বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কুকুর মারা গেলেও ওসমান পরিবারকে দায়ী করা হয় : সজল

প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : নারায়ণগঞ্জে একটা কুকুর মারা গেলেও ওসমান পরিবারকে দায়ী করা হয় বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ হোসিয়ারী সমিতির সভাপতি নাজমুল আলম সজল। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে চঞ্চল, ত্বকী, আরমান হত্যাকান্ড কিংবা সাকী নিখোঁজ সমস্ত অভিযোগের আঙুলএকই (ওসমান পরিবারের) দিকে। তিনি প্রশ্ন রাখেন যত হত্যাকান্ড হয় তাকি শুধু ওসমান পরিবারের লোকেরাই করে।

নগরীর দেওভোগের এলএন রোড এলাকা থেকে নিখোঁজ শিশু সাদমান সাকি অপহরণের সাথে তিনি জড়িত নন দাবি করে সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সজল এসব কথা বলেন। 

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সজল দাবি করে বলেন, নারায়ণগঞ্জে যেকোন হত্যাকান্ড ঘটলে নির্দিষ্ট কয়েকজন লোক ব্যানার নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে যায়। এইকয়েকজনের কথার মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ পরিচালিত হয় কিনা সেই প্রশ্ন রাখেন সজল। তিনি বলেন, এতে সত্যিকার অপরাধীরা পার পেয়ে যাবে, ভালো লোক রাজনীতিতে আসবেনা। 

সজল বলেন, অপহৃত শিশুটির পিতা সম্পর্কে তাঁর চাচাতো ভাই সৈয়দ ওমর ফারুক এপন পেছনের কারো ইন্ধনে ঘটনার এতোদিন পর তাঁকে (সজল) ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন। 

নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্টিজের পরিচালক সজল বলেন, গত ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর সাদমান সাকি নিখোঁজের পর তাঁর বাবা এপন সদর মডেল থানায় মামলা দায়েরের পর উপপরিদর্শক ও মো.শামীম হোসেন তদন্ত করেন। পরবর্তীতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কর্মকর্তা মো.আশরাফুল আলমও তদন্ত করেন। পিবিআই জিল্লুর রহমান, সোহেল আহম্মেদ অররাও ও আব্দুর রহমানকে গ্রেফতার করে। মামলার কোথাও তাঁর (সজল) সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। এমনকি গ্রেফতারকৃত আসামীরাও তাঁর নাম উল্লেখ করেননি। 

সজল দাবি করে বলেন,  চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের চারমাস পর আমার নাম জুড়ে দিয়ে অপহৃত সাকির বাবা মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে এপন অভিযোগ করে দাবি করে, ২০১৬ সালের নাসিক নির্বাচন থেকে সরে দাড়াঁনোর জন্য আমি (সজল) তাকে হুমকি প্রদান করেছি। এবং নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ানোয় আমি (সজল) সাদমান সাকিকে অপহরণ করেছি। আমি এপনের এসব অবান্তর অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে ইতিমধ্যে সদর থানায় একটি অভিযোগদায়ের করেছি। সজল দাবি করেন, সাকির পিতা এপনের সাথে তাঁর কোন শত্রুতা নেই। সাকির অপহরণের সাথে যদি তাকে জড়িত সন্দেহ করা হতো তবে মামলার প্রথমেই আমার নাম অন্তর্ভূক্ত করার কথা ছিলো। কিন্তু সেটি তো হয়ই-নি উল্টো মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার পর আমার নাম জড়ানো হচ্ছে।

সজল বলেন, আমি এক নেতার আদর্শে বিশ্বাস করতে পারি। আমার রাজনীতিতে কোন উগ্রবাদ নেই। রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য একটি মহল অসৎ উদ্দেশ্যে তথ্য-প্রমাণ ছাড়া আমার বিরুদ্ধে এধরণের বক্তব্য দিয়ে উস্কে দিচ্ছে। এপনকে কেউ উল্টোপাল্টা শিখিয়ে দিচ্ছে আর সেই তাই বলছে বলে দাবি সজলের। 

২০১৪ সালে এপন আপনার (সজল) নামে কেন অভিযোগ করেছিলেন এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। সজল দাবি করেন, সাকির বাবা এপনের সাথে তাঁর রাজনৈতিক কোন দ্বন্দ্ব নেই। তাঁর পরিবারের সদস্যরা সাকিকে অপহরণের সাথে জড়িত থাকতে পারে বলে তিনি সংবাদসম্মেলনে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর দুপুরে দেওভোগ এলাকা থেকে নিখোঁজ হন সাবেক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ ওমর ফারুক এপনের ছেলে সাদমান সাকি। ঘটনার এতো দিন পরও সাকিকে উদ্ধার করতে সমর্থ্য হননি প্রশাসন। সম্প্রতি নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ জেলার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সুশীল সমাজের নাগরিকরা সাদমান সাকিকে উদ্ধারের ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন । 
 

এই বিভাগের আরো খবর