শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

করোনাতেও আড্ডা, কিশোরগ্যাং বেপরোয়া

প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২০  

বিশেষ প্রতিনিধি : ছেলেকে সাথে নিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন সিরাজুল ইসলাম।  দেওভোগ পানিরট্যাঙ্কির মোড়ে যাবেন। তার আগেই পুলিশ তাদের আটকে দিল। জিজ্ঞেস করলো কোথায় যাচ্ছেন ? সিরাজ সাহেবের উত্তর কিছু তরকারি আর চাল কিনতে বের হয়েছি। 

 

পুলিশ তাদের ছেড়ে দিল। এরপরই দুইটি মোটর সাইকেল আটকানো হল। দুইটি মোটর সাইকেলে আরোহী ৫ জন। পুলিশ ভালমত জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেন। ওরা জরুরী কাজে বেরিয়েছে। ঔষধ  কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি। 

 

নিজেরা মিলেমিশে ডিউটি করছে। কিছুক্ষণ পর ৪ জন কিশোরের পথ আগলে প্রশ্ন করলো পুলিশ। তেমন কোন সদুত্তর নেই। রাস্তার পাশে কয়েক মিনিট দাঁড় করিয়ে রেখে ফিরে যেতে দেয়া হল।

 

পুলিশ ৪ কিশোরকে ছেড়ে দিতে না দিতেই ওদেরকে ছাড়িয়ে নিতে আসে একদল কিশোরগ্যাং সদস্য। আসলে ওরা বেরিয়েছে ঘোরাঘুরি করতে। পুলিশ সদস্যরা করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় হাঙ্গামা বাধায়নি।  

 

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাধারণ ছুটি দিয়ে সরকার ঘরে থাকার নির্দেশ দিলেও অনেকেই তা কর্ণপাত করছে না। সামাজিক দূরত্ব মানছে না। বিনা প্রয়োজনে ঘর  থেকে বের হচ্ছে। জেল-জরিমানা করেও নির্দেশনা মানতে বাধ্য করা যাচ্ছে না। 

 

পাড়া-মহল্লায় চায়ের দোকানে চলছে আড্ডাবাজি। কোন কারণ ছাড়াই ঘর থেকে বেরিয়ে মানুষ আড্ডায় মেতে উঠছে। অথচ ঘরের বাহির না হতে এবং একত্রে আড্ডা দিতে বা  ঘোরাফেরা না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বারবার আহ্বান জানাচ্ছে।


 
গতকাল সকাল থেকে শহরের পালপাড়া, দেওভোগ এলএনএ রোড, পানিরট্যাঙ্কি, মাসদাইর, গলাচিপা, বাবুরাইল, তাতীপাড়া, আমবাগান, পাইকপাড়া, ভূঁইয়াপাড়া, বউবাজার, জিমখানা, জল্লারপাড়, নিতাইগঞ্জ, তামাকপট্টি, সুতারপট্টি, টানবাজার, উত্তর চাষাড়া, খানপুর ও ইসদাইর এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। 

 

এই সকল এলাকার প্রধান সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কঠোরভাবে অবস্থান নেওয়ার ফলে প্রধান সড়কে হাতে  গোনা কিছু জরুরী কাজে ব্যবহৃত যানবাহন চোখে পড়েছে। তারপরেও পুলিশের চেকপোস্টে যানবাহনগুলোর চালককে জবাবদিহি করতে হয়েছে।

 

কিন্তু প্রতিটি এলাকার ভিতরের রাস্তায় বা মহল্লার রাস্তায় ছিল ভিন্নচিত্র। সকাল থেকেই পাড়া মহল্লায় প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে মানুষকে রাস্তায় আড্ডা দিতে দেখা গেছে।


 
মাসদাইর বাজারের কয়েকজন দোকানীর সাথে আলাপকালে তারা জানায়, ভাই মেইন রাস্তায় মানুষ কম। কেউ বাজারে আসলে তাকে দেখা যায়।

 

বাজারে কেউ প্রয়োজন ছাড়া আসেনা। কিন্তু মহল্লার ভেতরে পোলাপান (কিশোর গ্যাং) জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। ওরা কারো নির্দেশ মানছেনা। মুরুব্বীদের সামনেই সিগারেট টানছে ও ইয়াবা বিক্রি করছে। 

 

কেউ অযথা ঝামেলা পড়তে চায়না বিধায় এসবের কোন প্রতিকার নেই। দোকানদারদের কাছ থেকে চাঁদাও নেয় ওরা। আমরা এমনিতেই বিপদে আছি। তাই এ নিয়ে আপাতত কিছু বলতে পারছিনা। তবে এলাকার কাউন্সিলরের লোকজনকে বিষয়টা অবগত করা হয়েছে।
 

এই বিভাগের আরো খবর