বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

করোনায় না’গঞ্জের খেয়াঘাটগুলোতে  নেই কোন সতর্কতা

প্রকাশিত: ২ এপ্রিল ২০২০  

লতিফ রানা (যুগের চিন্তা ২৪) : করোনায় স্থবির বিশ্ব। অনেক দেশেই ঘোষণা করা হয়েছে লকডাউন। বাংলাদেশে এর বিস্তার রোধে প্রত্যেককে বাড়িতে থাকতে এবং গণসংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার সুযোগ করে দিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কলকারখানা ও অফিস আদালতে ছুটি ঘোষনা করা হয়।

ছুটি ঘোষনার প্রথম দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার  থেকেই কমতে শুরু করে শহরের লোক সংখ্যা। ফাঁকা হয়ে পড়ে নারায়ণগঞ্জের প্রধান সড়কগুলো। কিন্তু করোনায় সরকারী সতর্কবার্তার কোন নিয়মই পালিত হচ্ছেনা শহরের  সেন্ট্রাল খেয়াঘাটসহ অন্যান্য খেয়াঘাটগুলোতে। 


সেখানে নৌকার ছইয়ের (নৌকার ছাদ বা ছাউনি) ভিতর আবদ্ধ হয়ে একসাথে অনেক যাত্রি পার হচ্ছে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে। 


যেখানে নৌকার মাঝি বা যাত্রি নিরাপদ নয় কেউ। শহরের সেন্ট্রাল খেয়াঘাট (বন্দর খেয়াঘাট), ৫নং ঘাট, বরফকল ঘাট, ও নবীগঞ্জ গুদারাঘাট এলাকায় একই চিত্র পাওয়া যায়। 


শহর সংলগ্ন বিভিন্ন খেয়াঘাটগুলো ঘুরে দেখা যায়, সেখানে প্রত্যেকটি নৌকার ছইয়ের ভিতরে একসাথে ৮/১০জন বসে আছে আবার বাইরে দাঁড়ানো অবস্থায় আছে ৬ থেকে ৮ জন যাত্রি। 


সেখানে ৩ ফুট কেনো ১ইঞ্চি ফাঁক রাখারও সুযোগ নেই। প্রতি নৌকায়ই পার হচ্ছে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ জন কিংবা আরো বেশী যাত্রি। প্রত্যেকের সাথে প্রত্যেকের গা ঘেঁষাঘেষি করে অবস্থান। যেখানে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হওয়াই নিষেধ। 


সেখানে লোক যাতায়াতের  কোন কমতি নেই। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের সেন্ট্রালঘাট এলাকায় এই হার অনেক বেশী। আর সন্ধ্যে হলেতো পোয়াবারো। সেখানে দেখা যায় জনতার ঢল।

সেন্ট্রাল ঘাটে নৌকায় উঠার সময় রাজু নামের বন্দরের এক যাত্রি’র সাথে কথা বলে জানা যায়, সে নয়ামাটির একটি হোসিয়ারিতে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কাজ করে। তাই প্রতিদিন সকালে তাকে আসতে হয়। 


এখন করোনার ভয়ে বিকেলেই বাড়ি ফিরে যায়, তা নাহলে ফিরতে রাতের ৮টা থেকে ১০টা বাজে। এমন ভিড়ের মধ্যে এই  নৌকায়ই উঠতে যাচ্ছেন কেন জিজ্ঞেস করলে জানায়, একটু দাঁড়ালেই দেখতে পাবেন সব নৌকার একই অবস্থা। 


তা নাহলে রিজার্ভ যেতে হবে। ৫০ টাকার কমে রিজার্ভ যাবেনা। আমাদের পক্ষে কি আর প্রতিদিন রিজার্ভ যাওয়া সম্ভব হবে ?

আরেক যাত্রি শাহজাহান জানান, এখানে নৌকা যেমন বেশী লোকসংখ্যা তার চেয়েও বেশী। তাই কোন নৌকায়ই কম লোক নেয়ার মতো অবস্থা নেই। 


নৌকা ভিড়ানোর সাথে সাথেই লোকে ভরে যাচ্ছে। করোনার কথা শুনে তো ভয় লাগেই। কাজ না করলেওতো পেট চলবে না।


৫ নং খেয়াঘাটের মাঝি জানান, বন্ধ ঘোষণার পর থেকেই এখানে লোক চলাচল কমে গেছে। আগে যেখানে এই ঘাট দিয়ে সারাদিনে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার লোক চলাচল করতো সেখানে এই কয়েকদিন সারাদিনে ১ হাজার লোকও পারাপার হয়নি। 

তবে গতকাল বুধবার থেকে লোকজনের চলাচল কিছুটা বেড়েছে বলে তিনি জানান।
 

এই বিভাগের আরো খবর