শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আমার শিক্ষক ছাত্র হিসেবে আমাকে নিয়ে গর্ব করতেন : এসপি হারুন

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ তাঁর ছাত্রজীবনে শিক্ষক-ছাত্রের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘হাওর অঞ্চল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া খুবই কঠিন ছিল। 


আমার শিক্ষক গর্ব করে বলত আমার ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে। আমরা যতটা না বলতাম তার চেয়ে শতগুণ বেশি বলত। গর্ব করে বলত এটা আমার ছাত্র। 


কিন্তু সেই ছাত্ররা জীবনে সফলতার চূড়ায় থাকলেও কোন শিক্ষক অভাবে পরলে বলবে না আমার জন্য কিছু করো। শিক্ষকরা ছিল সমাজের প্রকৃত আয়না, প্রকৃত মানুষ। কিন্তু সেই প্রকৃত মানুষরা সমাজ থেকে দিন দিন কমে যাচ্ছে।


তারা কমে যাওয়ার কারণেই সমাজ অস্থতিশীল হয়ে যাচ্ছে। সমাজের বিভিন্ন সমস্যা মহামারি ধারণ করছে। তবে বর্তমানে অনেক শিক্ষকই পূর্বের মতো পিতৃত্বসুলভ আচরণ করে না।   


 সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর ) বিকালে আলী আহাম্মদ চুনকানগর পাঠাগার ও মিলনায়তননে আইপিডিসি’র উদ্যোগে ও প্রথম আলো “প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা” অনুষ্ঠানে প্রিয় শিক্ষকদের নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে তিনি এসব কথা বলেন।


তিনি বলেন,  একটা সমাজে, একটা পাড়ায় আজকে শত শত বাচ্চা শিশুরা বিপথে চলে যাচ্ছে। ইয়াবা খাচ্ছে, সন্ত্রাসী করছে, গ্যাং তৈরী করে তারা মানুষকে হয়রানি করছে। মানুষের কাছে চাঁদা চাচ্ছে। আমাদের সমাজের কিছু উঠতি মানুষ যারা এদেরকে প্রশংসা করে। 


তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করার দরকার নেই। তাদেরকে অসৎ উদ্দেশ্য পদচলিত করানো হচ্ছে। আামদের পূর্বের শিক্ষকদের যে জীবন-যাপন , তারা কিভাবে শিক্ষার্থীদের গড়ে তুলতেন , তাদের সেই গুণাবলিকে এখনকার শিক্ষকদের মধ্যে বিরাজমান করতে হবে। 


সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমানের অনেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে বিলাসিতা এসেছে। শিক্ষাকে বাণিজ্যকরণে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।  
পুলিশ সুপার আরো বলেন, দেড় মাইল দূরে হাই স্কুলে হেঁটে স্কুলে যেতাম। এখন তো পাকা রাস্তা কিছুটা হয়েছে, তখন তো সেটাও ছিল না।

 

এক দেড় মাইল দূড়ে আমাদের বাবা-মা রা খাবার নিয়ে যেতেন।  শিক্ষকরা অনন্ত আন্তরিক ছিলেন। শিক্ষকের  বেত দিয়ে পেটানো সেসময় মুধুর সম্পর্ক মনে করেছি। আমার ভালোর জন্যই করছে। ভবিষ্যতে এই ভুলটা আর হবে না। তারা মারলেও তাদের কথা মনে আসে কারণ তাদের মানবিকতা ছিল। ব্যক্তিত্বসুলভ আচরণ ছিল। 


আর বাবা-মায়েরাও মনে করতেন শিক্ষক পিটিয়েছেন কারণ হয়ত এখানে শাস্তির দরকার ছিল।  সে সময় গরীব বলে শিক্ষকের কাছে পড়তে পারতেন না, এমনটা হতো না। সকলেই শিক্ষকের শিক্ষা পেতেন। গরীব শিক্ষার্থীদের কাছে টাকাও চাইতেন নাহ।


 আজকের শিক্ষার সাথে আমাদের শৈশবের শিক্ষার মধ্যে তুলনা রয়েছে। বাণিজ্যিকের সাথে সাথে সমাজের দায়িত্ববোধও বদলে গেছে।  নৈতিক শিক্ষা থেকে দূরে চলেও যাওয়ার কারণেই আমাদের ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা পরিবার থেকে দূরে চলে যাচ্ছে।  


প্রথম আলোর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি মজিবুল হক পলাশের সঞ্চালনায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম, প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় কমিটির সভাপতি সাইদুজ্জামান রওশন, নারায়ণগঞ্জ বন্ধুসভার সভাপতি আফরিন সুলতানা জেমি, বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি রাসেল আদিত্য, সাব্বির আল ফাহাদ, জেলা সংবাদদাতা গোলাম রাব্বানী শিমুলসহ নারায়ণগঞ্জ বন্ধুসভার সদস্যসহ জেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের সম্মানিত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। 
 

এই বিভাগের আরো খবর