শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৫ ১৪৩১

আজ ভয়াল ২১ আগস্ট

প্রকাশিত: ২১ আগস্ট ২০১৯  

ডেস্ক রিপোর্ট (যুগের চিন্তা ২৪) : আজ সেই ভয়াল ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভায় গ্রেনেড হামলা করেছিল জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী (হুজি)। 


এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন। আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী। এ সময় নেতাকর্মীরা মানবঢাল বানিয়ে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন। তখন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও তার শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই দিনটি গ্রেনেড হামলা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

 

১৫ বছর আগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সভার খোলা ট্রাকে নির্মিত উন্মুক্ত মঞ্চে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দেন। ভাষণ শেষ করে তার ‘সন্ত্রাসবিরোধী শোভাযাত্রার’ উদ্বোধন ঘোষণার মুহূর্তে নৃশংস গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। 


এতে মুহূর্তের মধ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ মৃত্যুপুরেিত পরিণত হয়। পুরো বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। চারদিকে রক্ত ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তায় পড়ে থাকে সারি সারি মানুষ। মানুষের গোঙানি আর কাতর চিৎকারে ভারি হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাস। 

 

সেদিন যা ঘটেছিল
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকের ওপর স্থাপিত মঞ্চে দাঁড়িয়ে তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্য শেষ করার পর পরই বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে অতর্কিতে চারিদিক থেকে গ্রেনেড এসে পড়তে থাকে। বিকট শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ, গুলিস্তান, পল্টনসহ আশপাশের এলাকা।


এ সময় মঞ্চে উপবিষ্ট দলের জাতীয় নেতারা পরিস্থিতি বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে মানববর্ম রচনা করে সভাপতি শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে সেদিন শুধু গ্রেনেড হামলাই চালানো হয়নি, তিনি যখন গাড়িতে করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করছিলেন, তখনও তাকে লক্ষ্য করে গাড়িতে গুলি চালানো হয়েছিলো।


হামলাকারীদের টার্গেট শুধু শেখ হাসিনাই ছিলেন না, তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদেরকেও হত্যার উদ্দেশ্যে এই গ্রেনেড হামলা পরিচালিত হয়।


সেই নৃশংস গ্রেনেড হামলায় সেদিন যারা আহত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, দলের বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য (তখনকার সভাপতিম-লীর সদস্য) আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক (প্রয়াত), সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত (প্রয়াত), ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ (প্রয়াত), দলের বর্তমানে সভাপতিম-লীর সদস্য ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিরোধী দলের নেতার রাজনৈতিক সচিব সাবের হোসেন চৌধুরী, ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ, উম্মে রাজিয়া কাজল, মাহবুবা পারভীন, সাহেদা তারেক দিপ্তি প্রমুখ।

 

বর্বরোচিত এ গ্রেনেড হামলায় মারা যান- সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিনী আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভী রহমান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার, লিটন মুন্সী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া।

এই বিভাগের আরো খবর