বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

এ কেমন বর্বরতা ! লালসা থেকে রক্ষা পেলোনা এক পাগলী

প্রকাশিত: ১০ মে ২০২০  

পাগলীর কি দোষ ! জাগতিক সংসারের যে কিছুই বোঝে না তাকে নিয়ে একদল বর্বর কি মজা পেল ? কামনা, ভালবাসা কোন কিছুই যার বুঝার সাধ্য নেই- তাকে নিয়ে একদল নরপশু আনন্দে মেতে উঠেছিল। এরা মানুষ নামের হিংস্র পশু !

 

এ কথাগুলো টক অব দ্যা রূপগঞ্জে পরিণত হয়েছে। ছি ! ছি ! ধিক্কার পড়েছে গোটা কাঞ্চনে। রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভায় একদল লম্পট পথের এক পাগলীকে নির্জন স্থানে তুলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 


ধর্ষিতা পাগলীর আর্তচিৎকারে পথচারী ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে ধর্ষকরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। গত ৬ মে পূর্বাচল আমেরিকা সিটির বালুর মাঠে ঘটে এ ঘটনা। গণধর্ষণের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাগলিটা থাকেন রুপগঞ্জের কাঞ্চন এলাকায়। গত ৬ মে বুধবার রাত আনুমানিক নয়টা থেকে দশটার দিকে পূর্বাচল আমেরিকান সিটির বালুর মাঠে এই পাগলিটিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে কাঞ্চন পৌর যুবদলের যুগ্ন-আহবায়ক কহিনূর আলম ও চলপাড়া এলাকার বাসিন্দা যুবদল কর্মী আজিজ মিয়াসহ তাদের কয়েকজন সহযোগির বিরুদ্ধে। 

 

তবে গণধর্ষণের ঘটনার সময় পাগলিটির চিৎকারে আশপাশের কয়েকজন এগিয়ে গেলে ধর্ষকরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এগিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা ধর্ষকদের চিনতে পারেন। তাদের মধ্য থেকেই কেউ ফেসবুকে গণধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ করেন বলে স্থানীয়রা অনুমান করছেন।

 

সূত্র আরও জানায়, ধর্ষণের ঘটনার কথা উল্লেখ করে স্থানীয় খোরশেদ আলম ও হাফিজুরসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যুবদল নেতা ও পাগলির ছবিসহ পোস্ট দেন এবং ঘৃণা প্রকাশ করেন। 

 

যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যুবদল নেতা কুহিনূর ও আজিজ মিয়া পালাক্রমে পাগলীটিকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। তাদের এমন পোস্টে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়ে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠে। যুবদল নেতা ও কর্মীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি তোলেন অনেকেই।

 

তবে এমন অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য নিতে যুবদলের এই নেতার সাথে মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। 

 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, গত ৬ মে রাত ৯ টার দিকে যুবদল নেতা কসাই কহিনুর ও তার সঙ্গী লোচ্চা আজিজ পাগলীকে তুলে নিয়ে পূর্বাচল আমেরিকা সিটির বালুর মাঠে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। 


ধর্ষিতা পাগলীর আর্তচিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে লম্পট ধর্ষকরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে পাগলী নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।

 

কে এই কহিনুর ? 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাঞ্চন পৌরসভার  পুত্র  মৃত তোফাজ্জলের ছেলে কহিনুর। ছোটকাল থেকেই ছিলো ডানপিটে। কাঞ্চন বাজারে কসাইয়ের কাজ করার কারণে ‘কসাই কহিনুর’ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। 


তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে (৯১ সালে} কসাই কহিনুর যুবদলের নেতা বনে যান। এরপর থেকে কাঞ্চন এলাকায় অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তোলে। কসাই কহিনুরের ভয়ে ঐ সময়ে কাঞ্চনবাসী ছিলো তটস্থ। 


বিএনপির ক্ষমতার শেষের দিকে চতুর কহিনুর এলাকা ছেড়ে চিগাটাং শহরের পাহাড়তলীতে গিয়ে আস্তানা গড়ে তোলে। সেখানে সে ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তোলে। সে সময় অস্ত্র মামলায় গ্রেফতারও হয়। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা রয়েছে।


আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতার আসার পর কাঞ্চনের এক আওয়ামীলীগ নেতাকে উপঢৌকন দিয়ে বোল পাল্টে আওয়ামীলীগে ঢুকে। এরপর বনে যায় আওয়ামীলীগ নেতা।


অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, এক সময়ে কসাই কহিনুরের এখন কাঞ্চন বাজারে তিনতলা বাড়ি রয়েছে। চৌধুরি পাড়ায় রয়েছে বাড়ি ও পাওয়ারলুম প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নামে-বেনামে রয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। একসময় চীনেও ব্যবসা ছিলো বলে জানা গেছে।


অপরদিকে, কসাই কহিনুরের সঙ্গী লোচ্চা আজীজের বিরুদ্ধেওনানা অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, পাগলী ধর্ষণের ঘটনায় কাঞ্চন পৌরসভা তথা রূপগঞ্জবাসী ধিক্কার জানিয়ে লম্পট ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন। 


রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান বলেন, ঘটনা জেনেছি। ঐ নারীকে খোঁজা হচ্ছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পুলিশের কয়েকটি টিম মাঠে রয়েছে। 
 

এই বিভাগের আরো খবর