বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০১৯  

ডেস্ক রিপোর্ট (যুগের চিন্তা ২৪) : মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার শপথের মধ্যদিয়ে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দেশের ৪৯তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করছে জাতি। 


১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অপারেশন সার্চ লাইটের নামে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গণহত্যায় ঝাপিয়ে পড়ে। নির্বিচারে হত্যা করা হয় অসংখ্য মানুষকে। সেই রাতে সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে।


গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। যে কোনো মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। মুহুর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাসের সেই রক্তক্ষয়ী লড়াই আর অশেষ ত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় প্রিয় স্বাধীনতা। 


মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ  ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃতক পৃথক বাণী দিয়েছেন ।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে, স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসীসহ প্রবাসী বাংলাদেশীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতাকে আরো অর্থবহ করতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান তিনি। 


ঐতিহাসিক এই দিনে তিনি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। তিনি সশ্রদ্ধচিত্তে মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের স্মরণ করেন, যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে জাতি স্বাধীনতা পেয়েছে। 


প্রধানমন্ত্রীর তাঁর বাণীতে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমি দেশবাসী এবং প্রবাসে বসবাসকারী বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। 


তিনি বলেন, ২৬ মার্চ বাঙালির আত্মপরিচয় অর্জনের দিন। পরাধীনতার শিকল ভাঙার দিন। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই, যার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে জাতি প্রিয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জনকে অর্থপূর্ণ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে, স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করতে হবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে পৌঁছে দিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।
যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করতে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার প্রত্যুষে রাজধানীতে একত্রিশ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়েছে।


সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।


স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এসময় সারাদেশে একযোগে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।


বিদেশে বাংলাদেশ মিশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে সম্ভব হলে বাংলাদেশের সাথে একই সময়ে এবং অন্যান্যরা একই দিনে সুবিধাজনক সময়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশন কর্মসূচি পালন করবে।


দিনটি সরকারি ছুটির দিন। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা এবং ঢাকা শহরে সহজে দৃশ্যমান উঁচু ভবনসমূহে বৃহদাকারের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে।


ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে।
২৭ মার্চ বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। এতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন।

এই বিভাগের আরো খবর