বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

কাঁদা আর ময়লা পানিতে নিমজ্জিত নগরী, ভোগান্তিতে সাধারন মানুষ

প্রকাশিত: ২১ মে ২০১৮   আপডেট: ২১ মে ২০১৮

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : বৈশাখ বিদায় নিলেও থামছেনা বৈশাখী দাপট। দমকা ঝড় হাওয়া আর অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে ক্ষণে ক্ষণে বৈশাখের উপস্থিতি জৈষ্ঠ্যতেও উপলবদ্ধি করা যাচ্ছে। প্রতিদিনই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মাঝে সূর্যের দেখা মিললেও তাও ক্ষীন। এদিকে সোমবারও (২১ মে) ভোর থেকেই বজ্রপাতসহ মুষুলধারে বৃষ্টি হয় সকাল ১২ টা পর্যন্ত।

 

আর এ টানা বৃষ্টিতে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে নগরীরর বিভিন্ন অলিগলিগুলো কাঁদা আর পানিতে নিমজ্জ্বিত হয়ে গেছে। সরজমিনে দেখা যায়, দেওভোগ এলাকা, মাদ্রাসা, পূর্বনগর, লিচুবাগ, মাসদাইর, গলাচিপা, জামতলা, চাষাঢ়া, বঙ্গবন্ধুসড়ক, আমলাপাড়া, ইসদাইর, উকিলপাড়া, নবাবসলিমুল্লাহ রোড, ২নং রেলগেটসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানিতে নিমজ্জিত। ড্রেনের ময়লা পানি আর বৃষ্টি পানিতে রাস্তা ভরাট হয়ে আছে। আর এ সকল ময়লা পানিতেই হাঁটতে হচ্ছে পথচারীদের। এমনকি রাস্তায় জমে ময়লা পানি গিয়ে জড়ো হচ্ছে রাস্তা থেকে নিচু বাড়ি গুলোতে। ঘরে বাহিরে সর্বত্র ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ। দেওভোগ দাতাসড়ক এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আলী জানান,বৃষ্টি আইছে তো আইছে সব পেক পানি আমাগো ঘাড়ে চাপায় দিয়া গেছে। বৃষ্টি লগে আবার ড্রেনের পঁচা পানি যোগ হইছে। রোজার মধ্যে এই পানি পারাইয়া নামাজ পড়তে যাইতে হইতাছে। এ কষ্টের কথা কী কমু। মাসদাইর, গলাচিপা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় আরো এক বৈচিত্র দৃশ্য। বৃষ্টির পানি আর ড্রেনের ময়লা পানির সংযোগে পানির রং সবুজ রঙে পরিবর্তিত হয়েছে। আর এ পানিতেই হাঁটতে হচ্ছে কর্মব্যস্ত সাধারণ মানুষগুলো। হাঁটতে হাঁটতে এক পথচারী জানায়,একটু বৃষ্টি হোক বা না হোক পানিজমবেই। টানা বৃষ্টি পর বের হয়েছি অফিসে যাওয়ার জন্য। বের হয়ে দেখি এ অবস্থা। আর রিকশা ও এখন সোনার হরিণের মত হয়ে গেছে। তাই হেঁটেই পারি দিচ্ছি এই সবুজ সাগর।   গলাচিপা এলাকার দোকানদার হালিম দোকানের পানি মুছতে মুছতে জানান, সকালবেলার বৃষ্টিতে দোকনে পানি ঢুইকা গেছে। যে অবস্থা দেখতাছেনিই তো। বৃষ্টিতে তো পানি জমছেই ড্রেন ভরেও পানি উঠতাছে। তারওপর কয়দিন আগে সিটি কর্পোরেশন থেকে ড্রেন পরিষ্কার করে ময়লা রাস্তার ওপরই রাইখা গেছে। গতকাল সামনের থেকে কিছু নিলেও এ দিকটা পরিষ্কার করে নাই। যার কারণে ড্রেন গুলো ঐ ময়লাদিয়াই ভরে গেছে পানি যাইতে পারতেছেনা। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীদের ওপর ক্ষোভ ঝেরে পাশের আরেকজন দোকানদার জানায়, ওনারা সরকারী লোক কিছু বলা ও যাইবো না। ঘুমাইয়া ঘুমাইয়া কাজ করব। আর তার ফল ভুগতে হইবো আমাদের। এদিকে সকাল থেকে টানা বৃষ্টির ভোগান্তি থেকে বাদ যায়নি নারায়ণগঞ্জ সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরাও। মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, একটু বৃষ্টি হলেই কলেজের ভিতরে গেটের সামনে হাঁটু পানি জমে যায়। ফলে কলেজ ছুটি শেষে বাসায় ফিরতে হয় এ ময়লা পানি মাড়িয়ে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু সড় থাকা মার্কেটগুলোও বৃষ্টিতে রাস্তা থেকে পানি উপচে দোকানগুলোতে ঢুকে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে দোকানীদের। এছাড়া ইসদাইর, লালপুর, মুসলিমনগর নয়াবাজার, আমতলা, পৌষাপুকুরপাড়, সস্তাপুর, কায়েমপুর, পিলকুনি, আদর্শনগর ও রসুলপুর এলাকার রাস্তাগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এসব এলাকার বাড়ি, বাজার ও দোকানপাটে পানি প্রবেশ করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা। এ বৃষ্টিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে রিকশা, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ সব ধরনের পরিবহনের যাত্রী ও চালকদেরও।

এই বিভাগের আরো খবর