শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

‘কদম রসুল সেতু’ নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মেয়র আইভী (ভিডিও)

প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) :  মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৫৭৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর ‘কদম রসুল সেতু’ প্রকল্প পাশ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন  শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ প্রকল্প পাশ করা হয়।

এসময় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী সভায় উপস্থিত ছিলেন। একনেকের সে সভা থেকে ফিরে নগরভবনে ‘কদম রসুল সেতু’ প্রকল্প পাশ হওয়ায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী যুগের চিন্তা ২৪’কে সাক্ষাৎকার দেন। পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

‘কদম রসুল সেতু’ প্রকল্প নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী  যুগের চিন্তা ২৪’কে বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পরে আমরা একটি সেতু পেতে যাচ্ছি। এটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের ব্যাপার। মানুষের জন্য এটি আশীর্বাদ স্বরুপ। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী তার প্রতিও সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। চীফ ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই।

ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, দীর্ঘসূত্রিতার কারণ বিশ্লেষণ না করে যেহুতু সেতুর প্রকল্প পাশ হয়ে গেছে, কিভাবে সেতুর কাজটি ত্বরান্বিত করে ধরা যায় সেসব নিয়েই আপাতত চিন্তা করছি। অনেক সময় জটিলতা ও সমস্যা থাকে। শীতলক্ষ্যা নদীর গভীরতা অনেক বেশি হওয়ায় এই নদীর উপর সেতু উচুঁ করে করতে হয়। এটা বেশ কঠিন। ২০১১ সালের প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় আমি বন্দরবাসীকে কথা দিয়েছিলাম এ সেতুটি করার জন্য সহযোগিতা করবো। ৭ বছর পরে হলেও এ সেতুর প্রকল্প কাজটি পাশ হওয়ায় আমি মনে করি এটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের দিন।৭ বছরের প্রচেষ্টায় আমি আমার কথা রাখতে পেরেছি। বন্দরবাসীর কাছেও আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি একারণে যে উনারা সব সময় আমাকে এ বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়েছেন। এ প্রকল্পটি পাশ হয়েছে এটিই আমাদের কাছে অনেক বড় বিষয়।

কিভাবে কদম রসুল সেতুর কাজ বাস্তবায়ন হবে এমন প্রশ্নে মেয়র আইভী বলেন, এলজিইডি এবং সিটি করপোরেশন যৌথভাবে এ সেতুর প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করবে। নদীতে যাতে চর না পড়ে সেসব চিন্তা-ভাবনা করেই কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া হবে। খুব শীঘ্রই বলতে গেলে কাল পরশুর মধ্যেই আমি এ বিষয়ে আলোচনায় বসবো। এ  সেতু প্রকল্পের খরচ হিসেবে পাশ করা হয়েছে ৫৭৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এবং ৪ বছরের মধ্যে এ সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্নের মেয়াদকাল ধরা হবে। চারবছরের আগেই এ সেতুর কাজটি শেষ হতে পারে।

এ সেতু নির্মাণের ফলে সদর ও বন্দরের দুইপাড়ের মানুষের জন্যই অনেক সুবিধাজনক হবে জানিয়ে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, এ সেতু হওয়ার ফলে গাড়ি যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে। এখন যেমন মুমূর্ষ রোগীদের নিয়ে আসতে হয় নৌকায় চড়িয়ে, দৈনন্দিন যাতায়াতটিও করতে হয় নৌকায়। অনেক সময়ই দেখা যায় নৌকাগুলো ডুবে মানুষের জীবনের ঝুঁকি থাকছে। সেতু হওয়ার ফলে মানুষ উপকার পাবে। শুধু যে বন্দরবাসী উপকার পাবে তা নয়, নগরীর সদরের লোকজন বন্দরে কর্মসংস্থানের জন্য যাচ্ছে উভয় পাশের মানুষই এই সেতুর সুবিধা পাবে। এ সেতু হলে বিভিন্ন ধরণের সুবিধা পাবে। একটি সেতু হলে ওই এলাকার উন্নয়ন কাজ বেড়ে যায়, এছাড়া মানুষের কাজের সময় অপচয়ের সাশ্রয় হয়।

উল্লেখ্য, ১০ মার্চ বিকেলে বন্দরে সিরাজউদ্দৌলা ক্লাব মাঠের ভরাট কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, নারায়ণগঞ্জবাসী আপনারা যেভাবে চাইবেন সেভাবেই নগরকে সাজাবো। জাইকা চাচ্ছে শীতলক্ষ্যা সেতুর উপর দিয়ে যে ব্রীজ হবে তা যেন হাইওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়। জাইকা চাচ্ছে নবীগঞ্জ দিয়ে শীতলক্ষ্যা সেতু হোক। আমি যে শীতলক্ষ্যা সেতু করবো তার নামকরণ করা হবে কদমরসুল সেতু। আমি অন্য কারো নামে এ সেতুর নামকরণ করবো না। প্রধানমন্ত্রী সবকিছু জানেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর আদেশ মোতাবেক কাজ করবো।

একনেকে কদম রসুল সেতু প্রকল্প পাশ হওয়ায় সদর-বন্দরবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন কদম রসুল সেতু বাস্তবায়নের দ্বার উন্মোচিত হলো। এ সেতু নির্মিত হলে নগরীর ৫নং ঘাট থেকে বন্দরের কদম রসুলের সাথে সংযোগ স্থাপন হবে। যার ফলে দুই এলাকার মানুষের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত সহজ হবে। এছাড়া শহর ও বন্দরের ব্যবসায়িক কার্যক্রমের গতি আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী এ সেতুর প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় উদ্যেগের কথা জানিয়ে আসছিলেন। আজ একনেকের সভায় এ প্রকল্প পাশ হওয়ায় শহর-বন্দরবাসীর স্বপ্নের সেতু বাস্তবায়নের কাজ কয়েকধাপ এগোলো।

এই বিভাগের আরো খবর