমরা কিন্তু চেতনার ক্ষেত্রে, চিন্তার ক্ষেত্রে আগাবো না।

 

শিক্ষা অনুরাগী জিএম ফারুক শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্তের সাথে কিছুটা দ্বিমত পোষণ করে বলেন, নোট ও গাইড বই নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে এটা অত্যন্ত সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত। তবে, কোচিংয়ের বৈধতার ক্ষেত্রে কিছুটা দ্বিমত রয়েছে। কেননা, সন্ধ্যার পর যদি কোচিং চালু থাকে তাহলে একজন শিক্ষার্থী ক্লাসের পড়া কখন পড়বে, আর কোচিংটা কখন করবে? কেননা, আজকাল অভিভাবকেরা প্রায় সবাই কোচিং নির্ভর। ফলে কোচিংয়ের বিষয়টা নিয়ে আরেকটু ভাবা দরকার বলে মনে করি।

 

এদিকে নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীতে যারা কোচিং সেন্টার পরিচালনা করছেন কিংবা শিক্ষকতার পেশার সাথে জড়িত রয়েছেন, তারাও এই শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্তে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তারা বলছেন, আইন পাস করার আগে এ নিয়ে আরও পর্যালোচনা করা দরকার। তৃণমূল থেকে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করে তারপর করা গেলে ভালো হয়।

এই বিভাগের আরো খবর