শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

আড়াইহাজারে ২ গ্রুপে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

আড়াইহাজার প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২০  

তাস খেলা ও বাগান থেকে আম পাড়ায় বাঁধা দেয়াকে কেন্দ্র করে আড়াইহাজারে দুইগ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আয়ুব আলী (১৪) নামে এক স্কুলছাত্র মারা গেছে।

 

সে কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইজারকান্দী পূর্বপাড়া এলাকার মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে এবং স্থানীয় কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। পাশাপাশি স্থানীয় আলোর সেতু পাঠাগার দেখাশোনার দায়িত্বেও ছিল।

 

গত বুধবার (২৭ মে) বিকালে এ ঘটনাটি ঘটে।  বৃহম্পতিবার (২৮ মে) দুপুরে নিহতের মা আয়েশা বেগম বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করাসহ অজ্ঞাত আরো ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের এএসপি (সি-সার্কেল) মাহিন ফরাজি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ হোসেন ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন। 


স্থানীয়রা জানান, ইজারকান্দি কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় বিকালে আলোর সেতু পাঠাগারের পাশে কিছু লোক তাস খেলার আসর বসায়। পাশাপাশি পাশেরই একটি বাগান থেকে আম পাড়ে। এনিয়ে প্রতিবাদ করলে পাঠাগারের দায়িত্বে থাকা আয়ুবের সঙ্গে প্রথমে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়।

 

বিষয়টি রাতে মীমাংশার কথা ছিল। কিন্ত এর আগেই ঘটনাটি অন্যদিকে মোড় নেয়। এক পর্যায়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন গং ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হক সাব গংয়েরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পড়েন। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়।

 

এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আয়ুব আলী ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ সময় বেশ কিছু বসত ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। 


মৃতের বড় ভাই নবী হোসেন বলেন, আয়ুব আলী স্থানীয় আলোর সেতু পাঠাগারে চাকরি করতো। পাশাপাশি কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। কিছু লোক পাঠাগারের পাশে তাস খেলার আসর বসায়।

 

পাশাপাশি পাশের বাগান থেকে আম পাড়লে তাতে বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সাদ্দাম হোসেনসহ আরো কয়েকজন মিলে আমার সামনে ভাই আয়ুবের মাথায় পিস্তুল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় আমাকেও মারধর করা হয়। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। সে পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে মেঝো ছিল । 


অপরদিকে অভিযুক্ত কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন মুঠোফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। সংঘর্ষে আমার কোনো ভুমিকাও নেই। কিন্তু একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার নাম জড়ানোর চেষ্টা করছেন। 


কালাপাহাড়িয়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনর্চাজ শহিদুল আলম বলেন, সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আয়ুব আলী নামে কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় পরিস্থিতি শান্ত করতে গিয়ে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়েছে। 


আড়াইহাজার থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, আম পাড়া ও তাস খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে হক সাব গংয়ের সঙ্গে সাদ্দাম হোসেন গংয়ের আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। গুলিবিদ্ধ হয়ে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।

 

তবে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

এই বিভাগের আরো খবর