শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঈদের বাকি ১০ দিন, ক্রেতাশূণ্য নগরীর বিপনী বিতানগুলো

প্রকাশিত: ১১ আগস্ট ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার ( যুগের চিন্তা ২৪) : পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে এখনো নগরীর মার্কেটগুলোতে পোশাক বিক্রি জমে ওঠেনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার ঈদের কোনো আমেজ নেই। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন,পরিবহন ধর্মঘট,বর্তমান পরিস্থিতি সবকিছু মিলিয়ে এবার পোশাক বিক্রি কম হচ্ছে। অন্যান্য সময় যে পরিমাণ বিক্রি হতো গত ১০ দিনে তা আরো কমে গেছে।

শনিবার ( ১১ আগষ্ট)  সমবায় মার্কেট, জামান টাওয়ার, লুৎফা টাওয়ার,মার্ক টাওয়ার সান্তনা  মার্কেট, সায়াম প্লাজা, কালীর বাজার ফ্রেন্ডস মার্কেট, আজহার সুপার মার্কেটসহ নগরীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায় মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা চলছে। তবে তা হাতেগোনা। দোকানের বিক্রয়কর্মীদের দেখা গেছে অলস সময় পার করতে।

সরজমিনে ঘুরে কয়েকটি দোকানের পোশাক বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদে ঈদুল ফিতরের তুলনায় নতুন পোশাকের বিক্রি তুলনামূলকভাবে কম হয়। তবে এবার অন্যবারের তুলনায় অনেক কম। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের কারণে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বিক্রি একেবারেই হয়নি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধ হলেও ক্রেতার সংকট এখনো রয়েছে।

কালিরবাজারের ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বলেন, মুসলমানদের বৃহত্তম উৎসবগুলোর মধ্যে দুটি ঈদকে প্রাধান্য দেয়া হয়। আর উৎসব মানেই তো নতুন পোশাক। তবে রোজার ঈদের তুলনায় কোরবানির ঈদের নতুন পোশাকের চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। তারপরও ঈদ  কেন্দ্রীক কিছু তো বিক্রি হয়। সে আসায় দোকানে অনেক নতুন পোশাক এনেছি। কিন্তু বিক্রি নেই। আশা করছি বেচাকেনা বাড়বে।

এবার ঈদে বাজারে নতুন কি পোশাক এসেছে জানতে চাইলে এ ব্যবসায়ী জানান, নতুন তেমন কোনো পোশাক আসেনি। রোজার ঈদেই যেসব পোশাক বিক্রি হয়েছে এখনো সেগুলোই বিক্রি হচ্ছে। তবে রঙ এবং ডিজাইনের মধ্যে ভিন্নতা আছে। থ্রি-পিস, ফোর-পিস, টু-পিস, গ্রাউন সব ধরনেরই পোশাক আমাদের কাছে আছে।

এর মধ্যে ৬০০-৩০০০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে থ্রি-পিস, টু-পিস,ফোর-পিস আছে ১০০০-২৫০০ টাকা দামের। আর গ্রাউন পাওয়া যাবে ১৫০০-৬০০০ হাজার টাকার মধ্যে।

চাষাঢ়ার বিপণীবিতানগুলোতে এসে দেখা যায় একই অবস্থা।  ছেলেদের পোশাক বিক্রিতেও একই অবস্থা। মার্কটাওয়ারের পোশাক বিক্রেতা আমান বলেন, তুলানমুলকভাবে এ ঈদে বেচাকেনা একটু কমই হয়। কিন্তু একেবারেই যে থাকবেনা তা চিন্তা করিনি।  সাধারণ সময়ে যে বিক্রি হয় এখন সেই বিক্রিও নেই।

ছেলেদের পোশাকের নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে জিন্স ও গ্যাবাডিং প্যান্ট এবং টি শার্ট আছে। ক্রেতারা প্যান্ট ৬০০-৩৩০০ টাকার মধ্যে পাবেন। টি শার্ট আছে ২০০ থেকে ১৫০০ টাকা দামের।

সমবায় মার্কেটের পোশাক বিক্রেতা আলী আহাম্মদ বলেন, কোরবানির ঈদের সাধারণত নতুন পোশাক খুব একটা আসে না। গত রোজার ঈদের মধুবালা খুব ভালো বিক্রি হয়েছে। আমরা আশা করছি এবারও মধুবালা বিক্রি ভালো হবে। তবে ঈদের বিক্রি শুরু হয়নি। আগামী সপ্তাহে কিছু বিক্রি হবে বলে আশা করছি।

পোশাকের দামের বিষয়ে তিনি বলেন, রোজার ঈদে যে দামে পোশাক বিক্রি হয়েছে এখনো সেই দামই রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দাম একটু কম রাখা হচ্ছে। তবে কোনো পোশাকের দাম বাড়েনি। আমরা বিভিন্ন ভারতীয় ডিজাইনের পোশাক বিক্রি করছি ২৫০০-৬০০০ টাকায়। এর মধ্যে রয়েছে মধুবালা,রেইছ থ্রী, লং ড্রেসসহ বিভিন্ন ধরণের গ্রাউন।

বেইলী টাওয়ারের এক বিক্রেতা ইসমাইল হোসেন বলেন, এখানে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের থ্রি-পিস,লেহেঙ্গা,গ্রাউন বিক্রি করি। এসব থ্রি -পিসের দাম ৫০০-৫০০০ টাকা,গ্রাউন ৩০০০-২০,০০০টাকা পর্যন্ত আছে।

এ ব্যবসায়ী বলেন, রোজার ঈদে বিক্রি ভালোই ছিল। কিন্তু কোরবানি ঈদ  কেন্দ্রীক বিক্রি একেবারেই নেই। কোরবানি এ ঈদে সব সময় বিক্রি কম হয়। তবে এবার মন্দা একটু বেশিই। ক্রেতা-দর্শনার্থী না থাকায় অধিকাংশ সময় অলস কাটাতে হচ্ছে।

সায়াম প্লাজার বিক্রেতা মো. জুয়েল বলেন, রোজার ঈদের বাচ্চাদের যে গেঞ্জি সেট ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন সেই গেঞ্জির সেট ৩০০ টাকায় বিক্রি করছি। শুধু গেঞ্জির সেট নয় সব ধরনের পোশাকের দাম এখন রোজার ঈদের তুলনায় বেশ কম। এরপরও বিক্রি নেই।

শুধু  পোশাক নয় জুতার দোকানগুলোতেও একই অবস্থা।  ক্রেতাদের আসা যাওয়া থাকলেও বিক্রি হচ্ছে না। এমনটাই জানালেন পায়ে পায়ে সুজের এক বিক্রেতা। তিনি জানান, বিক্রি মন্দ ঠিক আছে। কিন্তু এতটা যে খারাপ হবে বুঝতে পারিনি। তবে আশা করছি সামনের সপ্তাহ থেকে বেচাকেনা শুরু হবে।

সব মিলিয়ে এবারের ঈদ বাজারে ঈদের তোড়জোড় খুব একটা নেই বললেই চলে। তবে ব্যবসায়ীদেও আশা সামনের সপ্তাহ থেকে বেচা কেনার পরিমাণ বাড়বে।

এই বিভাগের আরো খবর