শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

আগুনে পুড়ে প্রাণ গেলো বন্দরের ৬ যুবকের

প্রকাশিত: ৬ মার্চ ২০২০  

ডেস্ক রিপোর্ট (যুগের চিন্তা ২৪) : কথা ছিল সবাই মিলে সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.) এর মাজার জিয়ারত করবেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) রাতে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানা এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে মাজারের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন তারা। 

কিন্তু সেই যাত্রা মাঝপথেই থেমে গেছে। রাত আড়াইটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ছয়জন। আহত হয়েছেন আরও চারজন। 

বিজয়নগর উপজেলার ভাটি-কালিসীমা এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাইক্রোবাসটির (ঢাকা মেট্রো- চ ১১৩৮৬৭) সঙ্গে সুনামগঞ্জ থেকে আসা ঢাকাগামী লিমন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের (ঢাকা মেট্রো- ব ১৫০৪৮৭) মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। 

সংঘর্ষের পর মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডারে লিকেজের কারণে গ্যাস বের হয়ে আগুন ধরে যায়। দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে আগুন।


এ সময় ভেতরে থাকা আরোহীরা বাঁচার জন্য আর্তনাদ করতে থাকলেও শেষ পর্যন্ত অঙ্গার হয়ে যান শাকিল (২৫), সোহান (২০), সাগর (২২), ইমন (১৯), রিফাত (১৬) ও হারুণ (৪০)। 

এ ঘটনায় আহত হন শাহীন (৩০), জিসান (২৪), আবির (১৯) ও বিজয় (১৯)। তাদেরকে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নিহত ও আহতদের বাড়ি বন্দর উপজেলার দেউলি গ্রামে বলে জানা যায়। 

দুর্ঘটনায় আহত জিসান জানান, তিনি ও তার বন্ধু সাগর একসঙ্গে বসেছিলেন। বাসের সঙ্গে তাদের মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হওয়ার পর তিনি মাইক্রোবাস থেকে ছিটকে নিচে পড়ে যান। সাগরসহ অন্য আরোহীরা মাইক্রোবাসের ভেতরই ছিলেন। সাগর অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন।

দুর্ঘটনায় বাসটিও মহাসড়কের পাশে খাদে পড়ে যায়। তবে বাসের কোনো যাত্রী তেমন আহত হননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। মাইক্রোবাসটিতে আগুন জ্বলতে থাকার সময় ভেতরে থাকা আরোহীরা সাহায্যের জন্য আকুতি জানালেও আগুনের ভয়ে কেউই এগিয়ে আসেনি। 


আগুন নেভার পর পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এক এক করে পাঁচজনের অগ্নিদগ্ধ মরদেহ বের করেন মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে। আর জীবিত উদ্ধার হওয়া পাঁচজনকে হাসপাতালে নেয়ার পথে একজন মারা যান।

খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রেমধন মজুমদার জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কিছু সময়ের মধ্যেই আমরা ঘটনাস্থলে আসি। 

অনেককে সাহায্যের জন্য ডেকেছি। কিন্তু আগুনের তীব্রতার কারণে ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। যদি এগিয়ে আসত তাহলে হয়তো জীবিত উদ্ধার করা যেত। 


পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভানোর পর মাইক্রোবাসের ভেতর থেকে হতাহতদের বের করা হয়।


খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইনুল ইসলাম জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে অন্তত ২৯টি বাক রয়েছে। এই বাকের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি চালকের কোনও ত্রুটি ছিল কিনা তারও তদন্ত চলছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল ফায়ার সার্ভিস অফিসের স্টেশন অফিসার এসএম শামীম জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছে তারা দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাসের আগুন নেভান। পাশাপাশি যাত্রীবাহী বাসটিতে তল্লাশি চালান। 


মাইক্রোবাসটিতে আগুন ধরে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে দুর্ঘটনার পর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণেই মাইক্রোটিতে আগুন ধরে যায়।
 

এই বিভাগের আরো খবর