বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

আদমজীর সন্ত্রাসী পানি আকতার বাহিনী বেপরোয়া, গ্রেফতার দাবি

প্রকাশিত: ৩ জানুয়ারি ২০২০  

সিদ্ধিরগঞ্জ (যুগের চিন্তা ২৪) : সিদ্ধিরগঞ্জে নাসিক ৬নং ওয়ার্ডের চিহ্নিত এক সন্ত্রাসীর নাম পানি আকতার। বাবা মৃত করিম কসাই। একসময় ঝাড়ে করে ভ্যান দিয়ে পানি সাপ্লাই করতো বলে সিদ্ধিরগঞ্জে সে পানি আকতার নামে পরিচিতি পায়। 


এলাকায় মাদক ব্যবসা, কিশোরগ্যাং তৈরি, ইভটিজিং, আদমজী ইপিজেডে অবৈধ ব্যবসা, অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দেয়া, ৬নং ওয়ার্ডে অবৈধ ডিশব্যবসা নিয়ন্ত্রনসহ অসংখ্যক অভিযোগ রয়েছে সন্ত্রাসী পানি আকতারের বিরুদ্ধে।স্থানীয় কাউন্সিলর মতির অনুসারী হিসেবেই এলাকায় বেশি পরিচিত। দিন দিন পানি আকতারের কিশোরগ্যাং বাহিনীর সদস্যরা বেপোয়া হয়ে উঠছে। 


আদমজী ইপিজেড সূত্র মতে, আদমজী ইপিজেডে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ইপিজেডের কাস্টমসের যোগসাজসে মূল্যবান মালামাল পাচারের সাথে জড়িত পানি আকতার। সে দীর্ঘদিন ধরে আদমজী ইপিজেডের ভেতর ইপিক গার্মেন্টসের ডিজিএম নূর নবীর সাথে গোপন আতাঁত করে মালামাল বের করছে। ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে পানি আকতার দিনের পর দিন এই অপকর্ম করে যাচ্ছে। 


ডিজিএম নূর নবী দীর্ঘদিন যাবৎ পানি আকতারের সাথে ব্যবসায়িক পার্টনারশিপ হিসেবে ইপিজেড থেকে কোটি কোটি টাকার মালামাল ইপিক গার্মেন্টস থেকে অবৈধ ভাবে বের করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।এসব মালামাল শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে গার্মেন্টস  পণ্য (মালামাল) বের করা হয়। 

 

পানি আকতার, ডিজিএম নূর নবী ও কাস্টমসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে অর্ডারের চেয়ে অতিরিক্ত মালামাল পাচার করা হয়। এতে পানি আকতার চক্র লাখ লাখ টাকার মালামাল মাল হাতিয়ে নিচ্ছে।ইপিজেড ব্যবসায়ীরা জানান, এরকম দুধর্ষ সন্ত্রাসীরা ইপিজেডের শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করছে। এদের কারণে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা হারিয়ে যাচ্ছে। তাই ইপিজেড ব্যবসা খাতকে সচল রাখতে এরকম সন্ত্রাসীরা যেনো ইপিজেড এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানান।

 

গত ৩১ শে ডিসেম্বর থার্টি ফাস্টনাইটে সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাং লিডার পানি আকতার ও আইলপাড়া এলাকার শাকিল গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে  সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এনিয়ে একাধিকবার সন্ত্রাসী পানি আক্তার ও শাকিল গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।

 

এর জের ধরে থার্টি ফাস্টনাইটে মদ, বিয়ার, ইয়াবা খেয়ে রামদা, চাপাটি, চাকু, লোহারপাইপ, হকিস্টিকসহ অর্ধশতাধিক  জনের একটি কিশোর গ্যাং নিয়ে শাকিল গ্রুপের উপর হামলা চালায়। এসময় উভয় গ্রুপের মধ্যে ঘন্টাখানেক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১০/১৫ জন আহত হয়। 

 

এসময় গোলা গুলির শব্দে প্রকম্পিত হয় পুরো এলাকা।ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি দোকান।মদ খেয়ে মাতাল হয়ে এলোপাথাড়ি কোপানো হয় এলাকার নীরিহ যুবকদের। এসময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ এসে কাউকেই গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি।

 

গত বছরের ৩ জানুয়ারী সুমিলপাড়া মুনলাইটের পিছনে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের একটি অফিস ভাংচুর করে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় পানি আকতার বাহিনী। এতে আগুনে পুড়ে যায় পুরো অফিস সহ অফিসে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এমপি শামীম ওসমানের ছবি। গত বছরের জুন মাসে সুমিলপাড়া মুনলাইট রেললাইন চৌরাস্তা এলাকায় নারী পোশাক শ্রমিকদের উত্ত্যক্ত করে আসছিলো ক্যাডার পানি আক্তারের সহযোগীরা। 

 

প্রতিদিন সন্ধ্যায় পানি আক্তারের সহযোগী শামীম মেয়েদের উত্ত্যক্ত করতো। এতে বাঁধা দেয় ছোট মিজান ও তার লোকজন। এরই জেরে পানি আক্তার ও তার ৫০-৬০ জন সহযোগীরা চাপাটি, রামদা, রড, লাঠিসোটা নিয়ে মিজান গ্রুপের উপর হামলা চালায়। এ সময় উভয় গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ১০/১৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় বেশকিছু জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আসে পানি আকতার।

 

এলাকাবাসী জানায়, পানি আক্তার এলাকার ত্রাস। তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা রয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তার সাথে রয়েছে তাঁর বেশ সখ্যতা। প্রশাসনের সঠিক নজরদারি জোড়দার হলে এই বাহিনী থেকে তাঁদের  মুক্তি মিলবে। এই সন্ত্রাসীর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও তাকে গ্রেফতার করার জন্য জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম ও র‌্যাব-১১ এর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

এই বিভাগের আরো খবর