শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

ইচ্ছে করলেও এখন আর শৈশবে ফিরে যেতে পারি না : হাফিজুল ইসলাম

প্রকাশিত: ২১ আগস্ট ২০১৮  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ত্যাগের মহিমায় চিরভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা বছর ঘুরে আবার এল মুসলমানদের জীবনে। ঈদুল আজহা আমাদের দেশের মানুষের কাছে ‘কোরবানির ঈদ’ নামেই পরিচিত। কোরবানির পশু কেনা, তার যতœ-পরিচর্যা ও আল্লাহর নামে তা কোরবানি  দেওয়াই ঈদের মূল প্রস্তুতি ও আনন্দ। 

আর এ আনন্দ নিজেদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে আমাদের যুগের চিন্তা ২৪’এর ঈদ আয়োজনের যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক,সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক,আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উধ্বর্তন কর্মকর্তাসহ বিশেষ বিশেষ ব্যাক্তি বর্গ। আর তাদেরই একজন নারায়ণগঞ্জ সমাজতান্ত্রিক ফ্রন্টের জেলা সভাপতি ও শ্রমিক এবং গণমানুষের নেতা হাফিজুল ইসলাম। 

এবারের ঈদুল আজহার উদযাপন, কোরবানির পশু কেনা, কোরবানীর তাৎপর্য, শৈশবের কোববানির ঈদ ও নানা স্মৃতি, রাজনৈতিক প্রস্তুতিহ নানা বিষয় নিয়ে কথা হয় তাঁর সাথে।  

ঈদের প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে হাফিজুল ইসলাম জানান, গরু কেনা হয়ে গেছে গ্রামের বাড়িতে। মূলত আমি ঈদ পালন করি তিন জায়গায়। আড়াইহাজার, ফতুল্লা ও সদর। তিনটা জায়গায়ই আমার অসংখ্য বন্ধু-বান্ধব ,আত্মীয়-স্বজন আছে যার কারণে এ তিনটা জায়গায়ই আমি অবস্থান করার চেষ্টা করি।  

ঈদুল আজহায় বা কোরবানির ঈদে সারাদিনের ব্যস্ততা নিয়ে তিনি জানান, সকাল ছয়টা থেকে ঈদের সারাদিনই আমার ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে কাটবে। ঈদের নামাজটা আমি পড়বো আমার পৈতৃক ভিটা আড়াইহাজারে। তারপর নারায়ণগঞ্জে এসে ফতুল্লায় আমাদের আরেকটা কোরাবনি হয় সেখানেও উপস্থিত থাকতে হবে।  তারপর শহরের এসে আমার ইউনিয়ন,শ্রমিকসহ নেতৃবৃন্দদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করবো।

 ছোটবেলার কোরবানি ঈদের স্মৃতিচারণ  করে তিনি বলেন, আগে বাবা-ভাইয়াদের সাথে গরু কিনতে যাওয়া হত হাঁটে। এখন অবশ্য নানা কারণে সময় হয়ে উঠে না হাঁটে যাওয়ার জন্য।  তবে ছোটবেলায় যখন গরুর হাঁটে যেতাম সে সময়য়ের এটা ঘটনা আমার মনে পড়ে। তখন আমার বয়স বেশি না।

ফতুল্লার হাঁট থেকে গরু কিনেছি। আড়াইহাজার নিয়ে যাব। তো ভাবলাম হাঁটিয়ে হাঁটিয়েই নিয়ে চলে যাব। এখন দেখি যখনই গাড়ী আসে তখনই গরু ভয় পেয়ে দৌড় দিচ্ছে। আমরাও সাথেসাথে দৌড়াচ্ছি। অনেক সময় আমাদের নিয়েই দৌড় দিচ্ছে। হাত পা কেটে গিয়ে অবস্থা খুবই খারাপ। তারপর আর থাকতে না পেরে বাসায় চলে আসি।  আরও অনেক স্মৃতি আছে।

ঈদ উৎসবে শৈশবের আনন্দ এখনও  উপভোগ করা হয় কিনা জানতে তিনি জানান, সেটা তো হবেই না। কারণ সময় গেলে যেমন ফিরে আসে না তেমনি অনুভূতিও সময়ের মতই চলে। এখন আর শৈশবের মত করে ঈদ পালন করা হয় না । ইচ্ছে করলেও এখন আর শৈশবে ফিরে যেতে পারি না।

তবে একটা জিনিসি মিল পাই সেটা হল। আগেও দেখতাম গরীব-মেহনতি মানুষের কষ্ট এখন ও একই অবস্থা। সময়ের সাথে সাথে সবকিছুর পরিবর্তন হলেও এ পরিবর্তনটা এখনও আসেনি আমাদের সমাজে। বরং আগের চেয়ে তাদেও দুর্দশা আরো বেড়েছে।  এ সকল বিষয় যখন চোখের সাসনে পড়ে তখন খুব কষ্ট পাই।

ঈদুল আজহা বা কোরবানীর ঈদে শিক্ষণীয় বিষয়  ও তাৎপর্য নিয়ে তিনি বলেন, ঈদুল আজহায় কোরাবনি দেয়ার মুল উদ্দেশ্যে হল ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হওয়া।সকল হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে আল্লাহর দিদার লাভের আশায় কোরবানি দেয়া নিয়ম। কিন্তু বর্তমান সময় এ তাৎপর্য কেউ অনুসরণ করছে না । যে যার মত করে পশু কোরাবনি দিচ্ছে তবে মন থেকে মন্দাকে দূর করতে পারছে না।  তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত শুধূ কোরবানি দেয়ার জন্য নয় কোরাবনির সঠিক শিক্ষাকে অনসুরণ করে গরীব-দুঃস্থদের পাশে দাড়ানোর।

ঈদের পর রাজনৈতিক কর্মপরিকল্পনা প্রসঙ্গে সিপিবি’র এ নেতা  হাফিজুর ইসলাম জানান,  ঈদের  পর  একাদশ নিবার্চন। আমরা এ নির্বাচনে মেহনতি মানুষের পক্ষে তাঁদের দুঃখ কষ্ট লাঘবের জন্য কমিউনিস্টপার্টি আমরা ৮টি বাম সংগঠন একত্রিত হয়ে বাম গনতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে একটি শান্তিপূর্ণ নিবাচনের জন্য লড়াইও করবো এবং এ নির্বাচনে আমার দল আমাকে  মনোয়ন দিবে। তো ইতিমধ্যেই আমরা  নির্বাচনী কাজ শুরু করেছি এবং ঈদের পরেও আমাদের এ সকল কার্যক্রম অব্যহত থাকবে। 
 
সকল দলের নেতৃবৃন্দ, শ্রমিক ও নারায়ণগঞ্জবাসী  সকলকে ঈদ শুভেচ্ছায় জানিয়ে তিনি বলেন, পরিবার পরিজন নিয়ে সবার ঈদ ভালো কাটুক,সুন্দর কাটুক। এটাই কামনা। আর যারা আমরা কোরবানি দেই তাদের উদ্দেশ্যে বলবো আসুন গরীব-দুঃস্থদের এক বেলা মাংস সুযোগ করে দেই তাঁদের মুখে হাসি ফোটাই, একটা সুন্দর সমাজ গড়ে তুলি।
 

এই বিভাগের আরো খবর