শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

এগ্রো ফার্ম থেকে ওজনের ভিত্তিতে গরু কিনেছি : আফজাল হোসেন পন্টি

প্রকাশিত: ২১ আগস্ট ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : বছর ঘুরে আবার এল পবিত্র ঈদুল আজহা। শান্তি, সৌর্হাদ্য আর আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে এ উৎসব। ঈদে সব ভেদাভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে মিলিত হওয়ার দিন। ঈদুল আজহায় মহান আল্লাহর উদ্দেশে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী পশুকোরবানি করা মুসলমানদের অনেক প্রাচীন ঐতিহ্য। 

ঈদুল আজহা উদযাপন নিয়ে যুগের চিন্তা ২৪’কে  দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কিছু কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের (এনইউজে) সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শামীমা রীতা।

ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি সম্পর্কে আফজাল হোসেন পন্টি জানান, ঈদ আমার পুরো পরিবার পরিজন নিয়ে নারায়ণগঞ্জে উত্তর চাষাড়া দাদাবাড়িতেই উদযাপন করবো। ইতিমধ্যেই কোরবানির গরু কেনা হয়েছে। গত কয়েকবছরে শহরে হাটের সংখ্যা কমে এসেছে। 

বছর তিনেক আগে হাট থেকে ইঞ্জেকশন দেয়া একটি বাজে গরু কেনার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো। ওই গরুর মাংসগুলো ডিপ ফ্রিজে রাখার পরেও পঁচে গিয়েছিলো। এরপর থেকে এগ্রো ফার্ম থেকে ওজনের ভিত্তিতে কোরবানির গরু কিনি। এবারও দেশী এগ্রো ফার্ম থেকে ওজনের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ দেশীয় একটি গরু কিনেছি। 

ঈদের সারাদিন খুব ব্যস্ততা থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদের নামাযের আদায়ের পর বাসায় ফিরে গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। কোরবানির পর গরুর মাংস কাটাকাটি, বন্টন ও বিতরণ করতে করতেই বিকেল হওয়া কেটে যায়। সারাদিন শেষে পরিবারের সবাইকে সময় দেয়া হয়। ঈদের দিন ওভাবে আর বাসার বাইরে বের হওয়া হয় না। ঈদের কয়েকটি দিন পরিবারের সাথেই কাটাবো বলে ঠিক করেছি। 

শৈশবের ঈদুল আজহা স্মৃতিচারণ করে আফজাল হোসেন পন্টি জানান, একসময় প্রেসক্লাব এলাকায় বালুরমাঠে কোরবানির পশুর হাট বসতো। এই হাটে আমরা অনেক আনন্দ সহকারেই যেতাম। ঈদ আসার মাসখানেক আগে থেকেই কবে হাট শুরু হবে সেটির দিনগণনা শুরু করে দিতাম। 

তখন এই হাটটিতে এবং ফতুল্লা হাটে উদ্বোধনের দিন মিলাদ পড়ানো হতো। এই মিলাতে আমাদের অনেক আগ্রহ নিয়ে অংশগ্রহণ করা এবং মিষ্টি ও জিলাপী খাওয়া নিয়েও আমাদের মধ্যে উত্তেজনা কাজ করতো। এগুলো অবশ্য এখন ছোটদের মধ্যে নেই। সবকিছুই এখন আধুনিকায়নের দিকে ছুটছে। আমার ছেলে- মেয়ে, ভাতিজাদের মাঝে সেরকম কিছু দেখতে পাই না। কেমন জানি সবকিছু যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। 

কোরবানির গরু কেনার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, বরফকল হাট থেকে গরু কিনে নিয়ে আসার সময় একবার গরু দড়ি ছিড়ে দৌড় দিলো। গরু ধরতে সবাই তখন পেছন পেছন দৌড় শুরু করলো। দিনদিন গরুরা বুঝি ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে! এখন তারাও দৌড়াদৌড়ি কম করে। তবে বয়সের সাথে সাথে ঈদ উদযাপনের ধরণটি আসলে পরিবর্তন হয়। বয়সভেদে আসলে একেকজনের ঈদ উদযাপনের ধরণ একেক রকম। 

আফজাল হোসেন পন্টি বলেন, আমার কাছে গরুর মাংসের রেসিপি বলতে গরুর ঝুড়া মাংস। এটি হচ্ছে, গরুর মাংস রান্না করার পর কয়েকবেলায় এটিকে গরম করতে হয়। দুই তিন পর মাংসগুলো বেশ খুলে গিয়ে ঝুড়া ঝুড়া হয়ে যায়। এটি আমার কাছে অনেক প্রিয়।  

ঈদুল আজহায় কোরবানি থেকে শিক্ষণীয় বিষয় সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই ঈদটি আমাদের উৎসব হলেও এর ধর্মীয় গুরুত্বও অনেক বেশি। এই  মাসেই পবিত্র হজ্ব পালন করা হয়। কোরবানি হলো প্রতিকী। 

আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। কারো সামর্থ্য না থাকলে সে হয়তো পশু কোরবানি নাও দিতে পারে কিন্তু মানুষের মনের ভেতর যেসব কুপ্রবৃত্তি রয়েছে সেগুলোকে ত্যাগ করতে পারলে সেটিই হবে সবচেয়ে বড় কোরবানি। আমার মনে হয় আল্লাহ আমাদের কাছে কোরবানির মধ্য দিয়ে এটিই চান। বড় গরু কোরবানি দিলেও যদি ভেতরের পশুটাকে করতে না পারলে সেটি আল্লাহর কাছে কখনোই পছন্দনীয় হবে না। 

ঈদ শুভেচ্ছায় সকলের উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের (এনইউজে) সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি বলেন, প্রতিবছরই কোরবানির ঈদ আসে। আমরা এই উৎসব পালন করি। আমরা সকলেই এই উৎসবে নিজেদের ভেতরে থাকা পশুত্ব কোরবানির কথা বলি আদতে কয় জন করি তা আমরা প্রত্যেকেই জানি। 

সবার প্রতি আহবান থাকবে নিজের ভেতরে থাকা পশুত্বকে আমরা কোরবানি দিয়ে আমাদের খারাপদিকগুলো নিয়ন্ত্রণ করি। পাশাপাশি কোরবানির পশু কোরবানির পর আপনার আশেপাশের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন । পরিষ্কার পরিচ্ছনতাও ঈমানের অঙ্গ। সবাইকে ঈদ মোবারক। 
 

এই বিভাগের আরো খবর