বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

করোনায় সরকারের নিপীড়ন থেমে নেই: মির্জা ফখরুল

যুগের চিন্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯ মে ২০২০  

করোনার এ ভয়াবহ দুর্যোগেও সরকারের নিপীড়ন থেমে নেই। সরকারি ত্রাণের অনিয়ম, চাল চুরি ও করোনা নিয়ে সমালোচনা করায় এ পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গণমাধ্যমকর্মীসহ ৪১১ জনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।


আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সেলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।


বিএনপি মহাসচিব বলেন, সারাদেশে ৩১ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৩টি পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেছে বিএনপির। এ ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি সারাদেশে অব্যাহত আছে-থাকবে। এছাড়া ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন যৌথভাবে প্রায় ৭৫টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ইমারজেন্সি বিভাগে প্রায় দুই হাজার পূর্ণাঙ্গ পিপিই সরবরাহ করেছে। সেসঙ্গে অনলাইনের মাধ্যমে ড্যাব সদস্যরা দেশের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা দিচ্ছে।


মির্জা ফখরুল বলেন, করোনার এ ভয়াবহ দুর্যোগেও সরকারের নিপীড়ন থেমে নেই। সরকারি ত্রাণের অনিয়ম, চাল চুরি ও করোনা নিয়ে সমালোচনা করায় এ পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গণমাধ্যমকর্মীসহ ৪১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। বেশ কয়েকজন সম্পাদক ও সাংবাদিকের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ত্রাণ দিতে গিয়ে গ্রেফতার হচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে করোনার ভয়াবহ থাবায় আক্রান্ত হচ্ছেন কারাবন্দিরাও। ইতোমধ্যে সিলেট কারাগারে একজন বন্দি করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা প্রত্যাহার ও কারাবন্দি রাজবন্দিদের মুক্তি দাবি করছি।


তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি হতে পারছেন না। অভিযোগ রয়েছে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায়। এ যদি সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার অবস্থা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী তাতো বুঝতেই পারছেন। শুধু কিটের অভাবে করোনার টেস্ট করতে পারছেন না আক্রান্ত রোগীরা। অথচ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিট অনুমোদন নিয়ে টালবাহানা চলছে।

 

মহাসচিব আরও বলেন, সংবাদমাধ্যমে দেখলাম ৫০ লাখ কর্মহীন লোকের মধ্যে ১২৫৭ কোটি টাকা বিতরণ করছে সরকার। মোবাইলে বিকাশের মাধ্যমে, ব্যাংকের মাধ্যমে সে টাকা বিতরণ হবে। সেখানেও নগদ টাকা লুট হচ্ছে। একজনের মোবাইল নম্বরে ৩০৬ জনের নাম। অর্থাৎ ৩০৬ জনের টাকা একজন লুট করবে। এছাড়াও নগদ টাকার তালিকায় নাম রয়েছে তাদের দলীয় নেতা-কর্মী, বাড়ির মালিক, দোকানের মালিক, দলীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের। অথচ দোকানের কর্মচারীর নাম নেই, কাজের লোকদের নাম নেই, গরিব মানুষদের নাম নেই। আর বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের নামতো নেইই। এ হলো অবস্থা।

 

 

সরকারি কর্মকর্তা ও চিকিৎসক-নার্সদের করোনায় আক্রান্ত সম্পর্কে বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সরকারি হিসেবে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৪৯ জনের, আক্রান্ত ২৩ হাজার ৮৭০ জন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সংখ্যা আরও ৪০ গুণ বেশি হবে। গণমাধ্যমের তথ্যমতে করোনা উপসর্গে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছে প্রায় ১১০০ জন।  চিকিৎসক ৭৮০ জন আক্রান্ত, নার্স ৬০০ জন ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত ৫৫০ জন। এরমধ্যে ৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন ২২০০ এর অধিক, অন্য বাহিনীর আরও ৬ শতাধিক সদস্য আক্রান্ত। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন প্রায় ১৫ জন।  গণমাধ্যমকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৩৫ জন। ৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রশাসনেরও বেশ কিছু সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন, মৃত্যুবরণ করেছেন।

 

এই বিভাগের আরো খবর