শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

করোনাতে কাশেমী উধাও!

প্রকাশিত: ১ মে ২০২০  

ফরিদ আহম্মেদ বাধন : একাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন নিয়েছিলেন মুফতি মনির হোসেন কাশেমী। তাঁর মনোনয়ন বিএনপি নেতাকর্মীরা তেমন মেনে নিতে পারেনি।

 

তবে দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান দেখিয়ে কর্মীরা তাঁর জন্য মাঠে নেমেছিলেন। কাশেমীকে মনোনয়ন দেয়ায় ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের হেভিওয়েট নেতারা নীরব ভুমিকা পালন করেছিলেন।

 

বিএনপি নেতাকর্মীরা শুধুমাত্র দলীয় কমান্ডের কারণে, ঐক্যফ্রন্টের জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের প্রার্থী মনির হোসেন কাশেমীর পক্ষে মিছিল মিটিং করেছিল। তবে করোনা পরিস্থিতিতে কাশেমীকে মাঠে দেখা যায়নি।

 

তিনি খোঁজ নেননি তাঁর নির্বাচনী এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীদের। এমনকি তাঁর পক্ষ হয়ে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় কাউকে সাহায্য সহযোগীতা করতেও শোনা যায়নি। তবে বিএনপি নেতা শাহ আলম ও সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিনও নীরবে বিএনপি নেতা কর্মীদের খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কয়েকটি সূত্র। 

 

একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন এবং ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি গিয়াস উদ্দিনের নাম চাউর হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নারায়নগঞ্জ-৪ আসনের মতো গুরুত্বপূর্ন একটি আসনে ঐক্য ফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন দেয়া হয় মনির হোসেন কাশেমীকে।

 

মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে তিনি দলের নেতাকর্মীদের সাথে তেমন সমন্বয় করতে পারেননি। ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জের হেভিওয়েট নেতাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করতেও পর্যন্ত তিনি কার্পন্য  করেছেন  বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের।

 


ফতুল্লা একজন নেতাদাবী করেন,একাদশ সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। জেলা বিএনপি দূরদর্শীতার অভাবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে কাশেমীর মতো একজন অখ্যাত ব্যাক্তিকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ধানের শীষ প্রতীকে  নির্বাচনের জন্য মাঠে নামানো হয়।

 

এর ব্যর্থতা জেলা বিএনপির নেতাদের। কারন যদি জেলা বিএনপিতে সম্বন্বয় থাকতো তাহলে নির্বাচনে একেএম শামীম ওসমান জয়লাভ করলেও লড়াই হতো উভয়ের মধ্যে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে শামীম ওসমানের সাথে যে লড়াই কাশেমীর সাথে হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। 

 

করোনা পরিস্থিতিতে মুফতি মনির হোসেন কাশেমীর দিকে তাকিয়ে ছিল বিশেষ করে ফতুল্লার বিএনপি নেতাকর্মীরা। কিন্তু না,তাঁর তেমন সাড়া কোন নেতাকর্মী পাননি। অপরদিকে বিএনপি নেতা শাহ আলম ফতুল্লার নেতাকর্মীদের খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা। 

 

ফতুল্লার ৫টি ইউনিয়নের নেতারা জানান, ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির  নেতা কে আছেন তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। কোনভাবেই জেলায় বিএনপির যারা হেভিওয়েট নেতা বলে দাবী করেন তাদের মধ্যে অল্প কিছু বাদে বাকিরা দলের কর্মীদের কোন খোঁজ নিচ্ছেন না।  এতেকরে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ।

 

মুফতি মনির হোসেন কাশেমীর নিজ এলাকা মুসলিমনগরের বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, কাশেমী বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তার চেহারাটা এলাকার কেউ দেখেনি। তিনি কোন বিএনপি নেতাকর্মীদের খোঁজও নেননি।

 

এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার দৈনিক যুগের চিন্তাকে বলেন, একাদশ সংসদ নির্বাচনে জেলা বিএনপি কেন্দ্রে প্রার্থী দেয়ার ব্যাপারে তেমন ভূমিকা রাখতে পারেনি। বলা যায় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে মনির হোসেন কাশেমীকে দেয়া হয়।  সে সময় নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচন করার সাহস  বিএনপির অনেক নেতাই করেনি।

 

আর এই সুযোগটিই নিয়েছিলেন কাশেমী। করোনা পরিস্থিতিতে কাশেমী তার নির্বাচনী এলাকার জনগনের খোঁজ খবর নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেছেন কিনা তা আমার জানা নেই। তার মতো একজন অখ্যাত ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল একমাত্র জেলা বিএনপির নেতাদের দূর্বলতার কারণে।

 

 

এই দুঃসময়ে দলের কর্মীদের পাশে কেউ দাড়াচ্ছে না। যতদূর জানি শাহ আলম তিনি নেতাদের যতটুকু পারছেন সাহায্য সহযোগীতা করছেন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে এতো বিএনপির হেভিওয়েট নেতা, অথচ নিদান কালে কর্মীরা তাদের দেখা পাচ্ছে না।   

 


তিনি আরো জানান,বিএনপির  ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বাইরে থেকে নেতাদের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষন করছেন। যারা নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং যাদের নামের তালিকা ছিল, তারা করোনা পরিস্থিতিতে কর্মীদের জন্য কি করছেন তা তাকে অবগত করার ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন।   

 

মুফতি মনির হোসেন কাশেমী বলেন, লকডাউনের পর তিনি তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ব্যক্তির কাছে ত্রাণ পৌঁছেন দিয়েছেন। তবে তিনি ফটোসেশন করা থেকে বিরত রয়েছেন। তিনি আরো জানান, তিনি যে ত্রাণ দিচ্ছেন সেখানে কে বিএনপি,কে জাতীয় পার্টি আর কে আওয়ামীলীগ করেন তা তিনি দেখছেন না। তিনি নিরবে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছেন বলেও তিনি দাবী করেন। 
 

এই বিভাগের আরো খবর