মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৩ ১৪৩১

এমপির গাড়ি ভাঙচুর মামলায় কাউন্সিলর সাদরিলসহ গ্রেপ্তার ১০

প্রকাশিত: ১৮ জুলাই ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : সিদ্ধিরগঞ্জের ওমরপুর এলাকায় প্রবাসী কালু মিয়ার বাড়ির সামনে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি (৩৪৯) সেলিনা ইসলামের  গাড়ি ভাঙচুর ও শ্লীলতাহানি করার মামলায় গ্রেফতার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ সাদরিলসহ ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশদিনের রিমাণ্ড আবেদন করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। রিমাণ্ড শুনানির তারিখ আগামী ২১ জুলাই নির্ধারণ করেছে আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হাবিবুর রহমান। 

 

এর আগে সংরক্ষিত আসনের সাংসদ সেলিনা ইসলামের গাড়ি ভাঙচুর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেল ৩টায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা (নং-৪৪) দায়ের করেন এমপির ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) সোহেল। মামলায় অন্যান্য আসামীরা হলেন ওমরপুর এলাকার মৃত আব্দুল মজিদ এর ছেলে হাফেজ আহমেদ (৩২), মৃত কাজিম উদ্দিন এর ছেলে খাইরুল ইসলাম (২৮),আব্দুল মান্নানের ছেলে তানভির সিদ্দিকী (২৩), শাহজাহানের ছেলে কুদ্দুস (২৫), আহম্মেদ আলীর ছেলে শাকিল (২২), মৃত ইয়াদ আলীর ছেলে নাজমুল হোসেন (৩৪), মৃত শিরাজুল ইসলামের ছেলে মুসলেম উদ্দিন (৫৩), আব্দুল সবুর এর ছেলে ফয়েজ (২৩)। এছাড়া আরো ৩০ /৪০ জনকে মামলায় অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।

 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি (৩৪৯) সেলিনা ইসলামের আত্মীয় (সম্পর্কে খালাতো বোন) সালমা বেগম (২৫) ও তার স্বামী হাফেজ আহমেদ (৩২) কালু মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। পারিবারিকভাবে ২০১৮ সালের বিয়ের পর  থেকেই দুজনের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একাধিকবার ঝগড়া হয়। ওই ঝগড়া সমাধানের জন্য বুধবার (১৭ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় কুমিল্লা থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে আসেন এমপি সেলিনা ইসলাম। বিচার সালিশ শেষে উভয় পক্ষকে মিলে যাওয়ার কথা বলে ভবনের নিচতলায় চলে আসেন এমপি  সেলিনা ইসলাম। তখন ওই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুরু করে হাফেজ আহমেদ। চিৎকার শুনে কাউন্সিলর সাদরিল ঘটনাস্থলে  গেলে স্থানীয় লোকজন বাড়িটি ঘেরাও করে ফেলে। এমপি গাড়িতে না উঠে নিচতলার একটি রুমে আশ্রয় নেন। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে এমপির গাড়ির (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৬৩৮০)  গ্লাস ভাঙচুর করে।

 

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এমপি সেলিনা ইসলামকে উদ্ধার করে। পরে এমপির অভিযোগের ভিত্তিতে কাউন্সিলর সাদরিল, হাফেজ আহমেদসহ ১০জনকে আটক করা হয়। সেসময় সালমার বাবা আব্দুল হাই ও খালাতো ভাই সোহেল উপস্থিত ছিলেন।

 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শাহীন শাহ পারভেজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ঘটনায় ১০ জনকে আটক ও একটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে গোলাম মোহাম্মদ সাদরিল নাসিক ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনের ছেলে এবং ঢাকা বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের অডিটর হাফেজ আহমেদ রয়েছে।  

 

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মনিরুল ইসলাম বলেন, এমপির অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। 

 

এদিকে নাসিক কাউন্সিলর সাদরিলকে গ্রেপ্তার করার পর ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাতে এলাকায় আসার আগে ওই এমপি সিদ্ধিরগঞ্জে আসবে  পুলিশকে কোন ইনফর্ম করেননি। যদি করতো তাহলে পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিতো। তাছাড়া এমপির সাথে থাকা লোকজন জনতাকে পিস্তল উচিয়ে ধরেছিলো। তাই জনতা তাদের অবরুদ্ধ করে। কাউন্সিলর সাদরিলকে ফাসানো হয়েছে। কারণ কাউন্সিলর এর বাবা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। 

 

কাউন্সিলর সাদরিলের বাবা বিএনপির সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘রাতে মিমাংসার কথা বলে থানায় আমার ছেলেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন মামলা বিষয়টি বুঝতে পারছিনা।’ 
 

এই বিভাগের আরো খবর