বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

করোনা জয়ী হাফিজুল 

করোনকে ভয় নয়. জয় করা সম্ভব

নুসরাত জাহান সুপ্তি 

প্রকাশিত: ১৫ মে ২০২০  

সমাজ কর্মী আমি, সমাজের মানুষের মানুষের জন্য কাজ করি। নারায়ণগঞ্জে করোনা হানা দেওয়ার শুরু থেকেই আমি আমার সাধ্যমতো মানুষের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছি। মনে আত্ববিশ^াস ও সাহসের সাথেই কাজ করছিলাম। এর মাঝে হঠাৎ অসুস্থ হওয়ায় করোনা পরীক্ষা করি। পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ আসে।

 

আমার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওপেন হার্ট সার্জারি সহ একাধিক সমস্যা আছে। করোনা রোগ আমার মতো রোগীদের জন্য অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তবে মনোবল না হারিয়ে চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী বাসায় আইসোলেশেনে ছিলাম। আমি এখন সুস্থ।

 

আমার মতো রোগীও যদি সুস্থ হতে পারে তাহলে করোনকে ভয় নয় জয় করা সম্ভব। নিজের করোনায় জয়ী হওয়ার এই গল্প যুগের চিন্তাকে জানান বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম। 


করোনাকে হারিয়ে নতুন জীবনে ফিরেছেন সিপিবি নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম। তবে এই যুদ্ধে তিনি একা ছিলেন না। তার পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত ছিল তার স্ত্রী ও দুই সন্তান। ১৪ মে বৃহস্পতিবার আইইডিসিআর থেকে পাঠানো তাদের রিপোর্টে কোভিড-১৯ নেগেটিভ  আসে।

 

হাফিজুল ইসলাম অসুস্থ হওয়ার শুরুর সময়ের কথা জানিয়ে বলেন, গত ৩ এপ্রিল হটাৎ অসুস্থবোধ করি। পরবর্তীতে নমুনা পরীক্ষার জন্য আইইডিসিআরে যোগাযোগ করলে ১১ এপ্রিল আমার নমুনা সংগ্রহ করে। ১৩ এপ্রিল আমার করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর ১৮ এপ্রিল আমার পরিবারের সদস্যদের নমুনা নিলে তাদেরও করোনা পজেটিভ আসে।

 

এরপর সুস্থ হয়ে পরীক্ষা করলে গত ২ মে প্রথম করোনার ফলাফল নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। পরবর্তীতে ১১ মে আবার নমুনা দেওয়ার পর ১৪ মে পুরো পরিবারের করোনা নেগেটিভ আসছে। আমরা সবাই এখন করোনা মুক্ত।


করোনায় চিকিৎসকের দেওয়া পরামর্শের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের পরিবারের সকলের করোনার উপসর্গ কম ছিল তাই আমরা বাসায় আইসোলেশনে ছিলাম। তারপর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধের পাশাপশি প্রোটিন, ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খেয়েছি। সেই সাথে নিয়মিত গরম পানির গারগিল করেছি। স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে আমি এখন সুস্থ।


হাফিজুল ইসলাম ও তার পরিবার শুভানুধ্যায়ী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, সত্যি বলতে নিজের অসুস্থতার কথা জেনে ততটা ভয় পাইনি কিন্তু বাচ্চা গুলো যখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তখন মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙ্গে পড়েছিলাম। তবে আমার আত্বীয়-স্বজন, প্রতিবেশী সহ সকলের অনেক সাহায্য পেয়েছি।

 

বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, মেয়র ও সংসদ সদস্যবৃন্দ,কাউন্সিলরবৃন্দ, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ সহ যারা আমার রোগমুক্তির জন্য দোয়া করেছেন তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আপনাদের সবার প্রতি আমি আজীবন ঋণী হয়ে থাকবো। 
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, করোনায় চিকিৎসকরা যোদ্ধার মতো লড়ে যাচ্ছেন।

 

আমাদেরকেও এই লড়াইয়ে তাদের সহযোগিতা করতে হবে। করোনা রোগীকে লাঞ্চিত না করে তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। এ সময় মানবিক হওয়ার সময়, সাধারন মানুষের পাশে দাড়ানোর সময়। করোনায় আতঙ্কিত হলে চলবে না। করোনায় আক্রান্ত মানেই মৃত্যু নয়। আমাদেরকে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই করোনামুক্ত বিশ্ব গড়ে তুলতে হবে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর