বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

আপনি এতো স্বার্থপর, এতো জঘন্য!  :শামীম ওসমান (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : সরকারি তোলারাম কলেজে টর্চার সেল রয়েছে এমন অভিযোগ যারা করেছেন তাদের ঈঙ্গিত করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান বলেছেন—‘যারা শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে বলছেন, তোলারাম কলেজে ছাত্রদের নির্যাতন করা হয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বলেছেন শহীদ মিনারে টর্চার সেল আছে। তারা কি অন্য দেশ থেকে এসেছেন?  

 

তারা সুন্দরবনের জঙ্গলে থাকা জঙ্গলি নয়, তারা জ্ঞানী মানুষ। তারা বিভিন্নজন বিভিন্ন পদবীসহ ব্যাক্তিত্ব। তোলারাম কলেজকে বিতর্কিত করে আপনার সন্তানের ভবিষ্যত কেন নষ্ট করছেন? আমাকে বিতর্কিত করার জন্য? এই কলেজের শিক্ষার্থীরা আমাকে ভালোবাসে, ডাকখোঁজ বেশি দেয় এই জন্য?

 

আপনি এতো স্বার্থপর, এতো জগন্য! এতো নিচু মানসিকতার লোক! আমাদের ৮১ সনের ছাত্র হলে আপনাদের বাড়ির ইট থাকত কিনা চিন্তা করেন। গিয়ে বলতো, ওই আমাদের সন্ত্রাসী বললি কেন ? কলেজের হাজার হাজার শিক্ষার্থীরা এখন যদি বের হয়ে বলে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে মিথ্যা বললি কেন? কে আপনাদের রক্ষা করবেন? কেউ ভুল করলে সংশোধন করেন। আপনার মতামত থাকতে পারে, সেটা বলেন।’

 

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে তোলারাম কলেজের নবীন বরণ উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি তোলারাম কলেজে সাংবাদিকসহ এক শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করার পর তোলারাম কলেজে টর্চার সেল নিয়ে বিভিন্ন সভাসমাবেশে বক্তব্য দেন সুধীজন, নাগরিক সমাজ ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ অভিযোগ তোলেন ছাত্রলীগের পদপদবী ব্যবহার করে তোলারাম কলেজে টর্চার সেল গড়ে তোলা হয়েছে। আর নানা সময় সেখানে শিক্ষার্থীদের মারধর করার অভিযোগ আসতে থাকে। 

 

সাংসদ শামীম ওসমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, নেতা হিসেবে তোমাদের কিছু বলব না। নেতা হিসেবে কথা বলতে খারাপ লাগে। কারণ নেতা সেই হতে পারে যে সঠিক সময়ে সঠিক কথা বলতে পারে। আমার কষ্ট লাগে আমার ভিতরে এখন যে কথাটা আছে সেটা তোমাদের এখন আমি বলতে পারব না। তার মানে আজ থেকে ৩০ বছর আগে আমার যে সাহস ছিল সেই সাহস আমার নেই। তোমাদের যে সাহসের পথ দেখাবো সেই সাহসের পথটাও নেই।


নারায়ণগঞ্জে ৩টি কলেজ শামীম ওসমানের খুবই পছন্দের জানিয়ে সাংসদ বলেন, তোলারাম কলেজ, মহিলা কলেজ, নারায়ণগঞ্জ কলেজ। এগুলো নারায়ণগঞ্জের ভাল কলেজের মধ্যে অন্যতম। কষ্ট লাগছে। তোমরা বলো তোলারাম কলেজের টর্চার সেল কোথায় আছে, আছে কি নাই?


বক্তব্যের এক ফাঁকে শামীম ওসমান তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে কলেজে টর্চার সেল আছে কিনা জানতে চান। এসময় কলেজের কিছু শিক্ষার্থী হাত তুলে ‘না’ মত পোষণ করেন। আবার কিছু শিক্ষার্থী চুপ করে বসেছিলেন।

 

এরপর তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে আরো বলেন, আমাকে কিছু ঘটনা চিন্তিত করে তুলেছে। নারায়ণগঞ্জে কিছু কাজ করছি তোমাদের সার্পোট চাই। কিন্তু রাজনীতি করতে হবে, এমন না। রাজনীতি করে কারো হাতের হাতিয়ার হইয়ো না। তবে সজাগ থাকো, প্রতিবাদ কইরো।   

 

সাংসদ বুয়েট শিক্ষার্থী আরবার হত্যার প্রসঙ্গ টেনে গণমাধ্যমের সমালোচনা করে শামীম ওসমান বলেন, দেশের সবচেয়ে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি বুয়েট বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হত্যার একটি ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও বহুবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। যার একটির বিচারও আমরা পাই নাই।

 

সবাই বলে ছাত্রলীগে মেরেছে , আমিও বলি ছাত্রলীগ মেরেছে। কিন্তু আমি আগে থেকেই কাউকেই অপরাধী মনে করি না। আমি এইভাবে বিশ্বাস করি না। এখন পর্যন্ত আমি বলব না কে মেরেছে, যতক্ষণ পর্যন্ত আদালত বলবে না কে মেরেছে। এটা বলার কোন অধিকার আমার নেই। যদিও গণমাধ্যম নিশ্চিত করে দেয় কোথায় কি ঘটেছে। পৃথিবীর কোন সভ্য দেশে এমনটা হয় না। কিছু কিছু মিডিয়া আছে এটা করে। এরা একটা অস্থিতিশীল রাষ্ট্র চায়। মিডিয়ার বাহিরেও রাজনীতিবিদসহ দেশীয় ও দেশের বাইরের শক্তি আছে।

 

সরকারি তোলারাম কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর বেলা রানী সিংহের সভাপতিত্বে ও সরকারি তোলারাম কলেজ ও মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা সংস্থার চেয্যারম্যান সালমা ওসমান লিপি। অনুষ্ঠানে আরোও উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াসিন মিয়া, তোলারাম কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জীবন কৃষ্ণ মোদক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর নজমুল হুদা, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান লিটন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রফেসর শিরীন বেগম, মহানগরের সভানেত্রী ইসরাত জাহান স্মৃতি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক রাফেল প্রধান প্রমুখ।


 

এই বিভাগের আরো খবর