বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

উদ্বোধনের পরই ভূলতা ফ্লাইওভারে নেই আলো, ঘটছে নানা র্দুঘটনা !

প্রকাশিত: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

রূপগঞ্জ (যুগের চিন্তা ২৪) : রূপগঞ্জের ভূলতায় ৩৫৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকার নির্মাণ করেছে ফ্লাইওভারটি। উদ্বোধনের ৫মাস পরেই ফ্লাইওভারে নেই আলো, আতঙ্কে রয়েছে চালক ও যাত্রীরা। রাতের অন্ধকারে ভুতুড়ে অবস্থায় গাড়ি চলাচল করে। এতে আতঙ্কের রয়েছে চালক ও যাত্রীরা। ঘটছে নানা র্দুঘটনা।  


গতবছর ১৬ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের সর্ববৃহৎ প্রকল্প ভূলতা ফ্লাইওভারের ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভূলতা ফ্লাইওভার যানজট নিরসনে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এলেও রাতের বেলায় ফ্লাইওভার অনেকের কাছে ভয়াবহ একটি আতঙ্কের নাম হয়ে দেখা দিয়েছে। আলো ও সিসি ক্যামেরা না থাকায় রাতের বেলা এখানে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে অহরহ।

 
ফ্লাইওভারের ওপর প্রায়ই ছিনতাইকারী চক্র গাড়ি পার্ক করে ছিনতাইয়ের জন্য অপেক্ষা করে। মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা ফ্লাইওভারটিকে বেছে নিয়েছে। এখানে পড়ে থাকছে ফেনসিডিলের খালি বোতল। ফ্লাইওভার কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারিও নেই এখানে। তাদের কোন নজরদারি না থাকায় রাতের অন্ধকারে থাকে এই ফ্লাইওভার । এ অবস্থায় রাতে ফ্লাইওভারটিতে যানবাহন চলাচলে হয়ে ওঠে ঝুঁকিপূর্ণ এবং বিরাজ করে আতঙ্ক।


রাত ১০টার দিকে সরেজমিনে পুরো ফ্লাইওভার ঘুরে আলোর দেখা মেলেনি। উপজেলার গোলাকান্দাইল এলাকার বাসিন্দা রিপন মিয়া বলেন, রাতে এ ফ্লাইওভারের উপরে মাদক সেবনকারীরা হাঁটাচলা করে। অনেক সময় বাইক নিয়ে এসে আড্ডা দেয়। যত দ্রুত সম্ভব সিসি ক্যামেরা বসানো উচিত। 


একজন বাইক চালক বলেন, আমি প্রতিদিন রাতে এ ফ্লাইওভার দিয়ে যাতায়াত করি। কিন্তু রাতে অন্ধকার থাকায় অনেকটা ভয় হয়, কিছু লোকজন বাইক নিয়ে উপরে দাঁড়িয়ে থাকে। আমাকে একদিন ইশারাও দিয়েছে, কিন্তু বাইক জোরে চালিয়ে যাই। তাই ইদানিং রাতে এ ফ্লাইওভার অনেকটা এড়িয়ে চলি।
ট্রাক চালক আব্দুল করিম বলেন, আমি প্রায় সময় এ ফ্লাইওভার দিয়ে যাতায়াত করি। রাতে প্রায় অনেককে মোটর সাইকেল নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। অনেকে বসে মাদক সেবন করে, তখন খুব ভয়ে থাকি। যদি লাইট জ্বলতো তাহলে এতটা ভয় লাগত না। 


উপজেলার ভূলতা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সোহান বলেন, লাইট ছাড়া ফ্লাইওভার অনিরাপদ। পৃথিবীর কোনো দেশে ফ্লাইওভার অন্ধকার নেই। কিন্তু ভূলতা ফ্লাইওভারে ভূতুরে পরিবেশ বিরাজ করে রাতে। প্রায়ই ছিনতাই, যাত্রী হয়রানির ঘটনা ঘটছে। রাতে ফ্লাইওভারে আলো ফেরানোই হতে পারে একমাত্র সমাধান। এক রিক্সা চালক জানান, গত দুই মাস আগেও দিনের বেলায় দেখতাম ফ্লাইওভারে আলো জ্বলতো কিন্তু এখন রাতেও আলো জ্বলে না।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাউছিয়া কাচাঁবাজারের পাশে ভূলতা ফ্লাইওভারের বিদ্যুতের মিটারটি এখনো চলমান রয়েছে। তাহলে ভূলতা ফ্লাইওভারের লাইটগুলো জ্বলে না কেন? এ ব্যাপারে ট্রাফিক পুলিশের টিআই রাফিক বলেন, ফ্লাইওভারের দেখভালের দায়িত্ব তো পুলিশের না। আমরা নিরাপত্তার স্বার্থে মনিটরিং করি। যানজট কিংবা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখলেই থানা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু রাতে এ কাজে বিপত্তি ঘটে। কারণ ফ্লাইওভারে আলো থাকে না।


এ ব্যাপারে ভূলতা ফ্লাইওভারের ইঞ্জিনিয়ার হাফিজুর রহমান বলেন, ফ্লাইওভারের দুই মাসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল না দিতে পারায় নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২এর লাইনটি কেটে দেয়া হয়।


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভূলতা ফ্লাইওভারের তিন মাসের ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল থাকা সত্ত্বেও লাইন এখনো চলমান রয়েছে।

এই বিভাগের আরো খবর