মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

খুঁটিতে খুঁটিতে ‘তারের জঞ্জাল’ 

প্রকাশিত: ১৬ জানুয়ারি ২০২০  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নগরীর বিভিন্ন বিদ্যুতের খুঁটিতে অবৈধ তারের জটলার জন্য মূল বিদ্যুতের তার চেনাই কঠিন হয়ে পড়েছে। শহরের রাস্তার উপরে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে রাখা এসব তারের জঞ্জাল নগরীর সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি বহন করছে বড় ধরণের ঝুঁকি। 


এছাড়া এতে নিরাপত্তাহীনতায় থেকে যাচ্ছে সাধারণ মানুষ এবং পথচারীরা। মূলত নিয়ম অমান্য করে বিদ্যুতের খুঁটিতে ডিস-লাইন, ইন্টারনেট এবং টেলিফোনের তারে তারে সংযোগই এর অন্যতম প্রধান কারণ।এদিকে এই সমস্যা সমাধানে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ সংযোগের পরিকল্পনা চলছে বলে জানিয়ে নাসিক কর্তৃপক্ষ। 


সরেজমিনে ঘুরে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়ক, কালীর বাজার, উকিলপাড়া এবং নয়ামাটিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটিতে মাকড়সার জালের মতো পেঁচিয়ে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ এই তার চোখে পড়ে। অপরিকল্পিত ভাবে সংযোগ দেয়া তারগুলোতে হঠাৎ হঠাৎ’ই শর্ট সার্কিট হয় বলে একাধিক পথচারী ও  আশেপাশের বাড়ির বাসিন্দা ও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো সাথে কথা বলে জানা যায়।


মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর উকিলপাড়ার সামনে মোহাম্মদ হৃদয় নামে ইন্টারনেট সংযোগকারী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারী বলেন, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে এত এত তারের কারণে মাঝেমধ্যে আমাদেরই কাজ করতে কষ্ট হয়ে যায়। কারণ বোঝাই যায়না যে কোনটা কিসের তার। যার যেই ভাবে ভালো লেগেছে , সে সেই ভাবেই তার লাগিয়ে রেখেছে। 


ফলে দেখা যায় প্রায় সময়তেই হালকা শর্ট সার্কিটেই বিভিন্ন খুঁটিতে আগুন লেগে যায়। নয়ামাটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যবসায়ীক এলাকা। অন্যান্য জায়গার চেয়ে এই এলাকায় তারের জঞ্জাল একটু বেশি এবং ঝুঁকিপূর্ণ। বাদশা মিয়া নামে এক হোসিয়ারী ব্যবসায়ী এ বিষয়ে বলেন, মাঝেমধ্যে তো আমরা এই নয়ামাটির অলিগলি থেকে উপর দিকে তাকিয়ে আকাশ দেখতে পাইনা! 


কারণ মাথার উপর তার আর তার। প্রায় সময় দেখা যায় বিভিন্ন খুঁটিতে আগুন লেগে যায়। যদিও এই আগুন বেশি বড় হয় না। কিন্তু একটা ভয় থেকে যায়, যদি আগুন বড় হয় তাহলে কোটি কোটি টাকার মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।


অন্যদিকে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে থাকা ঝুঁকিপূূর্ণ তারের জঞ্জাল বিশেষ পদ্ধতিতে কমিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আব্দুল আজিজ নামে একজন বলেন, আমাদের এই শহরের রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় স্বাভাবিক ভাবেই মাথায় একটু ভয় কাজ করে। কারণ মনে হয়, এই বুঝি উপর থেকে শরীরের মধ্যে কারেন্টের তার ছিঁড়ে পড়লো। আর পড়লে মৃত্যু অবধারিত।এক কথায় নিরাপত্তাহীনতায় থাকি আমরা। 


তাই বিশেষ কোন পদ্ধতিতে যদি এই তারের জঞ্জাল কমিয়ে আনা যায়, তাহলেই ভালো হবে। এ সমস্যা সমাধানে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তারের সংযোগ ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা চলছে জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের পরিকল্পনাবিদ মইনুল ইসলাম জানান, আমরা এই সমস্যা সমাধানের জন্য সিলেটের মত  ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক সংযোগ ব্যবস্থার বিষয়ে পরিকল্পনা রয়েছে। 


তবে আমরা শুধু বিদ্যুৎ লাইন নয় গ্যাস,পানি,বিদ্যুৎ এ তিনটি লাইন একসাথে ভূগর্ভস্থ  করার পরিকল্পনা করছি। শীঘ্রই আমাদের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু হবে। আশাকরি তখন নগরী তারের জঞ্জাল থেকে মুক্তি পাবে।
 

এই বিভাগের আরো খবর