শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

কাম না করলে খামু কী ?

প্রকাশিত: ৮ এপ্রিল ২০২০  

বিশেষ প্রতিনিধি : ঘরে একবেলা খাবারের চাল নাই। জমানো টাকা নাই। যাদের টাকা আছে, তারা চাল, ডাইল কিইন্যা ঘরে আছে। আমার নাই। করোনায় মরমু কবে এর আগে তো খিদায় মরমু। তাই পেটের জ্বালায় রিকশা লইয়া রাস্তায় নামছি। কিন্তু মহল্লার বাইরে যাইতে পারিনা। সকালের দিকে দেওভোগ পর্যন্ত গেছিলাম। পুলিশে ধরে।

করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে কেমন চলছে জীবন যাত্রা? জিজ্ঞেস করতেই মাসদাইর বাজার এলাকার লতিফ নামে এক রিকশা চালক ওইসব কথা বলেন। করোনাভাইরাসের কারণে  খেটে খাওয়া মানুষরা বড় বিপাকে। 

তাদের ঝুঁকিটা শুধু স্বাস্থ্যগত নয়, বরং তার চেয়ে অনেক বেশি জীবন ধারণের। তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকিটাও অন্যদের থেকে বেশি। তবে করোনা মহামারীর কারণে নিম্ন আয়ের এ সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নিয়ে যতটা উদ্বিগ্ন, তার  থেকে বেশি উৎকণ্ঠিত ক্ষুধা নিবারণের জন্য।
 
এদিকে দেশে সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার পর থেকেই হঠাৎ যেন নেতাশূন্য হয়ে গেছে পুরো  দেশেই। কোথাও কোনো নেতার আনাগোনা চোখে পড়ছে না। যেসব নেতাদের বড় বড়  পোস্টার কিংবা ব্যানারে ছেয়ে থাকতো অলিগলি কিংবা বিভিন্ন সড়কের দু’পাশজুড়ে। খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কায় থাকা দেশের লাখ লাখ মেহনতি মানুষের পাশে নেই ভোটের আগের সেই বন্ধুরা।

শহরের বিভিন্নস্থানে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, হাতেগোনো কয়েকজন  নেতা ব্যক্তিগত উদ্যোগে চাল-ডাল বিতরণ করছেন। হাত গুটিয়ে বসে আছেন বেশির ভাগ নেতা।

তবে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি জানালেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হওয়ায় তারা এলাকায় যেতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ সরকারি উদ্যোগ পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশনার মাধ্যমে নিজেদের দায়িত্ব পালনের কথা জানালেও স্যোশাল মিডিয়ায় স্থানীয় এমপি কিংবা ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীদের নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। 

তবে আশার আলো এই, ঘরে থাকার ৭ম দিনে দুস্থ পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অনুদান জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। মন্ডলপাড়া ব্রীজ এলাকায় সিএনজি স্ট্যান্ডের পাশেই বসা ভ্যানচালক রমিজ মিয়া (৪৫) বলেন, এখন ভ্যান চালাতি পারছিনে, আয় রোজগার  নেই। প্রধানমন্ত্রীর এই অনুদান আমার জন্য আর্শীবাদ।

শহর ও শহরতরীর এলাকাগুলোতে নানা ধরনের সরকারি বেসরকারি বিত্তবানদের উদ্যোগে চাল-ডাল বিতরণের তথ্য মিলছে। তবে যারা শহর ছেড়ে গেছেন তারা খুবই নাজুক পরিস্থিতে রয়েছেন। কারণ এলাকয় গিয়ে কাজ পাচ্ছে না, খাবারও পাচ্ছেন না বলে জানালেন আড়াইহাজার ও সোনারগাঁও উপজেলার কয়েকজন সংবাদকর্মী। হঠাৎ নেমে আসা এ বিপদের দিনে জনপ্রতিনিধিদের পাশে চান সাধারণ মানুষ। 


আর্থিকভাবে স্বচ্ছলরা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুদ করলেও দিনমজুদের সে সুযোগ নেই। মাসদাইরের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ নিজ এলাকার খেটে খাওয়া মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবরসহ খাবার দাবার পৌঁছে দিচ্ছেন।

এই বিভাগের আরো খবর